সাসপেন্ড ৮ ব্যাঙ্ককর্মীকে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
গ্রাহকদের ফিক্সড ডিপোজিট (এফডি)-এর টাকা নিয়ে আত্মসাতের মামলায় আরও ৮ কর্মীকে সাসপেন্ড করলেন ইউকো ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। সোমবার জোনাল ম্যানেজার উমেশ সিংহ ওই কথা জানান। তিনি জানান, ব্যাঙ্কের বর্ধমান রোড শাখায় গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ নিয়ে ওই শাখার ১৪ কর্মীর মধ্যে ৫ জন গ্রেফতার হয়েছেন। তাঁদের আগেই সাসপেন্ড করা হয়েছে। এদিন বাকি ৯ জনের মধ্যে ৮ জনকে সাসপেন্ড করা হয়। এক জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মীকে শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোড শাখায় বদলি করা হয়েছে। জোনাল ম্যানেজার বলেন, “ব্যাঙ্কের তরফ থেকে পুরো ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। কোথা থেকে টাকা তোলা হয়েছে, সেগুলি কী ভাবে কাকে দেওয়া হয়েছে সমস্ত বিষয় নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। পুরো রিপোর্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।” ফিক্সড ডিপোজিটের জন্য গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে রসিদ, সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ব্যাঙ্কে টাকা জমা পড়েনি। মেয়াদ শেষে টাকা তুলতে না পেরে গত বৃহস্পতিবার ব্যাঙ্কে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রাহকরা। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে ফিক্সড ডিপোজিটে ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকার হিসেব পাওয়া যাচ্ছে না। ওই দিনই পুলিশ ব্যাঙ্কের চার জন স্থায়ী কর্মী সঞ্জয় বসু, আনন্দমোহন রায়, আদিত্য পাঠক, কল্যাণ সরকার এবং অস্থায়ী কর্মী চন্দন মণ্ডলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে বেশ কিছু তথ্য হাতে পেয়েছে পুলিশ। শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রাজা বলেন, “ওই ঘটনার তদন্ত চলছে। কিছু তথ্য আমরা পেয়েছি। সে সব খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” এদিকে, এদিনও এক ব্যক্তি এফডি সার্টিফিকেট নিয়ে ব্যাঙ্কে যান। তার নামেও ব্যাঙ্কে কোনও টাকা নেই। তাঁকে নিয়ে ৮০ জন গ্রাহক প্রতারিত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এদের মধ্যে কয়েকজনে আর্থিক সঙ্কটে দিন কাটাচ্ছেন। ৩১ নম্বর তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কৌশিক দত্ত বলেন, “ওই ব্যাঙ্ক কর্মীরা বহু মানুষকে প্রতারিত করেছেন। এখনও অনেকে আমাদের কাছে আসছেন। একজনের অ্যাকাউন্ট থেকে তিন লক্ষ টাকা অন্য অকাউন্টে বেআইনি ভাবে পাঠানো হয়েছে। অনেকেই জমি, বাড়ির বিক্রির টাকা রেখে তা থেকে সুদ তুলে সংসার চালাচ্ছিলেন। এখন তাও বন্ধ হয়ে আছে। অনেকে টাকার জন্য চিকিৎসা করাতে পারছেন না। আমরা ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কাছে গ্রাহকদের টাকা মেটাতে আর্জি জানিয়েছি। দেখা যাক কি হয়।” ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানান, জলপাইগুড়ি ও শিলিগুড়ি থেকে কর্মীদের নিয়ে গিয়ে তারা ব্যাঙ্কের বর্ধমান রোড শাখার কাজ চালু রেখেছেন। সেখানে ব্যাঙ্কের তরফে একটি তদন্তকারী দলও রয়েছে। তারা পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। জোনাল ম্যানেজার বলেন, “আমরা অভিযোগকারীদের তালিকা তৈরি করছি। কত টাকা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে তা দেখা হচ্ছে। সেই রিপোর্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে দেব। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবেন।” |