হাজিরায় নিত্য দেরি, তবু শাস্তি পান না ডাক্তারেরা
লা যেতেই পারে, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশকেও থোড়াই কেয়ার!
সরকারি হাসপাতালে সকাল সাড়ে ন’টার মধ্যে আউটডোর চালু এবং চিকিৎসকদের হাজিরা নিশ্চিত করতে গোড়াতেই নির্দেশ জারি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তা সবাই পালন করছেন কি না, তা জানতে চালু হয় বিশেষ এসএমএস সার্ভিসও। এক বছর পরে তার বিশ্লেষণ করতে গিয়ে স্বাস্থ্যকর্তারা দেখছেন, বহু হাসপাতালই দিনের পর দিন এসএমএস পাঠাচ্ছে না। পাঠালেও তাদের দেওয়া তথ্যেই ধরা পড়ছে যে, আউটডোর খুললেও চিকিৎসকদের হাজিরা অনেক কম থাকছে। এসএসকেএম এবং বাঙুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরোলজির নাম এই সূত্রে সামনে এসেছে। রাজ্যের যে সরকারি হাসপাতালে রোগীর ভিড় সব চেয়ে বেশি, সেখানে চিকিৎসকের হাজিরা কেন অন্য জায়গার চেয়ে কম, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। অন্য হাসপাতালের নিয়মানুবর্তী চিকিৎসকদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ না মেনেও যদি অনেকে বহাল তবিয়তে থাকেন, তা হলে বাকিরা নিয়ম মানবেন কেন?
এসএসকেএমের নানা আউটডোরে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে প্রতি দিন গড়ে পাঁচ হাজার রোগী আসেন। অথচ, সরকারি তথ্য বলছে, ওই হাসপাতালে সময় মতো চিকিৎসকের হাজিরা শহরের অন্যান্য হাসপাতালের তুলনায় কম। গত মে মাসের হিসেব দেখিয়ে স্বাস্থ্যকর্তারা জানান, ২ মে বিভিন্ন বিভাগের আউটডোরে ৬৯ জন চিকিৎসকের জায়গায় সময়ে হাজিরা ছিল ৫৯ জনের। ১০ মে ৭০ জন চিকিৎসকের জায়গায় সকাল সাড়ে ন’টায় হাজির ছিলেন ৬১ জন। ১৪ মে ৭১ জনের জায়গায় ছিলেন ৬৫ জন। ৩১ মে ৭০ জনের জায়গায় ছিলেন ৫৬ জন।
যাঁরা সময়ে আসছেন না, তাঁদের কী শাস্তি হচ্ছে? এসএসকেএম কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, স্বাস্থ্য দফতরই যখন সব জেনেশুনে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না, তখন তাঁরা কী-ই বা করতে পারেন! হাসপাতালের এক কর্তা বলেন, “চিকিৎসকদের সময়ে আসার কথা আমরা বারবার বলেছি। সে কথায় সিনিয়র চিকিৎসকেরা অনেকেই পাত্তা দেন না। স্বাস্থ্যকর্তারা নিয়ম চালু করেছেন, কিন্তু তা না মানলে কোনও শাস্তির বন্দোবস্ত রাখেননি। ফলে সকলেই পার পেয়ে যাচ্ছেন।”
একই ছবি বাঙুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরোলেজিতে। রাজ্যে স্নায়ু চিকিৎসার পূর্ণাঙ্গ সরকারি কেন্দ্র একটিই। বিপুল রোগীর চাপের মধ্যে মাত্র ১৩৮টি শয্যা নিয়ে এমনিতেই এই হাসপাতালের নাজেহাল অবস্থা। তার উপরে আউটডোরে উপচে পড়া ভিড়। দিনে ৬০০ রোগী আউটডোরে আসেন। কিন্তু এখানেও চিকিৎসকদের সময় মেনে আউটডোরে হাজিরার বিষয়টি খুব দুর্বল। স্বাস্থ্যকর্তারা ৭ থেকে ১২ মে-র হিসেব দেখে জানান, যেখানে ১০ জন চিকিৎসকের হাজির থাকার কথা, সেখানে এসেছেন মাত্র পাঁচ জন। মাসের অন্য দিনে সংখ্যাটা চার, এমনকী তিনেও নেমেছে।
কখন আসেন বাকি চিকিৎসকেরা? দুই হাসপাতালই জানায়, আসতে আসতে ১১টা-সাড়ে ১১টা বেজে যায়। নিয়মরক্ষা করতে সাড়ে ন’টায় জুনিয়র ডাক্তারেরা এসে আউটডোর খোলেন, রোগী দেখেন। যেখানে আউটডোরে বিশেষজ্ঞ-চিকিৎসককে দেখানোর জন্য দূর-দূরান্তের মানুষ ভোর থেকে লাইন দেন, কেন তাঁদের ঠায় অপেক্ষা করতে হবে, স্বভাবতই সেই প্রশ্নের কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি।
নিয়ম ভাঙলে কোনও ব্যবস্থাই যদি নেওয়া না হয়, তা হলে নিয়ম হল কেন? স্বাস্থ্য দফতরের মুখপাত্র অসিত বিশ্বাস বলেন, “আমরা একেবারে চুপচাপ বসে নেই। পরিসংখ্যান খতিয়ে দেখে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। জুলাইয়ের প্রথমে অধ্যক্ষদের সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠক হবে। নিয়ম ভাঙার জন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা তখনই চূড়ান্ত করা হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.