দক্ষিণবঙ্গ বৃষ্টির জন্য হা পিত্যেশ করে থাকলেও অঝোর বর্ষণে প্রাক বর্ষাতেই বন্যার ভ্রূকুটি উত্তরবঙ্গের কোচবিহারের বেশ কয়েকটি এলাকায়।
শুক্রবার রাত থেকে প্রবল বৃষ্টিতে কোচবিহারের বিভিন্ন নদীর জলস্তর বেড়ে চলেছে। ফলে গাঁ-গঞ্জে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। ইতিমধ্যেই বাঁধ ভেঙে গদাধরের জল ঢুকে তুফানগঞ্জ-১ ব্লকের দেওচড়াই পঞ্চায়েতের শতাধিক পরিবারকে ঘর ছাড়া করেছে। মানসাই নদীতে ইতিমধ্যেই হলুদ সঙ্কেত। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, তোর্সা, মানসাই, সঙ্কোশ, কালজানি, রায়ডাক-১, তিস্তা, সিঙিমারি, ঘরঘরিয়া-সহ জেলার অধিকাংশ ছোট-বড় নদীর জলস্তর ক্রমশ বাড়ছে। সেই সঙ্গে শুরু হয়েছে নদী পাড় ভাঙন। কোচবিহারের অতিরিক্ত জেলাশাসক সি মুরুগণ বলেন, “জেলার বিভিন্ন নদীতে জল বাড়ছে। সতর্ক করা হয়েছে স্থানীয় প্রশানকে। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে।” |
জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানান, গত ২৪ ঘন্টায় কোচবিহার সদরে ১৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। মাথাভাঙা ও তুফানগঞ্জ মহকুমায় বৃষ্টি হয়েছে ১০৭ মিলিমিটার। দিনহাটায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল কিছুটা কম, ৪০ মিলিমিটার। শুক্রবার রাতভর বৃষ্টি হয়েছে। শনিবার সকাল থেকেও জেলা জুড়ে আকাশের মুখ ছিল ভার। দফায় দফায় বৃষ্টি হয়েছে। টানা বৃষ্টির জেরে শহরের নতুনবাজার, কালীকাদাস রোড, বিশ্বসিংহ রোড, কেশব রোড, সুনীতি রোড, স্টেশন রোডের বহু এলাকায় জল জমে যায়। শহরের রাসমেলা মাঠ চেহারা নেয় সুবিশাল জলাশয়ের।
শনিবার সকালে গদাধরের জল ঢুকে তুফানগঞ্জ-১ ব্লকের দেওচড়াই পঞ্চায়েতের দেওচড়াইয়ের শ্যামারকুঠি, সন্তোষপুর, নেপালেরখাতা গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। শ্যামারকুঠীতে রাস্তার উপরে কোমর সমান জল। তৃণমূলের দেওচড়াই অঞ্চল সভাপতি কবীর আলি বলেন, “গদাধরের জল বেশ কিছু বাড়িতে ঢুকেছে। শতাধিক পরিবার জলবন্দি। জল বাড়লে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।” এলাকার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “সন্তোষপুরে গদাধরের বাঁধের একাংশ ভেঙে দেওচড়াই গ্রাম পঞ্চায়েতের কিছু একাকায় জল ঢুকেছে। প্রচুর আবাদি জমি জলে তলিয়েছে। সেচ দফতর জরুরি ভিত্তিতে মেরামতির কাজ চালাচ্ছে।” তুফানগঞ্জের বিডিও তাপস সিংহ রায় জানান, শতাধিক পরিবার জলবন্দি হয়েছে। চিলাখানায় গদাধর, চরবালাভূতে কালজানি, ভুরকুশ এলাকায় রায়ঢাক নদীর ভাঙন শুরু হয়েছে। এ ছাড়াও দিনহাটার পুঁটিমারি ও মাতালহাট এলাকায় টানা বৃষ্টিতে ৮টি বাড়ি ভেঙেছে। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে আরও ২০টি বাড়ি। |