অসমের হাইলাকান্দি থেকে মিজোরাম ও মেঘালয় গিয়ে কাজ করেন বেশ কিছু শ্রমিক। বিভিন্ন সূত্রে খবর মিলছে, এঁদের অনেকেই ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বাড়ি ফিরছেন। আর পরোক্ষ ভাবে এঁরাই হাইলাকান্দি জেলায় ম্যালেরিয়া ছড়ানোর কারণ হয়ে উঠছেন বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য দফতরের একটা বড় অংশই। তবে পরিস্থিতি আয়ত্তে আছেএবং হাইলাকান্দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেই দাবি দফতরের।
ক’দিন আগে এক শিশুর মৃত্যুতে জেলা ম্যালেরিয়া বিভাগ নড়েচড়ে বসলে ব্যাপারটা স্বাস্থ্যকর্মীদের নজরে আসে। খোঁজখবর করে বিভাগীয় কর্মীরা জানতে পারেন, দিন কয়েক আগে রামচণ্ডী এলাকার সাত জনের দেহে ম্যালেরিয়ার জীবাণু ধরা পড়ে। এঁরা সবাই মেঘালয় কয়লাখনিতে কাজ করছিলেন। ঘুসঘুসে জ্বর হওয়ায় বাড়ি চলে আসেন। খবর পেয়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা তাঁদের রক্ত পরীক্ষা করে দেখেন, সকলেই ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত।
জেলা ম্যালেরিয়া অফিসার স্বাগতা দত্ত জানান, এই রকম ক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ কঠিন। কারণ, যাঁরা মেঘালয় বা মিজোরামে কাজে যান, তাঁদের প্রায় সবাই প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দা। কাউকে তাঁরা জানিয়ে যান না। আগেভাগে খবর পেলে হয়তো রোগ প্রতিরোধমূলক ওষুধ বা পরামর্শ দেওয়া সম্ভব হত। কিন্তু জ্বর নিয়ে যখন তাঁরা আসেন, তখন আর কিছুই করার থাকে না। রক্ত পরীক্ষা করে ওষুধ দেওয়া হয়। ঘরের অন্য লোকেদের জন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। স্বাগতা দেবী জানান, জেলার কুন্দানালা, ঘুটঘুটি, রাইফেলমারা, বেতছড়া, বালিছড়া, গাইসেনাউরি, কচ্ছপছড়া, ঘাড়মুড়া প্রভৃতি অঞ্চলে ম্যালেরিয়া জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার খবর মিললেও পরিস্থিতি পুরো নিয়ন্ত্রণে। আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু ঘটেনি।
জেলা ম্যালেরিয়া অফিসের অন্য সূত্রে জানা গিয়েছে, অ-উপজাতিরাই তবু পরামর্শ মতো ওষুধ খান, কিন্তু উপজাতিরা সহজে ডাক্তারের ওষুধ খান না। তাঁরা নিজেরাই গাছ-লতাপাতা দিয়ে ওষুধ তৈরি করেন। এতে কোনও কোনও সময় সমস্যা মিটে গেলেও অনেক ক্ষেত্রে জটিলতা বেড়ে যায়। মে-জুনেই সাধারণত মশার উপদ্রব বেড়ে যায়, ছড়ায় ম্যালেরিয়া।
পাশাপাশি, চুক্তিতে কাজ করা ঠিকা কর্মীদের অভিযোগ, ম্যালেরিয়া ছড়িয়ে পড়ার জন্য সরকারি কৌশলও অনেকটাই দায়ী। জেলায় ম্যালেরিয়া প্রতিরোধের মূল কাজটি তাঁরাই করেন। কিন্তু সরকার তাঁদের নিয়মিত বেতন দেয় না। এখনও তিন মাসের বকেয়া পড়ে রয়েছে। |