প্রতিবেশী দেশে গা ঢাকা দিয়ে নেই কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশন (কেএলও) নেতা জীবন সিংহ। বরং আত্মসমর্পণ ও শান্তি আলোচনার বার্তা পাঠিয়েও পশ্চিমবঙ্গ-অসম সীমায় ঘাঁটি গেড়ে একের পর এক অপহরণ করাচ্ছেন তিনি। অসম কৃষি বিভাগের সুপারইন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার গদাপাণি পাঠকের হত্যা ও সহকারী কার্যনির্বাহী ইঞ্জিনিয়ার ফইজুর রহমানের অপহরণকাণ্ডের তদন্ত চালাতে গিয়ে এই কথা জানতে পেরেছে অসম সিআইডি।
গত ২ মে সরকারি কাজ সেরে ফেরার পথে, বঙ্গাইগাঁওয়ের বইঠামারি-বরখাতা এলাকায় গদাপাণি পাঠক ও ফইজুর
|
জীবন সিংহ
—নিজস্ব চিত্র |
রহমানের গাড়ি থামায় অপহরণকারীরা। চালককে টেনে নামিয়ে ওই গাড়ি নিয়েই অপহরণকারীরা চম্পট দেয়। দু’দিন পরে অপহরণস্থলের অদূরে গদাপাণি পাঠকের গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ মেলে। এর পর বিস্তর সন্ধান চালিয়েও পুলিশ ফইজুর রহমানকে উদ্ধার করতে পারেনি। সিআইডি সূত্রে খবর, ফইজুরের স্ত্রী ও মেয়ে মুক্তিপণ বাবদ ৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে তাঁকে ছাড়িয়ে আনেন। ২৭ মে ফইজুর রহমান বাড়ি ফেরেন। টাকা দেওয়ার কথা অবশ্য প্রকাশ্যে স্বীকার করা হয়নি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গাড়ি চালক নূরকেও পুলিশ আটক করে। নূর ও ফইজুর রহমানকে টানা জেরা করে সিআইডি নিশ্চিত হয়, ঘটনার পিছনে কেএলও-র হাত রয়েছে। দু’জনের কাছ থেকে অপহরণকারীদের বর্ণনা শুনে কলকাতার শিল্পী, দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিয়ে পাঁচ জনের ছবি আঁকানো হয়েছে। তদন্তকারীরা আরও জানান, টাকা দিতে যাওয়ার সময় ফইজুরের কন্যা মোবাইলে অপহরণকারীদের ছবি তোলার চেষ্টা করেন। সেই ছবি দিয়েও জঙ্গিদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।
পাশাপাশি, কেএলও প্রধান জীবন সিংহের ছবি দেখে ফইজুর রহমান জানান, যে ঘাঁটিতে রহমানকে রাখা হয়েছিল সেখানে একাধিক বার ওই ব্যক্তি এসেছেন। নিজেকে দলের কম্যান্ডার বলেই পরিচয় দিয়ে ফইজুরের সঙ্গে তিনি কথাও বলেন। গত বছর নভেম্বর মাসে শান্তি আলোচনা ও অস্ত্র সমর্পণের জন্য বার্তা পাঠান জীবন সিংহ। এর আগে, মাওবাদী নেতা কিষেণজিকে কোকরাঝাড়ে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগও উঠেছিল জীবন সিংহের কেএলও-র বিরুদ্ধে। তদন্তকারীদের ধারণা, বঙ্গাইগাঁও বা বক্সিরহাটে ফইজুরকে রাখা হয়েছিল। টাকা দেওয়া হয় বক্সিরহাটের কাছে। তদন্তে নির্দিষ্ট সূত্র দিতে পারলে, অসম পুলিশের তরফে ১ লক্ষ টাকার পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। |