এক বছর পর ফের বাঁকুড়ার আকাশের উড়ল সবুজ আবির। যাঁরা ওড়ালেন, তাঁদের প্রত্যাশা মতোই তৃণমূল প্রার্থী মিনতি মিশ্র বাঁকুড়া বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। ১৪ হাজার ১৩৯টি ভোটের ব্যবধানে তিনি সিপিএম প্রার্থী নীলাঞ্জন দাশগুপ্তকে হারিয়েছেন।
আবির ওড়ানোর কারণ শুধু এটাই নয়। গতবারের (২০১১-এর বিধানসভা নির্বাচন) তুলনায় এ বার ভোটদান ১৩ শতাংশ কম হওয়া সত্বেও এই কেন্দ্রে তৃণমূলের ভোট ব্যাঙ্ক অটুট রাখাও (গতবার তৃণমূল পেয়েছিল ৫৩.৯২ শতাংশ, এ বার তাঁদের প্রাপ্তি ৪৯.৬৬ শতাংশ) তাঁদের উল্লাসের অন্যতম কারণ। |
এই কেন্দ্রের পাঁচবারের বিধায়ক প্রয়াত কাশীনাথ মিশ্রের স্ত্রী মিনতিদেবী ভোটে দাঁড়ানোয় সহানুভূতির ভোট যে তাঁর পালে আসবে, তৃণমূল শিবির তা নিয়ে নিশ্চিন্ত ছিল। কিন্ত ভোটদান (৬৭.৩৬ শতাংশ) এ বার কম হওয়ায় গতবারের ব্যবধান বজায় রাখা, দলের ভোটব্যাঙ্ক অটুট থাকল কি না এই বিষয়গুলি নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব কিছুটা হলেও উদ্বেগে ছিলেন। বাঁকুড়া জিলা স্কুলের ভোট গণনা কেন্দ্রের বাইরে সকালে চার্চমোড়ের দিকে ভিড় জমান তৃণমূল নেতা-কর্মীরা আর স্কুলডাঙার সিপিএম পার্টি অফিসের কাছে জমায়েত করেন সিপিএম নেতা-কর্মীরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই পরিষ্কার হয়ে যায়, স্বামীর আসনই পেতে চলেছেন মিনতিদেবী। দুপুর প্রায় ১২টা নাগাদ ঘোষণা হয়, মিনতিদেবীর প্রাপ্তি ৭২ হাজার ৯৫৪ ও নীলাঞ্জনবাবুর প্রাপ্তি ৫৮ হাজার ৮১৫ ভোট। উল্লাসে ফেটে পড়ে তৃণমূল শিবির। অন্যপক্ষ হাঁটা লাগান পার্টি অফিসের দিকে। আকাশে উড়তে শুরু হয় সবুজ আবির। আবিরের মধ্যেই মিছিলে পা মেলান মিনতিদেবী। সঙ্গে ছিলেন জেলা সভাপতি অরূপ খাঁ, কার্যকরী সভাপতি অরূপ চক্রবর্তী, বাঁকুড়ার পুরপ্রধান শম্পা দরিপারা। গত বছর কাশীবাবু ৯২ হাজার ৮৩৫টি ভোট পেয়ে ২৯ হাজার ৯০টি ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন। এ বার ব্যবধান কমেছে। |
মিনতিদেবী বলেন, “গরমের জন্য ভোটদান কমলেও তৃণমূল ও কাশীবাবুর প্রতি বাঁকুড়ার মানুষের ভালবাসা অখণ্ড রয়েছে। তাঁর কাজ শেষ করাই আমার লক্ষ্য।” তৃণমূল নেতৃত্বও বলছেন, “কাশীবাবুর জনপ্রিয়তা যে কী, এত কম ভোটদানেও আমাদের ভোট ব্যাঙ্ক অটুট থাকায়, তা প্রমাণিত।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক অমিয় পাত্রের কটাক্ষ, “তৃণমূলের ৪ শতাংশের বেশি ভোট কমায় প্রমাণিত হয়ে গেল, যে ওদের উপর থেকে মানুষের আস্থা কমে যাচ্ছে।” সিপিএম প্রার্থী নীলাঞ্জনবাবুও বলেন, “আমরা গতবারের তুলনায় ৩ শতাংশ বেশি ভোট পেয়েছি। ভবিষ্যতে ফের বামফ্রন্টই এ রাজ্যে আসছে।” এরই মধ্যে ৭ শতাংশ ভোট পেয়েছেন বিজেপি প্রার্থী মণীষা দে (চট্টোপাধ্যায়)। তাঁর আশা, “বিজেপি-র জনভিত্তি বাড়ছে। শীঘ্রই এ রাজ্যে আমরা বিরোধী দল হিসেবে উঠে আসব।” |