তীর্থ সেরে আর বাড়ি ফেরা হল না। সিরিডির সাইবাবার আশ্রম থেকে ফেরার পথে মহারাষ্ট্রের ওসামানাবাদে একটি সেতু থেকে বাস পড়ে মৃত্যু হল অন্তত ৩০ জন পুণ্যার্থীর। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন টিসিএসের ৯ জন কর্মী। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থাই গুরুতর। আশ্চর্য ভাবে বেঁচে গিয়েছে এক বছরের একটি শিশু।
রাত তখন দু’টো। কোনও মতে বেঁচে ফেরা এক মহিলার কথায়, “আমরা সবাই ঘুমোচ্ছিলাম... হঠাৎই একটা বীভৎস আওয়াজ। চোখ খুলে কিচ্ছু দেখতে পেলাম না, চার দিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। কোনও মতে বাসটা থেকে বেরিয়ে আসি। আর তার পরই রাস্তার দিকে ছুটে যাই। চিৎকার করতে থাকি সাহায্যের জন্য। কেউ দাঁড়ায়নি। প্রায় এক ঘণ্টা পরে একটা বাস থামে। ওই বাসে করেই আমরা থানায় পৌঁছই। তত ক্ষণে পাঁচটা বেজে গিয়েছে।” তাঁর আরও অভিযোগ, চালক মদ্যপ অবস্থায় বাস চালাচ্ছিলেন।
পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলেন। সেতু থেকে ২৫ ফুট নীচে নদীতে গিয়ে পড়ে বাসটি। তবে নদীর ওই অংশে জল বেশ কম ছিল। পুলিশ আরও জানিয়েছে, রাত ২টো বেজে ৪০ মিনিট নাগাদ ওই ঘটনাটি ঘটে। |
দুর্ঘটনাগ্রস্ত এই বাসটিতেই ছিলেন পুণ্যার্থীরা। ছবি:পি টি আই |
শুক্রবার ৪৩ জন যাত্রী নিয়ে হায়দরাবাদ থেকে সিরিডির দিকে রওনা হয় বাসটি। ফেরার পথে দুর্ঘটনা। মহারাষ্ট্রের তথ্য ও জনসংযোগ দফতরের কমিশনার আর ভি চন্দ্রবদন জানান, মৃতদের অধিকাংশই হায়দরাবাদের বাসিন্দা। দেহগুলি তাই হায়দরাবাদে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যাঁদের পরিচয় জানা যায়নি, তাঁদের ছবি তুলে আত্মীয়-পরিজনদের দেখানো হচ্ছে। বাসটিতে টিসিএসের ১৩ জন কর্মী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে এক জনের আঘাত গুরুতর, তিন জন বিপন্মুক্ত। অন্ধ্রপ্রদেশের টিসিএস শাখার ভাইস প্রেসিডেন্ট ভি রঞ্জন বলেন, “টিভিতে খবরটা পেলাম। আমাদের সংস্থার লোকজন সঙ্গে সঙ্গেই হায়দরাবাদ এবং শোলাপুরে চলে গিয়েছে।”
এ দিকে, প্রিয়জনের একটা খবরের জন্য পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন অসংখ্য মানুষ। যদিও পুলিশ তাঁদের সে ভাবে সাহায্য করতে পারেনি বলে অভিযোগ অনেকেরই। পুলিশ আবার জানিয়েছে, যাত্রীরা অন-লাইনে অথবা বিভিন্ন পর্যটন সংস্থার মাধ্যমে টিকিট কেটেছিলেন। কিন্তু ওই সংস্থাগুলি যাত্রীদের সম্পর্কে বিশদ তথ্য দিতে পারছে না।
অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন কিরণ কুমার রেড্ডি জানান, যাত্রী-সুরক্ষায় গাফিলতি ও যাত্রীদের বিষয়ে তথ্য দিতে না পারার জন্য ওই সমস্ত সংস্থার বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে। |