দুর্গাপুরে বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা মাইনিং অ্যান্ড অ্যালায়েড মেশিনারি কর্পোরেশন (এমএএমসি) কারখানায় ঢুকছে-বেরোচ্ছে চোরের দল। এই পরিস্থিতিতে সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী সিআইএসএফ-কে পাহারায় ফেরাতে তাঁরা উদ্যোগী হয়েছেন বলে জানালেন রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার কাঁকসায় একটি সেরামিক টাইলস কারখানার উদ্বোধনে এসে পার্থবাবু বলেন, “সিআইএসএফকে যাতে ফের এমএএমসি-র নিরাপত্তার কাজে ব্যবহার করা যায়, কারখানা খোলার দায়িত্বপ্রাপ্ত তিন সংস্থা শীঘ্রই সে ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি দেবে। সেই চিঠির প্রতিলিপি আমাদের দেবে। রাজ্য সরকারের তরফেও মুখ্যসচিবের মাধ্যমে চেষ্টা চালানো হবে।”
দীর্ঘদিন ধরে টালবাহানার পরে গত ৩০ মে পাহারার দায়িত্ব থেকে সরে গিয়েছে সিআইএসএফ। এখন সন্ধ্যা নামতেই চোরেরা কারখানার যন্ত্রাংশ চুরি শুরু হয়ে যাচ্ছে। মাঝে-মধ্যেই চোর ঢোকার খবর পেয়ে কারখানার সামনে চলে আসছেন শ্রমিক নেতারা। পুলিশকে খবর দিচ্ছেন। তবু বিশাল কারখানা চত্বরের অন্য দিক দিয়ে ঢুকে পুলিশি নজরদারি এড়িয়ে চোরেরা কাজ হাসিল করছে। |
গত ৩ জুন পুর নির্বাচন নিয়ে পুলিশ ব্যস্ত থাকায় রাত পর্যন্ত কার্যত অরক্ষিত ছিল কারখানা। সেই সুযোগে লোহাচোরেরা বেশ কিছু মূল্যবান যন্ত্রপাতি সরিয়ে ফেলে।
সিআইএসএফ উঠে যাওয়ার পরে একই ভাবে সমস্ত যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে গিয়েছিল আর এক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ভারত অপথ্যালমিক গ্লাস লিমিটেডেরও। কিন্তু এমএএমসি ফের খোলার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ২০০২ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া ওই কারখানা খোলার দায়িত্ব পেয়েছে ভারত আর্থ মুভার্স লিমিটেড (বিইএমএল), কোল ইন্ডিয়া লিমিটেড (সিআইএল) এবং দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের (ডিভিসি) কনসোর্টিয়াম। ২০১০ সালের ১৮ অগস্ট তারা লিক্যুইডেটরের থেকে কারখানার দায়িত্বও বুঝে নিয়েছে।
পুরভোটের পরের দিন থেকেই অবশ্য বিশেষ পুলিশি প্রহরার ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। ১৫ জন পুলিশকর্মীকে সর্বক্ষণের জন্য রাখা হয়েছে। চলছে টহলও। তবে এত সামান্য পুলিশ দিয়ে যে এত বড় কারখানার চুরি যে আটকানো সম্ভব নয়, তা স্বীকার করছেন পুলিশের কর্তারাই। কিন্তু কারখানা চত্বরে সিআইএসএফের জন্য যে ব্যারাক রয়েছে, তা কার্যত থাকার অনুপযুক্ত এবং কনসোর্টিয়াম সেগুলি সংস্কারে উদ্যোগী হয়নি, এমনই অভিযোগ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের। এ দিন শিল্পমন্ত্রী জানান, সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। যে ৪৩টি আবাসনে সিআইএসএফ জওয়ানেরা থাকতেন, সেগুলির সংস্কার করার খরচ তিন সংস্থা ভাগ করে নেবে। তবে কাজের দায়িত্বে থাকছে কোল ইন্ডিয়া। মন্ত্রী বলেন, “আশা করি, খুব দ্রুত বিষয়টি মিটে যাবে।” |