লগ্নি নিয়ে আশঙ্কা মূল্যায়ন সংস্থার মন্তব্যে
বিদেশি লগ্নিকারীদের কাছে এ বার অচ্ছুত হওয়ার আশঙ্কার মুখে ভারত। এ দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে কাঠগড়ায় তুলে স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওর্স (এসঅ্যান্ডপি) জানিয়ে দিল, শিকেয় ওঠা সংস্কার আর কেন্দ্রের নীতিপঙ্গুত্বই এমন খাদের ধারে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে ভারতীয় অর্থনীতিকে। শেষ পর্যন্ত ‘ব্রাত্য’ তকমা সত্যিই গায়ে লাগলে, ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত এবং চিন মিলিয়ে তৈরি ‘ব্রিক’ গোষ্ঠীর মধ্যে প্রথম এই সঙ্কটে পড়বে ভারতই।
এই মার্কিন মূল্যায়ন সংস্থার পূর্বাভাসেই গত অগস্টে নড়ে গিয়েছিল আমেরিকার শেয়ার বাজার। ভারতের ক্ষেত্রেও এই হুঁশিয়ারি প্রথম দিনই সংশয়ে ফেলে দিয়েছে এ দেশের বাজারকে। তবে প্রত্যাশিত ভাবেই এই পূর্বাভাস উড়িয়ে দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়।
নীতি নির্ধারকদের দ্বিধাগ্রস্ততাই যে ভারতকে এমন সঙ্কটে ঠেলে দিয়েছে, সোমবারের বিবৃতিতে তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছে সংস্থাটি। তাদের মতে, পায়ে পায়ে বাধা হয়ে দাঁড়ানো শরিক বা অসহযোগী বিরোধীরা নয়। সংস্কার থমকে যাওয়ার প্রধান কারণ কেন্দ্রের শীর্ষ নেতৃত্বের ব্যর্থতা।
শুধু তা-ই নয়। মার্কিন সংস্থাটির দাবি, “সংস্কার থমকে যাওয়ার অন্যতম কারণ সনিয়া গাঁধী এবং মনমোহন সিংহের মধ্যে দায়িত্বের ভাগ-বাটোয়ারা। এক জন মন্ত্রিসভায় না-থেকেও বিপুল ক্ষমতার অধিকারী। অন্য জন প্রধানমন্ত্রী কিন্তু জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি নন। ফলে তাঁর রাজনৈতিক ভিত্তি যথেষ্ট দুর্বল।” মনমোহনের দিকে সরাসরি আঙুল তুলে তাদের অভিযোগ, দেখে মনে হয় মন্ত্রিসভার সহকর্মীদের উপর তাঁর নিয়ন্ত্রণ বেশ কম।
অর্থনীতি যে গতি হারাচ্ছে, বহু দিন ধরেই সেই অভিযোগ উঠছে মনমোহন সরকারের বিরুদ্ধে। মূলত এই কারণেই গত ২৫ এপ্রিল ভারতের ঋণ ফেরত দেওয়ার ঝুঁকি নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি (আউটলুক) স্থিতিশীল (স্টেব্ল) থেকে নেতিবাচক (নেগেটিভ)-এ নামিয়ে এনেছিল এসঅ্যান্ডপি। হুঁশিয়ারি দিয়েছিল, দ্রুত পরিস্থিতি না-বদলালে ক্রেডিট রেটিং কমানোর। এ দিন সেই হুঁশিয়ারিই আরও তীব্র করেছে তারা। জানিয়েছে, বর্তমানে ভারতের রেটিং বিবিবি(-)। যা লগ্নিযোগ্য রেটিংয়ের মধ্যে সব থেকে নীচে। তাই এরও নীচে নেমে যাওয়ার অর্থ লগ্নিযোগ্যতার তকমা খোয়ানো। অর্থাৎ তখন এ দেশের সরকারি বন্ডে লগ্নি করতেও দু’বার ভাববেন বিদেশি লগ্নিকারীরা।
কোনও দেশকে ঋণ দেওয়া কতটা ঝুঁকির, তারই মূল্যায়ন হল ক্রেডিট রেটিং। রেটিং যত ভাল, তাকে ঋণ দেওয়া তত কম ঝুঁকির। আর তা কমার মানে ঋণের অর্থ ফেরত না-পাওয়ার ঝুঁকি বাড়া। ঝুঁকি বাড়লে লগ্নির সম্ভাবনা কমার পাশাপাশি ঋণের জন্য আরও চড়া সুদ গুনতে হবে ভারতকে।
অর্থ মন্ত্রকের অবশ্য দাবি, অর্থনীতির মোড় ফেরাতে বেশ কিছু পদক্ষেপ করছে কেন্দ্র। আরও এক ধাপ এগিয়ে চলতি অর্থবর্ষকেই ঘুরে দাঁড়ানোর বছর বলে চিহ্নিত করেছেন অর্থমন্ত্রী। তবে অনেকেরই ধারণা, এই ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টাতেও বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে হুঁশিয়ারির জেরে জোলো হয়ে যাওয়া ভারতের ভাবমূর্তি। গত অর্থবর্ষ ও তার শেষ ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধি যথাক্রমে ৬.৫ এবং ৫.৩ শতাংশে নেমে যাওয়ার পর যা চাঙ্গা থাকা একান্ত জরুরি ছিল।
অবশ্য কেন্দ্রকে কিছুটা স্বস্তি দিয়ে এসঅ্যান্ডপি-ই জানিয়েছে, ভারত কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে গেলেও, পরিস্থিতি নয়ের দশকের মতো নয়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.