প্রতিশ্রুতি মতো জমি ফেরত দেওয়া না-হলে অবরোধ, অনশন আন্দোলনে নামার হুমকি দিলেন তৃণমূলের পশ্চিমবঙ্গ কৃষি জমি জীবন ও জীবিকা রক্ষা কমিটির ভূমিহারারা। তাঁদের অভিযোগ, বিধানসভা নির্বাচনের আগে জমি ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে শিলিগুড়ির তৃণমূল নেত্রী জ্যোৎস্না অগ্রবাল-সহ অন্যান্যরা তাঁদের নির্বাচনের কাজে ব্যবহার করেছিলেন। এখন ক্ষমতা হাতে পেয়ে ওই নেতারা তাঁদের ভুলে গিয়েছেন। জমি ফেরত দেওয়ার কোনও প্রক্রিয়া শুরু করা হচ্ছে না। পক্ষান্তরে, এসজেডিএ-র পক্ষ থেকে তাঁদের ‘বাম সমর্থক’ বলে কর্মীদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। কমিটির জলপাইগুড়ি ও দার্জিলিং জেলা শাখার সভাপতি কুড়ানু দেবসিংহ বলেন, “তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে এক বছর পেরিয়ে গেলেও আমাদের জন্য কিছু করা হয়নি। যাঁরা আমাদের সামনে রেখে নির্বাচন করলেন, এখন তাঁরাই আমাদের বাম সমর্থক বলে বিদ্রুপ করছেন। সাত দিন অপেক্ষা করব। তার মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া না-হলে মুখ্যমন্ত্রীকে সমস্ত ঘটনা জানানোর পাশাপাশি অবরোধ ও অনশন আন্দোলনে নামা হবে।” এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, কমিটির সদস্যদের সঙ্গে আগামী ২৩ জুন বৈঠকে বসার পরিকল্পনা হয়েছে। তিনি বলেন, “কমিটি কী অভিযোগ করেছে তা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না। কেননা, তর্কে কোনও সমস্যা মেটে না। এসজেডিএ আলোচনায় বসে সমস্যা মেটাতে চায়। ২৩ জুন সভা করে কমিটির বক্তব্য শোনা হবে।” তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে জ্যোৎস্না দেবী বলেন, “কুড়ানুবাবু কেন আমার বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিকর কথা বলছেন স্পষ্ট নয়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই তাঁদের সমস্যা মেটাতে মন্ত্রী গৌতম দেব উদ্যোগী হয়েছেন। ভূমিহারাদের তালিকাও মন্ত্রীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।” তাঁর পাল্টা অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গ কৃষি জমি জীবন ও জীবিকা রক্ষা কমিটির সভাপতি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। সম্পাদক পদে তিনি, দীপক শীল ছাড়াও মণিমোহন বিশ্বাস রয়েছেন। সেখানে কুড়ানু দেবসিংহ নিজেকে কেন সভাপতি হিসাবে দাবি করছেন সেটাও স্পষ্ট নয় জ্যোৎস্না দেবীর কাছে। কুড়ানুবাবুর দাবি, নেতাদের ব্যবহারে বিরক্ত হয়ে তাঁরা নতুন করে কমিটি গঠন করেছেন। কমিটির দাবি, তাঁদের সংগঠনে মোট ২৬০ জন ভূমিহারা রয়েছে। যদিও কাউকেই এখনও উচ্ছেদ করেনি এসজেডিএ। তাঁদের অভিযোগ, জমি ফেরতের বিষয়ে কোনও আলোচনা ছাড়াই সম্প্রতি কাওয়াখালি পোড়াঝাড়া এলাকায় এসজেডিএ-র উদ্যোগে সীমানার পাঁচিল দেওয়া হচ্ছে। দুটি হাসপাতালের নির্মাণ কাজও শুরু হয়েছে। ওই ঘটনায় তাঁরা উচ্ছেদের আশঙ্কা করছেন। যদিও সেই আশঙ্কার ভিত্তি কী সেটা স্পষ্ট করতে পারেননি ভূমিহারারা। এসজেডিএ চেয়ারম্যান কিন্তু দাবি করেছেন, “আমরা জবরদস্তির পক্ষে নই। আলোচনায় সমস্যা মেটাতে চাই। আন্দোলনকারীদের সেই পরামর্শই দেব।” কাওয়াখালি, পোড়াঝাড়, নিউ টাউনশিপ ল্যান্ডল্যুজার কমিটির তরফেও এসজেডিএতে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। |