এক হোটেল মালিকের বিরুদ্ধে অবৈধ নির্মাণ এবং ভাড়াটেদের উচ্ছেদের অভিযোগকে কেন্দ্র করে কংগ্রেসের দুটি গোষ্ঠীর কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ির সেবক মোড় লাগোয়া ওই হোটেলের সামনে কংগ্রেসের একটি গোষ্ঠীর পাশে দেখা গিয়েছে স্থানীয় সিপিএম নেতা তথা কাউন্সিলর কমল অগ্রবালকে। সেখানে ছিলেন শিলিগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান তথা কংগ্রেস নেতা নান্টু পাল ও জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তথা কাউন্সিলর সুজয় ঘটকও। নান্টুবাবুর অভিযোগ, ওই হোটেলের মালিক বেআইনি নির্মাণ এবং ভাড়াটে উচ্ছেদের চেষ্টা করছেন। সিপিএম নেতা কমলবাবু ও কংগ্রেস কাউন্সিলর সুজয় ঘটক জানান, তাঁরা কাউকে উচ্ছেদের বিরোধী। পক্ষান্তরে, কংগ্রেস নেত্রী তথা মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত, বিল্ডিং বিভাগের মেয়র পারিষদ সীমা সাহা হোটেল মালিকের বিরুদ্ধে বেআইনি কাজের কোনও প্রমাণ মেলেনি বলে জানিয়েছেন। মেয়র বলেন, “চেয়ারম্যান ওখানে কেন গিয়েছেন তা বলতে পারব না। পুরসভার তরফে ওই হোটেল নিয়ে কিছু বলার নেই।’’ পাশাপাশি সীমা দেবী বলেন, “ওই হোটেলের বিরুদ্ধে বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ ঠিক নয়। আমরা সব খতিয়ে দেখেছি।” ওই হোটেলের মালিক কাজল সরকার, দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর মালাকারের আত্মীয় হন। কাজলবাবু জানান, অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ ঠিক নয়। |
তিনি বলেন, “আমি হোটেলটি কিনেছি। এখানে সাত জন ভাড়াটে রয়েছেন। কাউকে উচ্ছেদ করার চেষ্টা করিনি। ভাড়া বাড়ানোর কথা বলেছি। বিষয়টি নিয়ে আমি আলোচনায় বসতে রাজি। বার কয়েক বৈঠকের চেষ্টা করেও লাভ হয়নি। এখন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে।” দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্করবাবু ওই বিষয়ে মন্তব্য করবেন না বলে জানান। তবে কংগ্রেসের জেলা সভাপতির কয়েকজন অনুগামী জানান, আত্মীয় হলেও শঙ্করবাবু ওই হোটেলের ব্যাপারে কিছুই জানেন না। তাঁদের প্রশ্ন, কোনও শীর্ষ নেতার আত্মীয় হলে হোটেল কেনা যাবে না? হোটেল ভবনের একটি গুদাম ঘরে তালা ঝোলানোর অভিযোগ নিয়ে সেখানে যান নান্টুবাবু সহ তিন কাউন্সিলর। তা নিয়ে এলাকায় হইচই পড়ে যায়। হোটেল মালিককে সতর্ক করে কাউন্সিলররা ফিরে যান। এর পরেই হোটেল কর্মীদের একাংশ অভিযোগ তোলেন, যাঁদের উচ্ছেদের চেষ্টার অভিযোগ নিয়ে হইচই হচ্ছে তাঁদের একাংশ হোটেলটি কিনতে ব্যর্থ হয়েই নেতাদের একাংশকে সামনে রেখে আসরে নেমেছেন। তবে নান্টুবাবু, সুজয়বাবু ও কমলবাবু ওই কেনাবেচার বিষয়ে তাঁরা মাথা ঘামাতে রাজি নন। তাঁদের বক্তব্য, “আমরা নীতিগত ভাবে উচ্ছেদের বিরোধী। তাই পথে নেমেছি।” কমলবাবু তো প্রয়োজনে অনশনের হুমকি দিয়েছেন। ঘটনাচক্রে, ওই বাড়িটি যে সংস্থা একসময় কিনতে উদ্যোগী হয়, তার অন্যতম কর্ণধার সুশীল পেরিয়াল বলেন, “হোটেল কেনার জন্য অগ্রিম দেওয়া হয়েছিল। চুক্তিপত্র তৈরি হয়েছিল। চুক্তি ভঙ্গ করে হোটেল হস্তান্তর হয়েছে।” হোটেলের পুরনো মালিকদের অন্যতম হরবংশ প্রসাদ সিংহ বলেন, “হোটেল আমরা বিক্রি করিনি। লিজে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিজেদের পরিবারের ব্যাপার। বেশি কিছু বলতে চাই না।” |