নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ সত্ত্বেও কর্মবিরতির পথ থেকে সরলেন না আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তাররা। বহু রোগীকে বিপাকে ফেলে, পরিষেবায় বিঘ্ন ঘটিয়ে বৃহস্পতিবার দিনভর কাজ করলেন না প্রায় শ’তিনেক জুনিয়র ডাক্তার।
এ ভাবে কথায় কথায় কর্মবিরতির পথে হাঁটা যে বরদাস্ত করা হবে না, তা এ দিন সকালেই স্পষ্ট করে দেন স্বাস্থ্যকর্তারা। স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানান, বিভিন্ন বিভাগের মেডিক্যাল অফিসার ও সিনিয়র ডাক্তারদের সাহায্যে পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা হচ্ছে। বহু চিকিৎসকের ছুটি বাতিল করে হাসপাতালে কাজে যোগ দেওয়ানো হয়েছে। তিনি বলেন, “জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি তুলে নিতে অনুরোধ জানিয়েছি। বলেছি, আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করা হবে, কাজ বন্ধ করে রোগীদের অসুবিধা ঘটানো চলবে না। অনুরোধে কাজ না হলে অন্য ব্যবস্থার কথা ভাবব।” তবে সেই ব্যবস্থাটা কী, তা এ দিন স্পষ্ট করতে চাননি তিনি।
ধর্মঘটী জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে জানানো হয়, রোগীমৃত্যুর ঘটনায় জুনিয়র ডাক্তারদের নিগ্রহ প্রায় রুটিনে পরিণত হয়েছে। নিরাপত্তার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ এর আগে একাধিক বার আশ্বাস দিলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। এ বার তাই আশ্বাসে ভুলবেন না বলে জানিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের বক্তব্য, অভিযুক্তদের জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতার করা না হলে তাঁরা কাজে যোগ দেবেন না।
আর জি করের ডেপুটি সুপার সিদ্ধার্থ নিয়োগী বলেন, “এ ভাবে প্রায় ৩০০ চিকিৎসক এক সঙ্গে কাজ না করলে পরিষেবা পুরোপুরি স্বাভাবিক রাখা যায় না। তবুও আমরা মিলিত ভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। মেডিক্যাল অফিসার ও সিনিয়র ডাক্তাররা বিভিন্ন ওয়ার্ডে ডিউটি করছেন। ইমার্জেন্সি পরিষেবাতেও যাতে ব্যাঘাত না ঘটে, সে ব্যাপারে চেষ্টা চলছে।”
কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার আশ্বাস দিলেও রোগীদের ভোগান্তির ছবিটা অন্য কথা বলছে। বারাসত থেকে হৃদ্রোগী বাবাকে নিয়ে এসেছিলেন চঞ্চল বসু। অভিযোগ, ইমার্জেন্সিতে ঢোকার পরেই কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে জানিয়ে দেন, ‘‘কর্মবিরতি চলছে, অন্য কোথাও নিয়ে যান।” ঝুঁকি না নিয়ে তাই স্থানীয় এক নার্সিংহোমে চলে যান তাঁরা।
একই অভিজ্ঞতা গাছ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর চোট পাওয়া অসীমা সর্দারের পরিজনদের। তাঁর মেয়ে তাপসী সর্দারের অভিযোগ, “মা যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন। কিন্তু হাসপাতালের গেটের কাছেই কয়েক জন অল্পবয়সী ডাক্তার বললেন অন্যত্র চলে যেতে। মায়ের প্লাস্টারটুকুও ওঁরা করাতে দেননি।” |