দলীয় নেতাদের সামনে ‘ঐক্যবদ্ধ’ হয়ে ভোটে লড়ার প্রতিশ্রতি দিলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী সমবায় ঋণদান সমিতির ভোট নিয়ে দ্বন্দ্ব অব্যাহত তৃণমূলের দুই সংগঠনে।
আজ, শুক্রবার ওই সমবায়ের ভোট। মোট আসন ৩৯টি। এই ভোটে প্রার্থী দেওয়া নিয়ে তৃণমূলের দুই কর্মী সংগঠন ‘বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাবন্ধু সমিতি’ ও ‘বর্ধমান ইউনিভার্সিটি কর্মচারী সমিতি’র মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয় বেশ কিছু দিন আগে থেকেই। দু’পক্ষই নিজেদের পছন্দ মতো আসনে প্রার্থী দিয়ে দেয়। এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আটকাতে সক্রিয় হন তৃণমূলের উচ্চ নেতৃত্ব। গত ৪ জুন রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক, কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়-সহ দলের চার বিধায়ক বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের গেস্ট হাউসে দুই গোষ্ঠীর সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে ঠিক হয়, ‘বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাবন্ধু সমিতি’ ও ‘বর্ধমান ইউনিভার্সিটি কর্মচারী সমিতি’ যথাক্রমে ১৯ ও ২০টি আসনে ভোটে লড়বে।
আগেই মনোনয়ন জমা পড়ে যাওয়ায় ভোটে প্রতিটি আসনে দু’তরফের প্রার্থীদেরই নাম ব্যালটে থাকবে। কিন্তু বৈঠকে ঠিক হয়, নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্দিষ্ট আসনে নির্দিষ্ট প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য দুই সংগঠনের কর্মী-সমর্থকদের অনুরোধ করা হবে। দুই সংগঠনের নেতা যথাক্রমে সীতারাম মুখোপাধ্যায় ও শৈলকুমার ঘোষ বলেন, “আমরা ঐক্যবদ্ধ ভাবেই ভোটে লড়ব।” বৈঠকের পরে দুই সংগঠন তাঁদের নির্বাচনী ফ্লেক্স থেকে কয়েক জন প্রার্থীর নামও মুছে দেয়।
কিন্তু বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হলেও বাস্তবে তা কার্যকর হয়নি বলে দাবি দু’পক্ষের কর্মীদেরই। মঙ্গলবার তৃণমূলের দুই কর্মচারী সংগঠন আলাদা ভাবে মিছিল করে। দুই সংগঠনেরই অভিযোগ, অপর পক্ষের নেতারা তাদের মিছিলে যোগ দেননি। বৃহস্পতিবার, নির্বাচনের ঠিক আগের দিন সীতারামবাবুর অনুগামী সাধন দত্ত ও বাসুদেব সিংহরায়ের দাবি, “ওই গোষ্ঠীর সঙ্গে সমঝোতা করতে গিয়ে আমাদের যে সব প্রার্থীদের সরে যেতে হয়েছে, তাঁরা অসন্তুষ্ট। ৫ জুনের পরে তাঁদের প্রচারেও নামানো যায়নি।” শৈলবাবুর অনুগামী হিসেবে পরিচিত আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয় তারাবাগের আবাসনের মিছিলে আমরা যখন যৌথ ভাবে হাঁটছিলাম, তখন সীতারামবাবুর অনুগামীরা মিছিলে হাঁটতে-হাঁটতে জানিয়েছেন, তাঁরা নিজেদের প্রার্থী ছাড়া কাউকে ভোট দেবেন না। সে ভাবে ভোট হলে তো বামপন্থীরাই সমবায়ে জিতে যাবেন।” সীতারামবাবু ও শৈলবাবু, দু’জনেরই অবশ্য দাবি, এই খবর ঠিক নয়।
বামপন্থী কর্মচারী সংগঠনের নেতা বুদ্ধদেব চক্রবর্তী, আকাশ চট্টোপাধ্যায়েরা আবার বলেন, “তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী জোট করুক বা না করুক, আমাদের কিছু আসে-যায় না। সুষ্ঠু ভোট হলে আমরা বিপুল ব্যবধানে জিতব।” |