|
|
|
|
ফুঁসছে কালজানি, ঘুম নেই গ্রামে |
নারায়ণ দে • আলিপুরদুয়ার |
নদী ভাঙনের আতঙ্কে রাতের ঘুম উবে গিয়েছে আলিপুরদুয়ার-১ ব্লকের দক্ষিণ পাটকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দাদের। বুধবার থেকে জলস্তর বেড়ে চলায় ফুঁসছে কালজানি নদী। জলোচ্ছ্বাসে দিনরাত পাড় ভেঙে চলেছে। ইতিমধ্যে অন্তত ২০টি স্পার ভেসে গিয়েছে। ভাঙন শুরু হয়েছে নদীর বাঁধের প্রায় একশো মিটার এলাকায়। নদী ক্রমশ গ্রামের দিকে ধেয়ে আসায় আতঙ্কিত বাসিন্দারা মনে করছেন প্রশাসন ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ভিটেমাটি রক্ষা করা সম্ভব হবে না। আলিপুরদুয়ার-১ ব্লকের বিডিও প্রদীপ্ত ভগত বলেন, “দক্ষিণ পাটকাপাড়ার বালাবাড়ি গ্রামে কালজানি নদীর ভাঙনের খবর পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে সেচ দফতরের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” শুক্রবার সকালে ভাঙন কবলিত এলাকা ঘুরে দেখেন সেচ দফতরের আলিপুরদুয়ার বিভাগের সহকারি বাস্তুকার নরেশচন্দ্র রায়। তিনি বলেন, “বুধবার থেকে নদীর জলস্তর বেড়ে চলায় ভাঙন শুরু হয়েছে। গত বছর দেওয়া ২০টি স্পার নদী গর্ভে তলিয়েছে। দ্রুত বাঁধ না দেওয়া হলে গ্রাম ভাসবে। ঘটনার কথা দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।” |
|
—নিজস্ব চিত্র। |
শুক্রবার সকালে দক্ষিণ পাটকাপাড়া গ্রামের বালাবাড়ি এলাকায় গিয়ে দেখা যায় নদীর ভয়ঙ্কর তাণ্ডব দেখে আতঙ্কিত এলাকার কয়েকশো মহিলা পুরুষ নদী পাড়ে ভিড় করেছেন। নদী গ্রামে ঢুকতে আর কতটা বাকি সেটাই তাঁরা বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। স্থানীয় বাসিন্দা মজিবর মিয়াঁ বলেন, “এ বারই প্রথম নয়। প্রতি বছর নদী ভাঙছে। ঘর অন্যত্র সরিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছি। এ বার পরিস্থিতি দেখে ভাল ঠেকছে না।” ভিটেমাটি রক্ষার আবেদন নিয়ে এলাকার বাসিন্দারা বিডিও অফিস থেকে সেচ দফতর কোথায় যাননি। কিন্তু কাজ হয়নি। তাঁদের অভিযোগ, প্রতি বছর শীতের মরশুমে এলাকায় বাঁধ তৈরির আশ্বাস দেওয়া হয়। কিন্তু তার পরে আর কেউ ফিরেও তাকায় না। স্থানীয় বাসিন্দা মোনোয়ারা বিবি, তুলি রায়, বসন্ত রায়রা জানান, বালাবাড়ি এলাকায় যেখানে ভাঙন শুরু হয়েছে সেখানে প্রায় ৭০টি থেকে ৭৫টি বাড়ি আছে। বাঁধ ভেঙে গ্রামে জল ঢোকার আশঙ্কায় ছোট ছেলেমেয়েরা রাতে ঘুমোতে পারছে না। বুধবার থেকে নদীর জলের তোড়ে বাঁধের বড় অংশ ভেঙে গিয়েছে। জলে ভেসেছে কয়েকটি গাছ। যে ভাবে নদীর জল বাড়ছে দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে বালাবাড়ি, বালুচর খালপাড়া সহ বিস্তীর্ণ এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। |
|
|
|
|
|