অতিরিক্ত ক্লাস-রুমের বরাদ্দ খরচ না-হলে ফেরতের নির্দেশ
তিরিক্ত ক্লাস-রুমের জন্য আগে বরাদ্দ অর্থ খরচ করতে না পারায় গত বছর এই খাতে আর টাকা পায়নি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা। মাওবাদী প্রভাবিত, ‘পিছিয়ে পড়া’ এই জেলার জন্য অনেক ক্ষেত্রেই বাড়তি বরাদ্দ মিললেও ওই একটি ক্ষেত্রে প্রাপ্য পায়নি জেলা। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, অতিরিক্ত ক্লাস-রুমের দাবি জানিয়ে টাকা নিয়ে নিয়েছে বহু স্কুল। কিন্তু তা খরচ করতে পারেনি। এই কারণেই সর্বশিক্ষা অভিযানের প্রাপ্য থেকে (প্রায় ২০ কোটি টাকা) বঞ্চিত হতে হয়েছিল। তাই, এ বার জেলা-প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্কুলগুলিকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, টাকা খরচ করতে না-পারলে ফেরত নিয়ে নেওয়া হবে।
পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত বলেন, “ছাত্র-স্বার্থে অতিরিক্ত ক্লাস-রুমের জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়। সেই অর্থ ফেলে রাখা মানে ছাত্রছাত্রীদের বঞ্চিত করা। তা মেনে নেওয়া হবে না। দীর্ঘ দিন টাকা পড়ে রয়েছে দেখলেই টাকা ফেরত নিয়ে নেওয়া হবে। পরিবর্তে অন্য আগ্রহী স্কুলকে তা দেওয়া হবে।” এই হুমকিতে অবশ্য কাজও হচ্ছে। সর্বশিক্ষার জেলা প্রকল্প আধিকারিক শাশ্বতী দাস বলেন, “অনেক স্কুলই টাকা নিয়ে দীর্ঘ দিন ফেলে রেখেছিল। খরচের হিসাবও দেয়নি। এ বার টাকা ফেরত নেওয়ার কথা বলায় দ্রুততার সঙ্গেই কাজ শুরু হয়েছে।”
২০০৫-০৬ আর্থিক বছর থেকে ২০১০-১১ সাল পর্যন্ত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা ৪৬৬৯টি অতিরিক্ত ক্লাস-রুম তৈরির জন্য ৯৩ কোটি ৫১ লক্ষ টাকা পেয়েছিল। সেই টাকা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্কুলকে দেওয়া হয়। চলতি বছরের মার্চ-এপ্রিল মাসে হিসাব নিতে গিয়ে প্রশাসনিক কর্তাদের ভিরমি খাওয়ার অবস্থা হয়। ওই সময় পর্যন্ত খরচ হয়েছে মাত্রই ৭৫ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা। প্রায় ১৮ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা খরচই হয়নি! ৪৬৬৯টি ক্লাস-রুমের মধ্যে মাত্র ৩ হাজার ৭৬৮টি ক্লাস-রুম তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। ৬৭৬টি ক্লাস-রুম তৈরির কাজ চলছে। ২২৫টি ক্লাস-রুম তৈরি শুরু-ই হয়নি! গত বছর এই সংখ্যাটা ছিল আরও খারাপ। তাই এই খাতে কোনও অর্থই পায়নি জেলা। এই হাল কেন? সর্বশিক্ষার জেলা প্রকল্প আধিকারিক বলেন, “স্কুলগুলি অতিরিক্ত ক্লাস-রুমের বরাদ্দ অর্থ নেওয়ার জন্য যে ভাবে দৌড়ঝাঁপ করে, কাজ করার জন্য তার এক শতাংশও উৎসাহ দেখা যায় না। তার ফলেই এই সমস্যা।” এই কারণেই খরচ না হলে টাকা ফেরতের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু এ ক্ষেত্রেও একটি প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। একটি স্কুলে অতিরিক্ত ক্লাস-রুমের কতটা প্রয়োজন, তা দেখেই অর্থ বরাদ্দ করার কথা। যে সব স্কুলে অতিরিক্ত ক্লাস-রুম জরুরি, সেই স্কুলকেই আগে টাকা দেওয়া দরকার। কিন্তু শুধু আবেদন ও তদ্বিরের ভিত্তিতে বরাদ্দ হলে প্রয়োজনের তারতম্য আর বিবেচনায় থাকে না। প্রশাসনিক ব্যাখ্যা, আগে প্রয়োজনের বিষয়টি খতিয়ে দেখার সুযোগ কম ছিল। পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি বা ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতাদের হস্তক্ষেপেই স্কুল টাকা পেয়ে যেত। ইদানীং পরিস্থিতি কিছুটা বদলেছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
জঙ্গলমহলের রোহিনী, সাঁকরাইল এলাকাতেই অতিরিক্ত ক্লাস-রুমের কাজ সব চেয়ে কম হয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর। রিপোর্ট বলছে, সাঁকরাইলের ৫৩টি স্কুলকে ৫৩টি নতুন ক্লাস-রুমের জন্য অর্থ দেওয়া হয়েছিল। একটিরও কাজ শুরু হয়নি। আর রোহিনীর ৬৪টি স্কুলকে ৬৬টি অতিরিক্ত ক্লাস-রুম তৈরির অর্থ দেওয়া হয়। তার মধ্যে ৩০টির কাজ শেষ হলেও ৩৪টি ক্লাসরুম তৈরির কাজ শুরুই হয়নি। ২টি ক্লাসরুম তৈরির কাজ চলছে। এখন থেকে নজরদারি বাড়ানোর কথাই বলছে প্রশাসন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.