স্ত্রী ও দুই মেয়েকে খুন করে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। রবিবার দুপুরে একটি পলাশ গাছ থেকে ঝুলন্ত দেহ মিলল অভিযুক্ত রথীন ঘোষের (৩৩)।
শনিবার সন্ধ্যায় জামুড়িয়ার দরবারডাঙায় বাড়ি থেকে রথীনের স্ত্রী সোনালি (২৭) এবং দুই মেয়ে বর্ষা (৬) ও বুনির (২) রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে রথীন পলাতক ছিলেন। প্রতিবেশীরা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, স্ত্রী-মেয়েদের পাথর দিয়ে থেঁতলে খুন করে পালিয়ে গিয়েছেন রথীন। রবিবার বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে জোড়পাড়ে একটি গাছে রথীনের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য আসানসোল মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়। আসানসোলের এডিসিপি ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওই যুবকের বাড়ির লোকজন এলাকায় নেই। তাঁদের সঙ্গে কথা বললে পুরো বিষয়টা খানিকটা পরিষ্কার হবে বলে আশা করছি।”
এ দিন দুপুরেই জামুড়িয়ার বিজয়নগরে বাপেরবাড়ি এলাকায় সোনালির শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। শ্মশানে দাঁড়িয়েই সোনালির বাবা শৈলেন মণ্ডল জানান, তাঁর দুই মেয়ের মধ্যে সোনালি ছোট। আট বছর আগে দরবারডাঙার রথীনের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দেন। তাঁর অভিযোগ, “বিয়ের পর থেকেই মেয়ের উপরে অত্যাচার করত জামাই। অশান্তি চলতে থাকায় মেয়েকে নিয়ে চলে আসি। দুই নাতনি ও মেয়ে আমার কাছেই থাকছিল। মেয়ে এখানে থাকাকালীনও জামাই মাঝে-মধ্যে এসে অশান্তি করে যেত। বেশ কিছু দিন ধরে মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকজন ওদের ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করে। তাই দিন দশেক আগে নিজে গিয়ে মেয়ে ও নাতনিদের পৌঁছে দিয়ে আসি। কিন্তু এ রকম পরিণতি হবে, ভাবতে পারিনি।” তবে তিনি বলেন, “মেয়ের শ্বশুরবাড়ি থেকে কেউ কখনও পণ বা টাকা-পয়সার দাবি করেননি।” সোনালির দাদা পিন্টু মণ্ডলের দাবি, “রথীন নানা রকম নেশা করত। সে জন্যই অশান্তি লেগে থাকত। সম্ভবত তার হাতে আর বিশেষ টাকা-পয়সা ছিল না। তারই জেরে এমন পরিণতি বলে আমাদের ধারণা।”
দরবারডাঙার কিছু বাসিন্দার দাবি, রথীন কয়লা কারবারেও জড়িয়ে পড়েছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দা রঞ্জিত বাউরি বলেন, “ইদানীং রথীনকে দেখে মনে হত, মানসিক অবসাদে ভুগছে। বাড়িতে বাবা, মা, দাদার সঙ্গেও অশান্তি করত বলে শুনেছি। কিন্তু এমন ঘটবে কেউ কল্পনাও করিনি।” |