কয়েক বছর ধরে বেহাল দশায় ছিল আসানসোল চিত্তরঞ্জন রোডের নিয়ামতপুর নিউরোড থেকে রূপনারায়ণপুরের ডাবর মোড় পর্যন্ত রাস্তাটি। তবে সাধারণ মানুষ থেকে স্থানীয় বণিক সংগঠন ও বাস-মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনগুলি দাবি জানানোয় ও দীর্ঘদিন বাস বন্ধ রাখায় সম্প্রতি তা সংস্কার করা হয়। আসানসোল মহকুমার তৎকালীন মহকুমাশাসক জানিয়েছিলেন, ১২ কিমি দীর্ঘ এই রাস্তাটি সংস্কারের জন্য রাজ্য সরকার ৬২ লক্ষ টাকা অনুমোদন করেছে। মাস খানেক আগেই ওই রাস্তাটি মেরামতির কাজ শেষ হয়েছে।
কিন্তু এখন বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে রাস্তাটির গুণমান নিয়ে। বিধানসভার পূর্ত (স্থায়ী) কমিটির সদস্যের কাছে তদন্ত চেয়ে আবেদনও করা হয়েছে। অভিযোগ করা হয়েছে মহকুমাশাসকের কাছেও। বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। |
রূপনারায়ণপুরের একাধিক বণিক সংগঠন ও বাস-মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের অভিযোগ, দু’এক জায়গা ছাড়া রাস্তার বেশিরভাগ অংশই মেরামত করা হয়নি। ফলে সমস্যা যে তিমিরে ছিল সেখানেই রয়ে গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদেরও একই অভিযোগ। তাঁরা জানান, দেন্দুয়া মোড় থেকে কয়েক কিলোমিটার রাস্তা ভালভাবে মেরামত করা হয়েছে। এছাড়া বাকি অংশে কিছুই কাজ হয়নি। তাই সামান্য দু একদিনের বৃষ্টিতেই রাস্তার মেরামত করা অংশগুলো খারাপ হয়ে গিয়েছে। তাঁদের আশঙ্কা, একটানা বৃষ্টি হলে পুরোটাই নষ্ট হয়ে যাবে। আসানসোল মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক বিকাশ চট্টরাজের অভিযোগ, মেরামতির সঠিক নিয়ম মানা হয়নি। কিছু কিছু জায়গায় রাস্তাটি ব্যালেষ্ট, পাথরগুড়ি ও আলকাতরা দিয়ে মেরামত করা হয়েছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। বিকাশবাবু বলেন, “রাস্তা মেরামতির জন্য সরকার অনুমোদিত ৬৫ লক্ষ টাকা ঠিকমতো খরচ করা হয়নি। তাই আমরা তদন্ত চেয়ে মহকুমা শাসকের কাছে আবেদন করেছি।”
রাস্তার এই বেহাল দশা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা সালানপুরের বিডিও জয়দীপ দাসের কাছেও কয়েক দফা অভিযোগ করেছেন। মূলত জয়দীপবাবুর উদ্যোগেই এই রাস্তা সংস্কার শুরু হয়েছিল। তিনি জানান, বিভিন্ন সংগঠন ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভের কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
রাজ্য বিধানসভার স্থায়ী কমিটি (পূর্ত)-র সদস্য সোহরাব আলির কাছেও চিঠি পাঠিয়ে হস্তক্ষেপের দাবি জানায় মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশন। তাঁদের দাবি, রাস্তা খারাপ হওয়ার এলাকার ব্যবসা বাণিজ্য মার খাচ্ছে। পণ্য বোঝাই লরিও ঢুকতে চাইছে না। বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের কৃত্রিম অভাব হওয়ায় বাধ্য হয়ে ক্রেতারা অন্য জায়গায় চলে যাচ্ছেন। রূপনারায়ণপুর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বিশ্বনাথ রুজ বলেন, “এলাকার অর্থনীতিতে কোপ পড়ছে। এ ভাবে রাস্তার মেরামতি কেন করা হল তা ব্লক প্রশাসন ও মহকুমা প্রশাসনের কাছে জানতে চেয়েছি।”
বাসিন্দাদের অভিযোগ পেয়ে রাস্তাটি পরিদর্শন করেন স্থানীয় বিধায়ক বিধান উপাধ্যায়। বিধানবাবু বলেন, “রাস্তার সংস্কার ঠিকমতো হয়নি। মহকুমাশাসককে বিষয়টি দেখার জন্য বলেছি।” মহকুমাশাসক সুরজিৎ দত্তশর্মা অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। |