সব্জির মূল্যবৃদ্ধিতে রবিবারেও ফাঁকা বাজার
শুক্তো, নারকোল দিয়ে কচুর শাক, পটোল পোস্ত, সব্জি দিয়ে মুগের ডাল, বেগুনি, ধোঁকার ডালনা, পুষ্পান্ন, পনিরের ডালনা, চাটনি, পাঁপড় ভাজা। মাত্র দু’সপ্তাহ আগে এই সব পদ দিয়ে সাজানো ভোগের দাম পড়ত ৮০ টাকা। কিন্তু কাঁচা সব্জির দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন সেই ভোগের দামই দাঁড়িয়েছে জনপ্রতি একশো টাকা করে। নবদ্বীপের উডবার্ন রোডের মোহান্ত বাড়ির ভোগ নানা উৎসবে গৃহস্থ বাড়িতে বেশ জনপ্রিয়। ছোটখাট অনুষ্ঠানে বা অন্নপ্রাশন, উপনয়নে নবদ্বীপের চালু রেওয়াজ ঠাকুর বাড়ির প্রসাদ খাওয়ানো। কিন্তু সাম্প্রতিক মূল্যবৃদ্ধিতে সাধারণ গৃহস্থ থেকে এই সব মঠ-মন্দিরের প্রধানেরা দৈনন্দিন বাজার নিয়ে সঙ্কটে। আলু চন্দ্রমুখী ১৮-১৯ টাকা কেজি, জ্যোতি ১৫-১৬ টাকা। পটোল ২০-২৫ টাকা। বেগুন ৪০-৬০ টাকা কেজি। ঢ্যাঁড়শ, ঝিঙে ৩০ টাকা কেজি। কুমড়ো ১২-১৫ টাকা। ডাঁটা ১০ টাকা। টম্যাটো ৩৫ টাকা। ফুলকপি এক একটার দাম ২০-২৫ টাকা। বাঁধা কপি একটু বেশি, ৩০-৩২ টাকা। পাতিলেবু জোড়া ৫ টাকা, কাঁচকলা ৫ টাকা। আদা ৬০ টাকা। এই পরিস্থিতিতে মোহান্তবাড়ি, হরিসভা মন্দির, গোবিন্দ বাড়ি, সমাজবাড়ি, মহাপ্রভু বাড়িপ্রায় সর্বত্রই ঠাকুরবাড়িতে প্রসাদের দাম ঠিক রাখতে হিমসিম খেতে হচ্ছে।
—নিজস্ব চিত্র।
মোহান্ত বাড়ির বাবু মোহান্ত বলেন, “বারো দিন আগে যে সব পদ দিয়ে ভোগের দাম ছিল জনপ্রতি ৮০ টাকা, এখন তা একশোর নিচে নামা যাচ্ছে না। অন্ন গোবিন্দভোগের হলে দাম আরও ৮ টাকা বেড়ে যাচ্ছে। কারণ গোবিন্দভোগ চালের কেজি ৪২-৪৩ টাকা। কিন্তু সমস্যা হল, মানুষ আমাদের ভুল বুঝছেন। কেউ কেউ আমাদের ডাকাত বলছেন। চুপ করে শুনে যাচ্ছি।” নবদ্বীপ হরিসভা মন্দিরের বিবেক বন্ধু ব্রহ্মচারী বলেন, “আমাদের প্রসাদ ৬০ টাকা। বহু বাড়ি থেকে প্রসাদ নিয়ে যাওয়া হয় আমাদের কাছ থেকে। কিন্তু আমরা আর পারছি না। একটা বড় মোচার দাম চাইছে ১৩০ টাকা। এরপরে কী করে ৬০ টাকায় প্রসাদ দেওয়া যাবে?” বাজারের সব্জি বিক্রেতারাও পড়েছেন বিপাকে। রবিবার ছুটির দিন হলেও বহু বাজারেই বিক্রেতারা জিনিসপত্র আনেননি। বাজারও ফাঁকা ছিল। নবদ্বীপ সংলগ্ন পূর্বস্থলী থেকে রোজ বাজারে সব্জি বেচতে আসেন তপন বিশ্বাস। তিনি বলেন, “আড়ত থেকে কাঁচা সব্জি কিনতে গেলে দাম শুনে ভয় পেয়ে যাচ্ছি। অত দাম শুনে যদি বাজারে ক্রেতারা পিছিয়ে যায়, তা হলে বিরাট ক্ষতি হয়ে যাবে।” পূর্বস্থলীরই কৃষিজীবী নৃপেন মণ্ডল বা মায়াপুরের বিকাশ দত্ত বলেন, “বাজারে যে দাম পাওয়া যাচ্ছে, আমরা তার কিছুই পাচ্ছি না। আমরা সেই মার খেয়েই যাচ্ছি।” নবদ্বীপ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক উত্তম সাহা বলেন, “আবহাওয়ার কারণে কিছু সব্জি উৎপাদনে ঘাটতি রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে বাজারের যে অবস্থা তাতে ক্রেতা বা চাষি কারও উপকার হচ্ছে না। আসলে উৎপাদন থেকে ক্রেতার মধ্যবর্তী পর্যায়ে দামটা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। আমরা এই পরিস্থিতি সামলাতে উদ্যোগী হচ্ছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.