জয়েন্টের ই-কাউন্সেলিং

‘ই-কাউন্সেলিং’। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়াদের অভিধানে এ বছরের নয়া সংযোজন। যা তাঁদের বাঁচিয়ে দিল লম্বা লাইনে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে গলদঘর্ম হওয়ার থেকে। প্রযুক্তির সুবিধা নিয়ে এ বছর থেকেই পুরোদমে শুরু হল ইন্টারনেট মারফত ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তির জন্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার কাউন্সেলিংয়ের প্রক্রিয়া। তবে শুধু জয়েন্টে সফল পরীক্ষার্থীরা নয়, এআইইইই-তে সফলরাও এই ভাবে কলেজ পছন্দ করতে পারবেন।
এ বার থেকে কলেজ পছন্দের জন্য কোনও নির্দিষ্ট দিনে আর অন্য জেলা থেকে কলকাতায় আসতে হবে না। কম্পিউটার থাকলে বাড়িতে বসেই আর না-থাকলে সাইবার কাফেতে গিয়ে কাউন্সেলিংয়ের কাজটি সেরে নিতে পারবেন তাঁরা। রাজ্যের ৯৬টি কারিগরি ও প্রযুক্তি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৩২ হাজার আসনে ভর্তি প্রক্রিয়া চলবে ই-কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে।
এখানে ভর্তির হিসেবটা একটু মনে রাখা জরুরি—

১) রাজ্যের সমস্ত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ১০০% আসনই ভরা হবে জয়েন্ট এন্ট্রান্সের মেধা তালিকা অনুযায়ী।
২) রাজ্যের বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলিতে ৮০% আসন পূরণ করা হবে জয়েন্ট মেধা তালিকা থেকে। ১০% হবে এআইইইই-তে সফল পড়ুয়াদের মধ্যে থেকে। বাকি ১০% ভর্তি করা যাবে ম্যানেজমেন্ট কোটার মাধ্যমে।
৩) কলেজের পূর্ণ অধিকার রয়েছে ম্যানেজমেন্ট কোটার মাধ্যমে ছাত্র ভর্তি না-করার। আর তা হলে, ওই ১০% পূরণ করতে হবে জয়েন্ট সফলদের দিয়েই।

ই-কাউন্সেলিংয়ের প্রথম ধাপ ই-রেজিস্ট্রেশন বা অনলাইনে নাম নথিভুক্তি—

• ওয়েস্ট বেঙ্গল জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের wbjeeb.nic.in ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইনে ইউজার আই ডি এবং পাসওয়ার্ড তৈরি করতে হবে
• সেখানে যা যা তথ্য চাওয়া হবে, সেগুলি দেওয়ার পর মিলবে ই-চালান
• ওই চালানের প্রিন্ট নিতে হবে
• কোর ব্যাঙ্কিংয়ের সুবিধা আছে, ইউবিআইয়ের এমন এক শাখায় রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ ৫০০ টাকা জমা দিতে হবে
• ফি জমা দেওয়ার তথ্য ফের ই-কাউন্সেলিংয়ের ওয়েবসাইটে জানাতে হবে
• এর পর ওয়েবসাইটে ক্রমানুসারে সাজিয়ে দিতে হবে পছন্দের কলেজ ও পাঠ্যক্রমের শাখা
• এই প্রক্রিয়া চলবে ২৯ জুন পর্যন্ত
• না হলে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের পক্ষ থেকেই তা ‘লক্’ করে দেওয়া হবে
• কোনও ভাবেই যা আর পরিবর্তন করা যাবে না
• পুরো বিষয়টিই হবে মেধা তালিকার ভিত্তিতে
• উপরের দিকে স্থান পাওয়া প্রার্থীরা অগ্রাধিকার পাবেন
• তালিকার নিচের দিকে স্থান পাওয়া পড়ুয়া যত আগেই কলেজ বা কোর্স পছন্দ করুক না কেন, তার পালা আসবে তুলনায় ভাল জায়গায় থাকা পড়ুয়ার পরেই
• যাঁরা পছন্দের কলেজ ও পাঠ্যক্রম পাবেন, তাঁরা রাজ্যের ২৫টি এবং ত্রিপুরার একটি রিপোর্টিং সেন্টারে ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন
সতর্ক থাকুন
• নিজের ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড প্রার্থী যেন নিজেই তৈরি করেন
• কোনও ব্যক্তির সাহায্য নেওয়া যেতেই পারে, কিন্তু তিনি যেন প্রার্থীর ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড কোনও মতেই জানতে না পারেন
• ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড জানতে পারলে সেই ব্যক্তি প্রার্থীর পছন্দের কলেজের বদলে অন্য কলেজ ও শাখা লক করে দিতে পারেন। যা পরবর্তীকালে কোনও ভাবেই পরিবর্তন করা সম্ভব হবে না

রিপোর্টিং সেন্টারে গিয়ে প্রার্থী কোনও নির্দিষ্ট কলেজে ভর্তির সুযোগ না-নিয়ে আপগ্রেডেশনের সুযোগও নিতে পারে। তবে আপগ্রেডেশনের ফলে পাওয়া আসন পছন্দ না হলে কিন্তু আবার আগের পছন্দের কলেজকে বেছে নেওয়া যাবে না। অন্য দিকে, আপগ্রেডেশনের সুযোগ না নিলে, পরবর্তী পর্যায়ে আর সেই সুযোগ মিলবে না। একবার যে প্রার্থী আপগ্রেডেশনের সুযোগ নিয়েছে, কাউন্সেলিংয়ের শেষ পর্যায় অর্থাৎ তৃতীয় দফা পর্যন্ত তার আর রিপোর্টিং সেন্টারে যাওয়ার দরকার নেই। ই-মেল বা ‘এসএমএস’ মাধ্যমেই তিনি জানতে পারবেন পছন্দমতো কলেজে পড়ার সুযোগ তিনি পেলেন কী না। তৃতীয় পর্যায়ের শেষে প্রদত্ত আসনের নিরিখে নির্দিষ্ট কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ নেওয়া যেতে পারে সংশ্লিষ্ট কলেজে গিয়ে।
বিশেষজ্ঞদের এই নয়া পদ্ধতি নিয়ে একেক ধরনের মতামত। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষক মনোজ মিত্রের মতে, ই-কাউন্সেলিংয়ের ফলে ছাত্র-অভিভাবকের সুবিধাই হবে। আর, জয়েন্টের মেধা তালিকায় যাঁরা উপরের দিকে রয়েছেন, তাঁদেরও কোনও অসুবিধা হবে না। ব্লক লেভেল থেকে ছাত্রছাত্রীদের ই-কাউন্সেলিংয়ের জন্য যে হেল্পডেক্স তৈরি করা হয়েছে সেগুলি ঠিকঠাক ভাবে কাজ করলে গ্রাম-মফস্সলের প্রার্থীদেরও কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। অন্য দিকে, অ্যাপাই অর্থাৎ অ্যাসোসিয়েশন অফ প্রফেশনাল অ্যাকাডেমিক ইনস্টিটিউশনের সভাপতি তথা ‘জেআইএস’ গোষ্ঠীর প্রধান তরণজিৎ সিংহের মতে, কলেজগুলি সরেজমিনে দেখে আসাটা অত্যন্ত জরুরি। ‘চয়েস লকিং’-এর ক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো না-করে শেষ দিন পর্যন্ত প্রত্যেকটি কলেজের তুল্যমূল্য বিচার করা উচিত। শিক্ষকমণ্ডলী, পরিকাঠামো যাচাই করে কলেজ পছন্দ এবং ‘লক্’ করার দিকে এগোনো উচিত। প্রয়োজনে কলেজে কেমন পড়াশোনা হয় তা জানার জন্য বর্তমানে কলেজের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথাবার্তাও বলে নেওয়া ভাল।
আবার হুগলি জেলার অ্যাকাডেমি অফ টেকনোলজির কর্তা জগন্নাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, এই বছর যেহেতু প্রথম ই-কাউন্সেলিং হচ্ছে, তাই পুরোদস্তুর বিষয়টিকে আয়ত্তে আনতে হবে। অনেক ছাত্রছাত্রী বা অভিভাবকেরই কলেজ সম্পর্কে সচেতনতার অভাব রয়েছে। গুরুত্ব দিয়ে কলেজগুলি সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জেনে, তার পরই কলেজ বা কোর্স বাছাই করা প্রয়োজন। নমুনা হিসেবে জগন্নাথবাবু জানালেন, কোনও প্রার্থীর মেধা তালিকায় হয়তো তেমন খারাপ স্থান নয়, ইচ্ছে ইলেকট্রনিক্স নিয়ে পড়ার। কিন্তু বিভ্রান্ত হয়ে প্রার্থী হয়তো এমন সমস্ত কলেজকে পছন্দের তালিকায় প্রথমের দিকে রাখলো, যেগুলিতে এমনিতেই আসন পূরণ হয় না। তাই ধীরেসুস্থে প্রত্যেকটি পদক্ষেপ নেওয়াটা খুব জরুরি।

প্রার্থীদের করণীয় তারিখ
অনলাইন রেজিস্ট্রেশন এবং ই-চালান ডাউনলোড
চয়েস ফিলিং বা কলেজ ও শাখা পছন্দ
চয়েস লকিং
প্রথম দফার আসন বণ্টনের ফলাফল
প্রথম দফার আসন বণ্টনের ভিত্তিতে উল্লিখিত কেন্দ্রে ভর্তি
উল্লিখিত বা নির্দিষ্ট কেন্দ্রে গিয়ে নাম প্রত্যাহার
নাম প্রত্যাহার অথবা উপস্থিত না থাকার কারণে শূন্য আসন
দ্বিতীয় দফার আসন বণ্টনের ফলাফল
দ্বিতীয় দফার আসন বণ্টনের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট কেন্দ্রে ভর্তি
নাম প্রত্যাহার (নির্দিষ্ট কেন্দ্রে গিয়ে)
শূন্যপদের তালিকা (নাম প্রত্যাহার বা অনুপস্থিতির কারণে)
‘এম আই এস’ রিপোর্টের ভিত্তিতে কর্তৃপক্ষের আসন সংক্রান্ত নির্দেশিকা
তৃতীয় দফার আসন বণ্টনের ফলাফল
তৃতীয় দফার আসন বণ্টনের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট কেন্দ্রে ভর্তি (নয়া নথিভুক্তকারীদের জন্য)
প্রত্যেক প্রার্থীর নির্ধারিত কলেজে সশরীরে উপস্থিতি বা হাজিরা
বৈদ্যুতিন ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ
 
খেয়াল রাখুন
তথ্য সংকলন: কৌলিক ঘোষ
 
প্যারামেডিক্যালের পাঠ
প্যারামেডিক্যাল সায়েন্সের বিভিন্ন বিষয়ে ভর্তি চলছে ত্রিপুরা ইনস্টিটিউট অফ প্যারামেডিক্যাল সায়েন্সেস-এ। প্রতিষ্ঠানটি ত্রিপুরা সরকারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে তৈরি ও ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারা স্বীকৃত। বিজ্ঞান নিয়ে ১০+২ বা তার সমতুল পরীক্ষা দিলে বা পাশ করলে, ভর্তি হওয়া যাবে। কলকাতার সিআইটি রোডে প্রতিষ্ঠানের দফতরে ১৯, ২০ জুন কাউন্সেলিং হবে ১১টা থেকে ৪টে পর্যন্ত। বিস্তারিত জানতে ফোন: ০৩৩-৪০১৬-৪১৪১

ভর্তির বিজ্ঞপ্তি
বাণিজ্যে বা আইনে স্নাতকদের জন্য হিসাবশাস্ত্র এবং কর-সংক্রান্ত পাঠ্যক্রম চালু করল প্রফেশনাল কোর্স অফ অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ট্যাক্সেশন। এ বার যাঁরা বাণিজ্যে বা আইনে স্নাতকস্তরের পরীক্ষা দিয়েছেন, তাঁরাও এই কোর্সে ভর্তি হতে পারবেন। বিশদ তথ্যের জন্য ফোন করুন: ৯৮৩৬২-৬২৭৩৩

ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ
রাজ্যে গড়ে উঠল নতুন একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। মহেশতলায় অবস্থিত কলেজটির নাম বাটানগর ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং, ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড সায়েন্স। বিস্তারিত তথ্যের জন্য ফোন ৯৮৩০০-২৫৭১৫, ২৪৯০-০০০২ নম্বরে। ওয়েবসাইট: www.batanagarinstitute.com

অনলাইনে পরীক্ষা
পিজি প্রোগ্রাম ইন ফিনান্স ম্যানেজমেন্টে ভর্তির জন্য অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়া হবে ৩০ জুন ও ১ জুলাই। ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ ও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ফিনান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট যৌথ ভাবে কোর্সটি করাচ্ছে। যাঁরা ভর্তি হতে চান, অথচ ক্যাট, ম্যাট বা জ্যাট দেননি বা উপযুক্ত নম্বর নেই, তাঁরা এটি দিতে পারবেন। এনএসই-র ওয়েবসাইটে নাম নথিভুক্ত করা যাবে। আবেদনের শেষ দিন ২৫ জুন। পরীক্ষা হবে কলকাতা -সহ ১২টি শহরে। ওয়েবসাইট: www.nseindia.comwww.nfim.ac.in


Content on this page requires a newer version of Adobe Flash Player.

Get Adobe Flash player


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.