দু’দশক পড়ে মানসিক ওয়ার্ড |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রায়গঞ্জ |
উত্তর দিনাজপুর জেলা গঠনের দু’দশক পরেও রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে মানসিক ওয়ার্ড তৈরির কাজ শেষ না হওয়ায় বিভিন্ন মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। চিকিৎসা পরিকাঠামো গড়ে না ওঠায় প্রতিদিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন হাসপাতালে রোগী রেফার করতে বাধ্য হচ্ছেন। ওই পরিস্থিতিতে গরিব পরিবারের লোকজন চিকিৎসার জন্য বাইরের হাসপাতালে যেতে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন। সমস্যার কথা অস্বীকার করেননি গ্রন্থাগার মন্ত্রী তথা রোগী কল্যাণ কমিটির চেয়ারম্যান আবদুল করিম চৌধুরী। তিনি বলেন, নির্মীয়মাণ মানসিক ওয়ার্ড তৈরির কাজ শেষ করতে কত টাকার প্রয়োজন সেটা খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আর্থিক সমস্যা জন্য মানসিক ওয়ার্ড তৈরির কাজ থমকে আছে। |
ওই কারণে মানসিক রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে বাইরের হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হচ্ছে। ওয়ার্ডের কাজ শেষ করার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা চাওয়া হয়েছে।” হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৬ সালে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর হাসপাতাল চত্বরে মানসিক ওয়ার্ড তৈরির কাজ শুরু করে। প্রায় দেড় বছর পরে টাকার অভাবে পূর্ত দফতর কাজ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়। ইতিমধ্যে প্রায় ১২ লক্ষ টাকার কাজ হয়েছে। সেই থেকে নির্মীয়মাণ অবস্থায় ওয়ার্ডটি পড়ে আছে। জানালা ও দেওয়ালের ইট চুরি হয়েছে। এছাড়াও সেখানে রাতে দুষ্কৃতীরা জুয়া ও মদের আসর বসাচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে জেলা হাসপাতালে মানসিক রোগীদের চিকিৎসা বলতে বহির্বিভাগে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে ওষুধ লিখে দেন। সমস্যা জটিল দেখলে রোগীকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বাইরের হাসপাতালে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিমাসে ওই হাসপাতাল থেকে ১৫ জনেরও বেশি মানসিক রোগীকে রেফার করা হয়। উত্তর দিনাজপুর সহ দক্ষিণ দিনাজপুর ও বিহারের রোগীরা সেখানে চিকিৎসার জন্য যান। সিপিএমের রায়গঞ্জ লোকাল কমিটির সম্পাদক নীলকমল সাহা বলেন, “টাকার অভাবে অনেক মানসিক রোগীর বাড়ির লোকজন বাইরের হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসার কথা ভাবতে পারে না। তাঁদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে। ২০১২ সালের মধ্যে মানসিক ওয়ার্ড তৈরির কাজ শেষ করার দাবি জানিয়ে সম্প্রতি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। দাবিপূরণ না হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান আন্দোলন শুরু হবে।” যদিও রায়গঞ্জ লোকসভা যুব কংগ্রেস কমিটির সহ সভাপতি তুষারকান্তি গুহ অভিযোগ করেন, বামফ্রন্ট সরকারের গাফিলতি এবং নতুন সরকারের উদাসীনতায় মানসিক ওয়ার্ড তৈরির কাজ শেষ হচ্ছে না। অবিলম্বে কাজ শেষ না হলে সংগঠনের তরফে রোগীর বাড়ির লোকজনকে নিয়ে আন্দোলনের হুমকি দেওয়া হয়েছে। |