আধুনিক যুব সমাজের একটি বড় অংশের মাদকাসক্তির ঝোঁক কাটাতে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের সামাজিক ন্যায়বিচার মন্ত্রক দেশের বৈদ্যুতিন ও বিভিন্ন ভাষার সংবাদপত্রে বহুল প্রচার শুরু করেছে। ড্রাগ-সহ নানা মাদকদ্রব্য তো বটেই, সাম্প্রতি যে হারে আঠা জাতীয় দ্রব্য বা কাশির ওষুধের নেশায় যুবসমাজ জড়িয়ে পড়ছে তাতে উদ্বেগে দেশের কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলি। এই প্রবণতা এড়াতে পুলিশি অভিযান, মাদকাসক্তদের পুর্নবাসন কেন্দ্রে পাঠানোর মতো নানান সরকারি কর্মসূচি শুরু হয়েছে। খানিকটা ভিন্ন উপায়ে হলেও উদ্দেশ্যগত দিক থেকে অভিযানে সামিল করা হয়েছে স্বামী বিবেকাকন্দকে। সরকারি উদ্যোগে নয়, বিবেকানন্দ যুব মহামন্ডলের উদ্যোগে জলপাইগুড়িতে শুরু হয়েছে উত্তরবঙ্গ আঞ্চলিক শিবির। শিবিরে যোগ দেওয়া যুবকদের মাদক থেকে সরে থাকার মতো মানসিক ক্ষমতা তৈরি হয়ে যায় বলে মহামন্ডল সূত্রে জানানো হয়েছে। হাতিয়ার বিবেকানন্দের প্রবর্তিত মনসংযোগ পদ্ধতি। ভোর সাড়ে চারটেয় ঘুম থেকে উঠে প্রার্থনা, খেলাধুলা, শরীরচর্চা তো রয়েইছে, সকাল-সন্ধ্যায় মনসংযোগ তৈরির জন্য ধ্যান ও নানান ধরনের কৌশলও শিখছেন শিবিরে যোগ দেওয়া যুবকেরা। জলপাইগুড়ি পলিটেকনিক কলেজে গত ২১ জুন থেকে সাড়ে তিন দিনের শিবির শুরু হয়েছে। যোগ দিয়েছেন ৩৮৫ জন। শিবিরে যোগ দিয়েছেন মহামন্ডলের সদস্য পদস্থ সরকারি আধিকারিক সুশান্ত মন্ডল। তিনি বলেন, “শুধু যুবকদেরই নয়, বড়দেরও মনসংযোগের প্রয়োজন রয়েছে। প্রতিদিনের ব্যস্ত জীবনের নানান মোড়ে প্রতিযোগিতা বা হতাশা নানারকম অভিব্যক্তি তৈরি হয়। তার থেকে অনেক রকমের হাতছানিও রয়েছে। সেগুলি কাটাতে মনসংযোগ অন্যতম হাতিয়ার। শিবিরে তাই আত্মনিয়ন্ত্রণ, সংযম এবং আত্মশক্তি তৈরি করার বিভিন্ন কৌশল, খেলাধুলা বা আচার আচরণের মধ্যে দিয়ে শেখানো হয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, নিজের মনের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন। সেই কৌশলও শেখানো হয়, যাতে কোনও বিপথের হাতছানি হলেই মনকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। শিবিরে যোগ দেওয়া সরকারি কর্মী তথা মহামন্ডলের শিলিগুড়ি শাখার সম্পাদক শিবব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, “সকাল থেকে খেলা হয়। ব্রতচারী হয়। শিবিরের প্রতিটি কাজেই একটি গোষ্ঠীগত মানসিকতা তৈরি করা হয়। বিবেকানন্দর জীবনের নানান গল্প এবং তাঁর প্রবর্তিত মনসংযোগ ধারা মানসিকতায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। সাধারণত অবসাদ থেকেই নেশার আসক্তি শুরু। যে মনসংযোগ কৌশল শেখানো হয় তা অবসাদকে দূরে সরিয়ে রাখে। শিবিরে অখিল ভারত যুব মহামন্ডলের সম্পাদক বীরেন্দ্র কুমার চক্রবর্তীও উপস্থিত ছিলেন। |