|
|
|
|
প্রতিবাদে অবরোধ |
হামলার অভিযোগে ধৃত তৃণমূলের নেতা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কোচবিহার |
দলের নেতাকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে প্রায় ৩ ঘন্টা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা। বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় কোচবিহার কোতোয়ালি থানার আকরারহাট, টাপুরহাট ও সাত মাইল এলাকায় অবরোধ শুরু হয়। এতে কোচবিহার-মাথাভাঙা রাস্তায় যান চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে যায়। ভোগান্তি হয় বাসিন্দাদের। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত নেতার নাম বাসুদেব সরকার। তিনি কোচবিহারের ফলিমারি অঞ্চল তৃণমূলের কার্য্যকরী সভাপতি। শীতলখুচি থানার দুই নম্বর মাঘপালা এলাকায় সশস্ত্র হামলার অভিযোগে গত বুধবার রাতে পুলিশ বাসুদেববাবুকে গ্রেফতার করে। তাঁর বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে বাসুদেববাবুর অনুগামীরা রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন শুরু করেন। ফলিমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান শিশির ইশোর বলেন, “বাসুদেববাবুকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে। বাসিন্দারা তা মানতে পারেননি বলেই অবরোধ হয়েছে। আমিও এলাকার বাসিন্দা হিসাবে সাতমাইল ও আকরারহাটে অবরোধে ছিলাম।” গোটা ঘটনায় তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে। এলাকার নিয়ন্ত্রণের কর্তৃত্ব নিয়ে যাবতীয় গোলমালের সূত্রপাত বলেও বাসিন্দাদের অভিযোগ। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ফলিমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের লাগোয়া শীতলখুচি থানার দুই নম্বর মাঘপালা গ্রাম। ২৯মে রাতে ওই এলাকায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমাল হয়। বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুরের পাশাপাশি গুলিও চালানো হয় বলে অভিযোগ। শীতলখুচির কয়েকজন তৃণমূল নেতা ও ফলিমারির কয়েকজন তৃণমূল নেতার কর্তৃত্ব কায়েমের জেরেই ওই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। ওই ঘটনা নিয়ে বাসুদেববাবু সহ ৮ জনের বিরুদ্ধে ৩০ জুন শীতলখুচি থানায় অভিযোগ জানান এলাকার তৃণমূল নেতা সমর ভৌমিকেরা অনুগামীরা। ৩১ জুন সমরবাবুর অনুগামীদের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ জানান বাসুদেববাবুর ঘনিষ্ঠরা। দুটি অভিযোগের ভিত্তিতেই মামলা রুজু হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার প্রণব দাস বলেন, “দুই গোষ্ঠীর গোলমালের ব্যাপারে রুজু অভিযোগের ভিত্তিতে দুইটি মামলা করা হয়েছে। একজনকে ধরা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের ধরা হবে।” ধৃত নেতা প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল আহমেদের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। জলিলবাবু বলেন,“ সিপিএম থেকে দলে আসা শীতলখুচির সমর ভৌমিকের মত কিছু নেতা দলকে ব্যবহার করে এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিতে তৎপর। বাসুদেব ভাল ছেলে। ও এসবের প্রতিবাদ করায় ওঁকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে।” ফলিমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান শিশির ইশোরের অভিযোগ, সমরবাবু শীতলখুচি ব্লক তৃণমূল সভাপতি ও এলাকার বিধায়ক তথা বনমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ। এই ব্যাপারে বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন বলেন, “আমার ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠ বলে কেউ নেই। দলে আশ্রয় নিয়ে কেউ আইন হাতে নিতে পারে না। এলাকার আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে বিধায়ক হিসাবে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।” তৃণমূলের ব্লক সভাপতি আবেদ আলি মিয়াঁ বলেন, “দলের সক্রিয় কর্মী সমর ভাল ছেলে। এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফলিমারির কিছু লোকের সঙ্গে ঝামেলা হয়।” শীতলখুচির ভাওয়ের থানা অঞ্চল তৃণমূলের সদস্য সমর ভৌমিকের দাবি, “অসামাজিক কাজের বিরোধিতা করায় বাসুদেববাবুরা আমার বাড়ি সহ কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালিয়েছিল। বন মন্ত্রীকে তা জানিয়েছি।” অস্বস্তিতে কোচবিহার জেলা নেতৃত্ব। জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “সংশ্লিষ্ট ব্লক সভাপতিদের কাছে রিপোর্ট চেয়েছি। খোঁজখবর নিচ্ছি।” |
|
|
|
|
|