পদাতিক এক্সপ্রেসে ডাকাতি, দেখা মেলেনি রেল পুলিশের
সিগন্যাল না-পেয়ে থমকে গিয়েছিল কলকাতাগামী পদাতিক এক্সপ্রেস। শুক্রবার রাতে মালদহের একলাখি স্টেশনের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা সেই ট্রেনটি আচমকাই ঘিরে ধরে জনা ত্রিশ দুষ্কৃতী। সংরক্ষিত কামরার দরজা বন্ধ ছিল। কামরায় উঠতে না-পেরে জানলা দিয়েই শুরু হয় লুঠপাট। জানলার ধারে বসে থাকা যাত্রীদের কারও হাত-ব্যাগ, কারও বা ঘড়ি ছিনিয়ে নিতে থাকে তারা। পর পর পাঁচটি সংরক্ষিত কামরায় লুঠপাট চলিয়ে ‘ধীরে সুস্থেই’ ফিরে যায় তারা, এমনই অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। দুষ্কৃতীদের বাধা দিতে গিয়ে গুরুতর জখম হন কলকাতার সোদপুরের বাসিন্দা একটি বহুজাতিক সংস্থার কর্মরত এক দম্পতি। রাতেই তাঁদের মালদহ রেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। মাথা ও হাতে গভীর ক্ষত নিয়ে শনিবার সকালে ওই দম্পতি ফের রওনা দিয়েছেন কলকাতার দিকে।
প্রায় মিনিট পঁচিশ ধরে দুষ্কৃতীদের অবাধ তাণ্ডব চললেও ওই ট্রেনে কর্তব্যরত রেল পুলিশের টিকি দেখতে পাননি বলে যাত্রীদের অভিযোগ। যাত্রীদের বিক্ষোভে মালদহ টাউন স্টেশনে রাতে প্রায় ঘণ্টা দুয়েক আটকে থাকে ট্রেনটি। পরে রেলের কাটিহার ডিভিশনের কর্তারা গিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়ায় বিক্ষোভ ওঠে।
সোদপুরের দম্পতির চিকিৎসা চলছে। ছবি:মনোজ মুখোপাধ্যায়
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের ডিআরএম (কাটিহার) ভূষণ পাতিল বলেন, “কেন ট্রেনটিকে একলাখি স্টেশনের বাইরে দাঁড় করানো হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখতে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” ট্রেনে কর্তব্যরত রেল পুলিশই বা কেন যাত্রীদের সাহায্যে এগিয়ে এলেন না তা-ও খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন রেল পুলিশ সুপার (শিলিগুড়ি) শ্যামল ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “ডাকাতির সময় রেল পুলিশ কর্মীরা কোন কামরায় ছিলেন, তাঁরা কী করছিলেন সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশের কাজে গাফিলতি থাকলে অবশ্যই শাস্তি হবে।”
যাত্রীরা জানান, ওই দিন রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ একলাখি স্টেশনের ঢোকার মুখে আচমকাই দাঁড়িয়ে পড়ে পদাতিক এক্সপ্রেস। মিনিট তিনেকের মধ্যে জনা ত্রিশের ডাকাত দলটি ট্রেনের ২ নম্বর থেকে ৬ নম্বর সংরক্ষিত কামরার দু’পাশে ঘিরে ফেলে। দরজা বন্ধ থাকায় তারা জানালা দিয়েই হামলা চালাতে থাকে। সোদপুরের বাসিন্দা কানাইলাল দত্ত ও তাঁর স্ত্রী দেবযানী পরিবারের অন্যদের সঙ্গে দার্জিলিং থেকে ফিরছিলেন। কানাইলালবাবুর ছেলে রাজকুমার বলেন, “চিৎকার শুনে জেগে উঠে দেখি, জানালা দিয়ে দু-তিন জন মায়ের ব্যাগ নিয়ে টানাটানি করছে। ঘটনাটি দেখে বাবা বাধা দিতে গেলে ডাকাতেরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর কপালে আঘাত করে। মায়ের হাতেও কোপ মারে। তার পর ব্যাগটা ছিনিয়ে নেয়।” ঘটনার কথা বলতে গিয়ে শিউরে উঠেছেন দেবযানীদেবীও। তিনি বলেন, “শুধু আমাদের কামরায় নয়। আশপাশের কামরায় একই ভাবে জানালা দিয়ে হামলা চালায় ডাকাতরা। যাত্রীরা ‘ডাকাত ডাকাত’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। কিন্তু প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে চেঁচিয়েও এক জন রেল পুলিশের দেখা মেলেনি।”
রাত সোয়া একটা নাগাদ মালদহ টাউন স্টেশনে ট্রেন পৌঁছলে ওই দম্পতিকে রেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কানাইলালবাবুর কপালে ৭টি এবং দেবযানীদেবীর বাঁ হাতে ৫টি সেলাই পড়ে। পরে, শনিবার সকালে তাঁরা ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসে কলকাতা রওনা দেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.