ভারতে লগ্নিকারী সংস্থার স্বার্থ রক্ষা করতে উদ্যোগ রাশিয়ার |
রেটিং সংস্থা এসঅ্যান্ডপি যে দিন ভারতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ঝুঁকি বাড়ার কথা জানাল, সে দিনই এ দেশে তাদের লগ্নিকারী সংস্থাগুলির স্বার্থ রক্ষা করতে সরাসরি রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ করল রাশিয়া। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে লাইসেন্স হারানো টেলি সংস্থা সিস্টেমার মতো ভারতে লগ্নিকারী রাশিয়ার সংস্থাগুলির স্বার্থ রক্ষা করতে নতুন সংসদীয় কমিটি গঠন করল রাশিয়ার সরকার। ভারতের লগ্নির পরিবেশ নিয়ে ইতিমধ্যেই বিদেশি সংস্থাগুলির মধ্যে আশঙ্কার সঞ্চার হয়েছে। নরওয়েও তাদের টেলি সংস্থা টেলিনরের স্বার্থ রক্ষার জন্য আবেদন করেছে। এই অবস্থায় সংসদের নিম্ন কক্ষের অধীনে গঠিত এই সংসদীয় কমিটির কাজই হবে ভারতে লগ্নিকারী রাশিয়ার সংস্থা সিস্টেমা বা জেএসসি কামাজ-এর মতো সংস্থাগুলির স্বার্থ রক্ষা করা হচ্ছে কিনা, তা নিশ্চিত করা। সে জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি নেওয়ার কথাও জানিয়েছে তারা। বৈদেশিক বাণিজ্য চুক্তি রক্ষা করা হচ্ছে কিনা, তা নিশ্চিত করবে এই কমিটি। পাশাপাশি, রাশিয়ার সংস্থাগুলি ভারত থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিলে যাতে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পায়, তার দিকেও নজর রাখবে তারা। সুপ্রিম কোর্ট ১২২টি টু-জি লাইসেন্স বাতিলের নির্দেশ দেওয়ার পরই, এই নির্দেশ ফিরে দেখতে আবেদন জানিয়েছিল সিস্টেমা। ভারতের শ্যাম গোষ্ঠীর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে যারা এমটিএস ব্র্যান্ড নামে টেলি পরিষেবা দিয়ে থাকে। তাদের দাবি ছিল, এ দেশে ২৫০ কোটি ডলারেরও বেশি অর্থ লগ্নি করেছে তারা। যার মধ্যে ২০০৮ সালে টু-জি লাইসেন্স পেতে খরচ করেছে ৬৩ কোটি ডলার। যৌথ উদ্যোগ সংস্থা এসএসটিএল-এ সিস্টেমার অংশীদারি ৫৬.৬৮% আর রাশিয়ার সরকারের ১৭.১৪%। বাকি শেয়ারের ২৩.৯৮% রয়েছে শ্যাম গোষ্ঠীর এবং ২.২% বাজারে হাতে। এই অবস্থায় আগামী স্পেকট্রাম নিলামের পর ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হলে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে বলে দাবি করেছে রাশিয়ার সংস্থাটি। অন্য দিকে, ভারতের ভেকট্রা গোষ্ঠীর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ট্রাক তৈরির কারখানা গড়লেও, শ্রমিক অষন্তোষের জেরে ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কামাজের।
|
স্পেকট্রাম নিলামে পুরানো সংস্থাগুলির সীমা বেঁধে দিল কেন্দ্র |
অগস্টের টু-জি লাইসেন্স নিলামে ৫ মেগাহার্ৎজ স্পেকট্রামের স্লটে ১.২৫ মেগাহার্ৎজের একটি ব্লকে অংশ নিতে পারবে পুরনো (২০০৮-এর আগে বাজারে আসা) সংস্থাগুলি। সেখানে নতুন সংস্থাগুলি পারবে এই রকম তিনটি ব্লকের নিলামের ক্ষেত্রে। তাদের ন্যূনতম দু’টির জন্য আবেদন করতে হবে। সোমবার এমনই ইঙ্গিত মিলেছে টেলিকম মন্ত্রকের এক সূত্রে। প্রসঙ্গত, নতুন সংস্থাগুলি আগেই পুরনোদের নিলামে অংশ নিতে না দেওয়ার জন্য আবেদন করেছিল কেন্দ্রের কাছে। আটটি ভাগে ১০ মেগাহার্ৎজ স্পেকট্রাম নিলাম করার সঙ্গেই অতিরিক্ত ৩.৭৫ মেগাহার্ৎজ স্পেকট্রাম নিলামের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। ওই ১০ মেগাহার্ৎজ যাতে পুরোপুরি নিলামের মাধ্যমেই বিক্রি হয়, তা নিশ্চিত করতেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে ওই সূত্র। দেশে ১৩.৭৫ মেগাহার্ৎজ স্পেকট্রাম রয়েছে, এমন মোট ১১টি সাকের্ল রয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় টেলিকম দফতর (ডট)। সংশ্লিষ্ট সূত্রে ইঙ্গিত, নতুন কোনও সংস্থা টেলি পরিষেবা ব্যবসা শুরু করতে চাইলে, তাকে ন্যূনতম ৫ মেগাহার্ৎজ স্পেকট্রাম কিনতে হবে। এরই পাশাপাশি, আগামী দিনে যে যে স্পেকট্রাম নিলাম করা হবে, তার পুরোটাই সংস্থাগুলি ইচ্ছেমতো ব্যবহার করতে পারবে। অর্থাৎ, লাইসেন্স অনুযায়ী, কোনও সংস্থা নিজেদের ইচ্ছেমতো যে কোনও প্রযুক্তি ব্যবহার করে, যে কোনও ফ্রিকোয়েন্সিতে, যে কোনও পরিষেবা দিতে পারবে বলেও সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে ওই সূত্র। |
মে মাসে সামান্য বাড়ল গাড়ি বিক্রি |
পেট্রোলের দাম বৃদ্ধি এবং চড়া সুদের জেরে আরও এক বার ধাক্কা খেল দেশের গাড়ি শিল্প। গাড়ি তৈরি সংস্থাগুলির সংগঠন সোসাইটি অফ ইন্ডিয়ান অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারার্স (সিয়াম) জানিয়েছে, গত মে মাসে দেশের বাজারে গাড়ি বিক্রির হার বেড়েছে মাত্র ২.৭৮%। এই সময়ে সারা দেশে মোট ১,৬৩,২২৯টি গাড়ি বিক্রি হয়েছে। ২০১১ সালে এই সংখ্যাটা ছিল ১,৫৮,৮০৯টি। গত অক্টোবরের পর থেকে এই প্রথম এত কম হারে বাড়ল বিক্রি। ওই মাসে বিক্রি কমেছিল ২৩.৭৭%। সিয়ামের ডিরেক্টর জেনারেল বিষ্ণু মাথুর জানান, বাজারে সুদ কমার আশা থাকলেও, তা হয়নি। যার প্রভাব পড়েছে গাড়ি শিল্পে। পাশাপাশি, পেট্রোলের মূল্যবৃদ্ধির জেরেও ক্রেতাদের আস্থা অর্জন করা যায়নি। বাজেটে উৎপাদন শুল্ক বাড়ার কারণে দাম বেড়েছে বেশির ভাগ সংস্থারই। ফলে সামগ্রিক ভাবে এই মুহূর্তে গাড়ি কেনা থেকে বিরত থাকাই পছন্দ করছেন ক্রেতারা। পেট্রোলের দাম বাড়ায় ডিজেল গাড়ির চাহিদা বেড়েছিল বাজারে। কিন্তু এ বার ডিজেল গাড়ির উপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপার আশঙ্কায় বড় গাড়ির ক্ষেত্রে সেই চাহিদাতেও ভাটার টান বলে জানান মাথুর। তাঁর দাবি, এই অবস্থায় যদি কেন্দ্র শুল্ক চাপানোর ব্যাপারে অনড় থাকে, তা হলে সামগ্রিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এই শিল্পই। তবে এ সবের মধ্যেই আশার আলো দেখা গিয়েছে রফতানি বাজারের ক্ষেত্রে। ইউরোপীয় বাজারে চাহিদা কমলেও, হুন্ডাই, নিসান এবং টয়োটার মতো সংস্থাগুলির হাত ধরে অন্যান্য দেশের বাজারে মে মাসে রফতানি বেড়েছে ৩৪.১৬%। |