মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিকের বদলি আটকাতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বরস্থ হবেন হিমূলের কর্মীরা। সদ্য সমাপ্ত পুর নির্বাচনের আগেই দার্জিলিঙের অতিরিক্ত জেলাশাসক রজত সাইনির বদলির নির্দেশ জারি হয়। নির্বাচনী বিধির কারণে সেই নির্দেশ এখনও কার্যকর না-হলেও সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে ফের নির্দেশ জারি হবে বলে আশঙ্কা কর্মীদের। সেই কারণেই মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হতে চান তাঁরা। হিমূল এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের বক্তব্য, লোকসানে ধুঁকতে থাকা হিমূলতে মাত্র পাঁচ মাসেই লাভের মুখ দেখিয়েছেন মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক। এখনই তাঁকে বদলি করা হলে ফের মুখ থুবড়ে পড়বে হিমূল। সংগঠনের কার্যকরী সমিতির সদস্য সুবীর মুখোপাধ্যায় বলেন, “মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিককে শিলিগুড়িতে রাখার ব্যবস্থা করা হোক। প্রয়োজনে তাঁকে পুরোপুরি হিমূলের দায়িত্ব দেওয়া হোক। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর মাধ্যমে বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়ে হস্তক্ষেপ দাবি করা হবে।” এই ব্যাপারে অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি অতিরিক্ত জেলাশাসক। তিনি বলেন, “সরকারি চাকরিতে বদলি হবেই। সরকারি নির্দেশও মানতেই হবে। আমার বদলি হলে অন্য কেউ দায়িত্বে আসবেন। তিনিও নিশ্চয়ই আমার মতোই হিমূলের দিকে নজর রাখবেন। কর্মীরা কী বলছেন তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাই না।” অতিরিক্ত জেলাশাসক হিমূলের দায়িত্ব নেওয়ার আগেও প্রতি মাসে হিমূলের গড় লোকসান ছিল প্রায় ২২ লক্ষ টাকা। গত জানুয়ারি মাসে অতিরিক্ত জেলাশাসক হিমূলের দায়িত্ব নেওয়ার পরে দুধের জোগান যেমন বেড়েছে, তেমনই ঘি, লস্যি, পনির-সহ নানা সামগ্রী তৈরি ও বিক্রি শুরু হয়েছে। প্রতি মাসে কেবল ঘি, পনির, লস্যি বিক্রি করেই মাসে দেড় লক্ষ টাকা অতিরিক্ত আয় হচ্ছে। দুধের সরবরাহ ১২ হাজার লিটার থেকে বেড়ে ২৫ হাজার লিটারে পৌঁছেছে। পাশাপাশি, উৎপাদন ব্যয়ও কমেছে। তুষ জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করা যায় এমন বয়লার ব্যবহার হওয়ায় বিদ্যুতের ব্যয় কয়েক লক্ষ টাকা কমেছে। মহকুমা পরিষদ কর্তৃপক্ষ হিমুলের উৎপাদন কেন্দ্রের ভিতরে মেরামতির জন্য অর্থ বরাদ্দ করেছে। সময়ে দুধের দাম মেলায় দুগ্ধ সমবায়ের সংখ্যা বাড়ছে প্রতি মাসে। সুবীরবাবু বলেন, “গত পাঁচ মাসে হিমূল রুগ্ন সংস্থা থেকে লাভজনক সংস্থায় বদলে গেলেও কর্মীদের বকেয়া বেতন মেলেনি। তবুও আমরা মনে করি, হিমূলকে বাঁচাতে বর্তমান মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিককে অন্তত দু’বছর কাজের সুযোগ দেওয়া উচিত। এ জন্য যতদূর যেতে হয় যাব।” |