মেদিনীপুরে বৈঠকে অতিরিক্ত মুখ্যসচিব
পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের বকেয়া কাজ চলতি বছরেই শেষের নির্দেশ
তি বেড়েছে, তবে তা আশানুরূপ নয়। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের কাজের গতিপ্রকৃতি নিয়ে বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে এক বৈঠক করেন পর্ষদের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত মুখ্যসচিব অসিতবরণ চক্রবর্তী। পর্যালোচনা করতে গিয়ে দেখা যায়, প্রত্যেক এজেন্সি মোটের উপর ৫০ শতাংশ কাজ শেষ করতে পেরেছে। যেমন, পঞ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের বরাদ্দ অর্থে গত বছর পশ্চিম মেদিনীপুরে সব মিলিয়ে প্রায় ৫০০টি নলকূপ তৈরির কথা ছিল। কিন্তু কাজ হয়েছে ২৫০টির। কিছু কাজের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিয়েছে। ব্লক ভিত্তিক রিপোর্ট দেখে বৈঠকে বকেয়া কাজ দ্রুত শেষ করার উপরই জোর দেওয়া হয়। জানানো হয়, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে বকেয়া কাজ শেষ করতে হবে। কেন এই পরিস্থিতি? পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নমন্ত্রী সুকুমার হাঁসদা বলেন, “সব কাজ সময়ের মধ্যে শেষ করার চেষ্টা চলছে। এ জন্য নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে।”
বৃহস্পতিবার দুপুরে মেদিনীপুর সার্কিট হাউসে বৈঠক করেন অতিরিক্ত মুখ্যসচিব। ছিলেন পর্ষদের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক তন্ময় মিত্র, জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত, জেলা পরিকল্পনা ও উন্নয়ন আধিকারিক প্রণব ঘোষ প্রমুখ। ছিলেন পঞ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের আওতাধীন এলাকার এসডিও এবং বিডিওরা। আজ, শুক্রবার ঝাড়গ্রামেও বৈঠক করবেন অতিরিক্ত মুখ্যসচিব। পর্ষদের বরাদ্দ অর্থে বেলপাহাড়ি, লালগড়, নয়াগ্রাম প্রভৃতি এলাকায় কী কী কাজ চলছে, এ ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখতেই বৈঠক হবে।
—নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের ‘পিছিয়ে পড়া’ ৭৪টি ব্লক এলাকায় উন্নয়নমূলক কাজকর্মের জন্যই পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ গঠিত হয়েছে। এর মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুরের ১৮টি ব্লক রয়েছে। জানা গিয়েছে, ২০১১-’১২ আর্থিক বছরে এ জেলার জন্য পর্ষদ থেকে সব মিলিয়ে ৪২ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। বরাদ্দ অর্থের একাংশ এখনও পড়ে রয়েছে। পরিকল্পনা মতো কাজ এগোনো সম্ভব হয়নি। পরিস্থিতি কী ভাবে কাটিয়ে ওঠা যাবে, তা নিয়েই এ দিন আলোচনা হয়। সংশ্লিষ্ট সকল এজেন্সিকে এ ক্ষেত্রে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
আগে থেকে পর্ষদের বরাদ্দ যে অর্থ পড়েছিল, সেই অর্থ গত এক বছরে সে ভাবে খরচই হয়নি। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, বরাদ্দ অর্থে যে সব প্রকল্পের কাজ হওয়ার কথা, সেগুলোর কোনটা মাঝপথে থমকে গিয়েছে, কোনটা শুরু করাই সম্ভব হয়নি। মূলত, জঙ্গলমহল এলাকার ব্লকগুলোতে বেশি পরিমাণ অর্থ পড়ে রয়েছে। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের বরাদ্দ অর্থে এক সময়ে এখানে সেচের কাজ শুরু হয়েছিল। কাজ শুরুর ক্ষেত্রে সমস্যা ছিল না। কিন্তু মাওবাদী- সমস্যার জন্য অধিকাংশ ঠিকাদার সংস্থার মাঝপথে কাজ ছেড়ে দেয়। জানিয়ে দেয়, তাদের পক্ষে আর এই এলাকায় কাজ করা সম্ভব নয়। এখন মাওবাদী- সমস্যা না- থাকলেও সেই সব কাজ এগোতে সমস্যা হচ্ছে। পড়ে থাকা অর্থের পরিমান প্রায় ২ কোটি ৬৭ লক্ষ ৬৩ হাজার টাকা। বৈঠকে এ নিয়েও আলোচনা হয়। জানানো হয়, সংশ্লিষ্ট কাজ শেষ করার জন্য ব্লক স্তরেই পরিকল্পনা করতে হবে। সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের ‘তৎপর’ হতে হবে। প্রয়োজনে কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার সঙ্গে নতুন করে কথা বলতে হবে। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, গত ১০ মে মেদিনীপুরে এই বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। পরে বৈঠক স্থগিত রাখা হয়। ঠিক হয়, ৭ জুন বৈঠক হবে। সেই মতই এদিন মেদিনীপুরে এসে বৈঠক করেন অতিরিক্ত মুখ্যসচিব।
পশ্চিম মেদিনীপুরের যে ১৮টি ব্লক পর্ষদের আওতাধীন, তারমধ্যে রয়েছে ঝাড়গ্রাম মহকুমার ৮ টি ব্লক। মেদিনীপুর মহকুমার ৬টি ব্লক এবং খড়্গপুর মহকুমার ৪টি ব্লক। পর্ষদ সূত্রে খবর, ‘মাওবাদী অধ্যুষিত’ বলে পরিচিত ব্লকগুলোর জন্য চলতি আর্থিক বছরে ২ কোটি টাকা করে বরাদ্দ করা হতে চলেছে। বাকি ব্লকগুলোর জন্য ১ কোটি টাকা করে বরাদ্দ করা হবে। সঙ্গে জেলার জন্য আরও ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হবে। বরাদ্দ অর্থে কী কী কাজ হতে পারে, সে জন্য একটি খসড়া পরিকল্পনাও তৈরি করা হয়েছে। বৈঠক শেষে পর্ষদের এক আধিকারিক বলেন,“ কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখতেই এই বৈঠক। এসডিও, বিডিওদের সঙ্গে কথা হয়েছে। এজেন্সিগুলোর আধিকারিকদের সঙ্গে কথা হয়েছে। বকেয়া কাজের ক্ষেত্রে ক্লোজ সুপারভিশন করতে বলা হয়েছে। মোটের উপর কাজের অগ্রগতি সন্তোষনজক। তবে বেশ কিছু ক্ষেত্রে আরও গতি আনা প্রয়োজন।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.