ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক-সহ তিন চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনার পরে দু’দিন কেটে গেলেও অভিযুক্তদের কেউ গ্রেফতার না হওয়ায় জেলার চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা উদ্বিগ্ন। হামলাকারীরা নিজেদের তৃণমূল নেতা-কর্মী বলে পরিচয় দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ।
গত বুধবার রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত এক ব্যাক্তিকে রাজগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতলে ভর্তি করানোর কিছুক্ষণ পরেই তিনি মারা যান। এর পর চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে রোগীর পরিজনেরা হাসপাতালে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক শর্মিষ্ঠা দাস-সহ তিন জন চিকিৎসক নিগৃহীত হন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, তৃণমূল ঘনিষ্ঠ এক নির্দল পঞ্চায়েত সদস্যও হামলার সময়ে উপস্থিত ছিলেন। অভিযুক্তরা সকলেই রাজগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক এবং রাজ্য বন উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান খগেশ্বর রায়ের ঘনিষ্ট। তারা সকলেই মদ্যপ ছিলেন। রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বরবাবু শনিবার দুপুরে বলেন, “রাজগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালে তৃণমূলের নাম করে কিছু লোক হাঙ্গামা বাধিয়েছে বলে আমাকে জানানো হয়েছে। রবিবার এলাকায় গিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখব। তবে এই ঘটনায় তৃণমূলের কেউ যুক্ত নয়। যাদের নামে অভিযোগ করা হয়েছে তাদের কাউকেই চিনি না।”
তবে ঘটনার রাতে বিধায়কের নাম করেই চিকিৎসকদের বারবার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশ দাবি করেছেন। ঘটনাচক্রে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং নিগৃহীত চিকিৎসকদের একাংশও তৃণমূল প্রভাবিত চিকিৎসক সংগঠন প্রগ্রেসিভ ডক্টর আসোসিয়েশনের সদস্য। সংগঠনের তরফে ঘটনাটি তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব, বিধায়ক খগেশ্বর রায়কে জানানো হয়েছে। ওই চিকিৎসক সংগঠনের জেলা সম্পাদক সুশান্ত রায় বলেন, “চিকিৎসকরা এখনও শঙ্কিত। হামলাকারীরা তৃণমূলের নেতা বলে পরিচয় দেওয়ায় বিষয়টি তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বকেও জানিয়েছি।”
ঘটনার পর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হলেও পুলিশের তরফে কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় চিকিৎসকেরা ক্ষুব্ধ। জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক স্বপন সরকার বলেন, “তিন জন চিকিৎসক নিগৃহীত হয়েছেন এবং একজন স্বাস্থ্যকর্মীকেও মারধর করা হয়েছে। হাসপাতালে ভাঙচুর করা হয়। গোটা ঘটনাটি পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।” রাজগঞ্জ থানার ওসি বুধাদিত্য রায় বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করা হয়েছে। তবে কেউ এখনও গ্রেফতার হয়নি।” |