কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের এজলাসে সাঁইবাড়ি হত্যাকাণ্ডের তদন্তে গড়া কমিশন নিয়ে মামলা চললে কোনও সুবিচার পাওয়া যাবে না বলে একটি চিঠি এসেছিল। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জয়নারায়ণ পটেলকে লেখা সেই চিঠিতে আবেদন জানানো হয়, মামলাটি অন্য কোনও বিচারপতির এজলাসে পাঠিয়ে দেওয়া হোক। পুলিশের তদন্তে পত্রলেখিকার হদিস না-মেলায় উচ্চ আদালত সোমবার জানিয়ে দেয়, ভুয়ো চিঠির ওই আর্জি খারিজ করা হল। মামলাটি যে-এজলাসে চলছিল, সেখানেই চলবে।
১৯৭০ সালের ১৭ মার্চ বর্ধমানের সাঁইবাড়িতে প্রণবকুমার ও নবকুমার সাঁই এবং তাঁদের শিক্ষক জিতেন রায় খুন হন। অভিযোগ ওঠে, সিপিএমের মিছিল থেকেই লোকজন সাঁইবাড়িতে ঢুকে ওই হত্যাকাণ্ড চালায়। তা নিয়ে দীর্ঘদিন মামলা চলে। ওই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে তারাপদ মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে কমিশন গড়া হয়েছিল। সেই কমিশন রিপোর্টও জমা দেয়। বামফ্রন্ট ১৯৭৭ সালে ক্ষমতায় আসার পরে ৩২১ ধারায় মামলাটিই প্রত্যাহার করে নেয়। রাজ্যের নতুন সরকার সাঁইবাড়ি হত্যার তদন্তে বিচারপতি অরুণাভ বসুর নেতৃত্বে নয়া কমিশন গঠন করেছে। নতুন কমিশন স্থগিত রাখার আর্জি জানিয়ে রজত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অন্য কয়েক জন হাইকোর্টে মামলা করেন। সেই মামলারই শুনানি চলছে বিচারপতি দত্তের এজলাসে।
শুনানির মধ্যেই লীলাবতী সাঁই নামে এক মহিলার চিঠি পৌঁছয় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জয়নারায়ণ পটেলের কাছে। বিচারপতি দত্তের এজলাস থেকে মামলাটি অন্য কোনও এজলাসে সরিয়ে দেওয়ার আর্জি জানানো হয় তাতে। প্রধান বিচারপতি চিঠিটি বিচারপতি দত্তের কাছে পাঠিয়ে দেন। বিচারপতি দত্ত ওই চিঠি এবং তার লেখিকার ব্যাপারে তদন্ত করে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দেন রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে। তদন্ত চালিয়ে এ দিন হাইকোর্টে রিপোর্ট জমা দেন ডিজি। তিনি রিপোর্টে জানান, রাজ্য পুলিশ সবিস্তার তদন্ত করে দেখেছে, সাঁই পরিবারে লীলাবতী নামে কেউ নেই। ওই চিঠিটি কে লিখেছে, তাঁর কোনও সন্ধানও পায়নি পুলিশ। শুধু তা-ই নয়, সাঁই পরিবারের কেউই ওই মামলার শুনানি নিয়ে কোনও প্রশ্ন তোলেননি। চিঠিটি ভিত্তিহীন, ভুয়ো বলে জানানো হয় পুলিশের রিপোর্টে।
ডিজি-র ওই রিপোর্ট পাওয়ার পরে বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এ দিন জানিয়ে দেন, সাঁইবাড়ি হত্যাকাণ্ডের তদন্তে গড়া কমিশন নিয়ে দায়ের করা মামলাটি তাঁর এজলাসেই চলবে। |