|
নাটক সমালোচনা... |
|
নাটকীয় সাফল্যে ‘অন্ত আদি অন্ত’ |
নান্দীকারের নতুন প্রযোজনায়। লিখছেন মনসিজ মজুমদার |
নান্দীকারের নতুন প্রযোজনা ‘অন্ত আদি অন্ত’ (পরিচালনায় দেবশঙ্কর হালদার) সদ্য বিবাহবিচ্ছিন্ন এক দম্পতির বিবাহিত সম্পর্কের শেষ থেকে শুরু হয়ে চূড়ান্ত বিচ্ছেদে পৌঁছানোর নাটক। (মূল ফরাসি নাটক মাগরিৎ দ্যুরার ‘লা মুজিকা’। অনুবাদ ও রূপান্তর: রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত।) আইনত বিচ্ছেদ ঘটে গেলেও সম্পর্কের সংঘাত, আবেগের টানা-পোড়েন আর সদ্য নিহত দাম্পত্যের শব ব্যবচ্ছেদ ঘটে এক শৈল শহরের হোটেলে হঠাৎ দেখা দুই প্রাক্তন স্বামী স্ত্রীর মধ্যে সংলাপের ঘাত-প্রতিঘাতে। রাগে, ঘৃণায়, বিচ্ছেদ-জ্বালায় আহত পুরুষ। অস্মিতার তীব্র অনুভবে অস্থির স্বামী মৃন্ময় (দেবশঙ্কর)। বিচ্ছেদে আপাত নিশ্চিন্ত হলেও বিবাহ বহির্ভূত দেহ-সম্পর্কের স্মৃতি ও স্বীকৃতিতে ‘কুটিল জটিল গহনে শান্তিসুখহীন’ স্ত্রী অনিন্দিতা (সোহিনী সেনগুপ্ত)। দু’জনের বিচ্ছেদ-উত্তর সংঘাতেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে তাদের বিবাহিত সম্পর্কের বিচ্ছেদ ছিল অনিবার্য পরিণতি। |
|
পুরোমাত্রায় সংলাপ নির্ভর প্রযোজনা। কিন্তু অভিনয়ের গুণে গড়ে ওঠে পর পর কতগুলি তীব্র টেনশনের নাটকীয় মুহূর্ত। সেই সব মুহূর্তের টানটান অভিঘাত নাটককে প্রত্যাশিত পরিণতির দিকেই এগিয়ে নিয়ে যায়। তবু দর্শকমনে এক ভিন্নতর পরিণতির ক্ষীণ প্রত্যাশা জাগিয়ে রাখতে পারাই এই প্রযোজনার অন্যতম নাটকীয় সাফল্য। স্বাতীলেখার আবহসঙ্গীত আর রুদ্রপ্রসাদের ব্যারিটোন কণ্ঠে নেপথ্যে গাওয়া রবীন্দ্রসঙ্গীত এই নাটকের সম্পদ। সংলাপ, সংঘাত আর নিষ্প্রেম সম্পর্কের নিরবচ্ছিন্ন অসহ্য উত্তাপ এক প্রতীকী তাৎপর্যে প্রতিফলিত হয় হোটেলঘরের চুল্লির গনগনে লাল আগুনে। অতি অভিনয়ের ঝোঁক থাকলেও দেবশঙ্করের মৃন্ময় বদমেজাজি স্বামীর আদর্শ প্রতিকৃতি। অনেক বেশি জটিল চরিত্রের সার্থক রূপায়ণ সোহিনীর অনিন্দিতা। |
|