ছেলেধরা সন্দেহে এক যুবককে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার ভোরে উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারের দুর্গাপুর পঞ্চায়েতের বগুন এলাকায় ওই ঘটনায় মৃতের নাম লাদেম মুর্মু (৩৫)। বাড়ি মালদহের নয়নপুর এলাকায়। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ডেভিড ইভান লেপচা বলেন, “মৃতের পরিবারের তরফে খুনের অভিযোগ জমা পড়েনি। অভিযোগ পেলে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করতে সুবিধা হবে। তবে পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।”
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, দিনমজুর লাদেমের সঙ্গে রানাপুর এলাকার বাসিন্দা, পেশায় দিনমজুর সোম হাঁসদার মেয়ে নুমি হাঁসদার বিয়ে হয়। সম্প্রতি নুমি দেবী বাপের বাড়ি বেড়াতে আসেন। গত শুক্রবার দুপুরে লাদেম স্ত্রীকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য শ্বশুড়বাড়িতে যান। সকালে লাদেম নেশাগ্রস্ত অবস্থায় রানাপুর সংলগ্ন বগুন এলাকায় ঘোরাঘুরি করছিলেন বলে ওই এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ। সেইসময় মঞ্জুলি বেওয়া নামে স্থানীয় এক মহিলা লাদেমকে ছেলেধরা বলে সন্দেহ করে চিৎকার চেঁচামেচি জুড়ে দেন। অভিযোগ, তাঁর দেড় বছরের ছেলেকে নিয়ে লাদেম পালানোর চেষ্টা করছিলেন। সেই সময় এলাকায় অপরিচিত লাদেমকে দেখে বাসিন্দাদের একাংশের সন্দেহ হয়। তাঁকে আটকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। নেশার ঘোরে লাদেম অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছিলেন বলে অভিযোগ। এর পরে এলাকায় ছেলেধরার গুজব রটে যায়। লাদেমকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে লাদেমের শ্বশুরবাড়ির লোকজন ও রানাপুর এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ তির ধনুক নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন।
লাদেমকে ইটাহার ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনার পর দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ বাহিনী মোতায়েন হয়েছে। মৃতের শ্বশুর সোমবাবু বলেন, “জামাইয়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে ওই এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ পিটিয়ে খুন করল।” |