রোদ চড়তেই নিঝুম শহরে প্রাণ ফিরছে সাঁঝে
বেলা বাড়লেই আশপাশ ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। ট্রেন থেকে নেমে রিকশা পাচ্ছেন না যাত্রীরা। রিকশাভ্যান বা যন্ত্রচালিত ভ্যানের দেখা পর্যন্ত মিলছে না কখনও কখনও। বাস স্ট্যান্ড খাঁ খাঁ করছে। কোথাও বাস চললেও দুপুরে তাতে যাত্রীর সংখ্যা নিতান্তই কম। গত কয়েক দিনে দু’এক পশলা বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিতে নদিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে অস্বস্তিই কেবল বেড়েছে। সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনেও অবস্থার তেমন কোনও পরিবর্তন ঘটেনি।
নদিয়া জেলা রিকশা ও ভ্যানচালক ইউনিয়নের জেলা সভাপতি গৌর দাস বলেন, “গরমে সব থেকে বেশি কষ্ট তো রিকশাচালক, ভ্যানচালকদেরই। এই রোদে তাঁদের কাজ করতে হচ্ছে। কিন্তু অসুস্থ হয়ে পড়লেও অভাবের তাড়নায় ভাল করে চিকিৎসা না করিয়েই ফের ওই শরীরেই আবার পথে নামতে হচ্ছে।” কৃষ্ণনগর শহরের রিকশাচালক রতন মণ্ডল বলেন, “যাত্রীরা সামান্য বেশি টাকা ভাড়া দিতে চান না। আমরাও চাই না। কিন্তু এই সময়ে সামান্য ভাড়া বাড়লে ভাল হত।” শহরের মানুষের অবশ্য অভিজ্ঞতা হল, দুপুরে রিকশা পাওয়াই যাচ্ছে না। সকালে আর সন্ধ্যায় অবশ্য রিকশা মিলছে।
দুপুর রোদে ট্রাফিক পুলিশের ভরসা ওআরএস। নিজস্ব চিত্র।
নিত্যযাত্রী রমেশ চৌধুরী বলেন, “ভোরের ট্রেনে ভিড় বাড়ছে। কিন্তু বিকেলে ফিরতে প্রচণ্ড কষ্ট হচ্ছে।” যাঁরা নিয়মিত যন্ত্রচালিত ভ্যানে যাতায়াত করেন, তাঁদের সমস্যা আরও বেশি। বাস কমে গিয়েছে। নদিয়া জেলা বাস মালিক সমিতির কার্যকরী সমিতির সদস্য অসীম দত্ত বলেন, “বেলা দশটার পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাসে যাত্রী থাকছেন না বললেই চলে। বাসকর্মীরাও ওই সময়ে বাস চালাতে রাজি হচ্ছেন না। অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। বাধ্য হয়েই অনেক রুটেই বাস কমে গিয়েছে।” এমনকী বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের বেথুয়াডহরী শাখার সম্পাদক অংশুমান দে বলেন, “দশটা’র পর থেকে বাজার এলাকা ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। দোকান খোলা থাকলেও খদ্দের নেই।”
তবে বৈদ্যুতিন সরঞ্জামের দোকানে পাখার চাহিদা তুঙ্গে। নবদ্বীপের এক ব্যবসায়ী রাজীব পোদ্দার বলেন, “টেবিল ফ্যানের চাহিদা সব থেকে বেশি। কিন্তু তার জোগান কম।” আর এক ব্যবসায়ী চঞ্চল সাহার কথায়, “এয়ার কুলার, বাতানুকূল যন্ত্রের চাহিদাও চড়চড় করে বেড়েছে। একই সঙ্গে রেফ্রিজারেটর বিক্রিও বেড়েছে।” কিন্তু তার দাম তো যথেষ্ট। ব্যবসায়ী রঞ্জন সাহার কথায়, “অনেক সংস্থাই এখন কিস্তিতে দামি বাতানুকূল যন্ত্র দিচ্ছেন না। কিন্তু মানুষ অনেক সময় ক্রেডিট কার্ডে কিনছেন। ব্যাঙ্ককে কিস্তিতে দাম শোধ করছেন। কোনও কোনও দোকানও কিস্তিতে বিক্রি করছে দামি জিনিসপত্র।” বিক্রি বেড়েছে টুপি, রোদচশমা, ছাতারও। ব্যবসায়ী সুজয় দাসের কথায়, “পঞ্চাশ থেকে দেড়শো টাকা দামের রোদ চশমা বিক্রি হচ্ছে হু হু করে। হাজার দেড় হাজার টাকার দামি ব্রান্ডের চশমাও বিক্রি হচ্ছে যথেষ্ট।”
সন্ধ্যায় অবশ্য পরিস্থিতির আমুল পরিবর্তন ঘটে যাচ্ছে। রাস্তায় লোকজন বাড়ছে। দোকানে বিক্রিবাটাও হচ্ছে প্রধানত সেই সময়ে। যার যা কাজ যেন জমিয়ে রাখছেন সন্ধ্যার জন্যই।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.