নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি |
আলিপুরদুয়ার মহকুমার ৬টি ব্লক নিয়েই নতুন জেলা গঠনের প্রস্তাব গৃহীত হল দ্বিতীয় দফার সর্বদলীয় বৈঠকে। সোমবার জলপাইগুড়ির জেলাশাসকের দফতরে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের উপস্থিতিতে সর্বদল বৈঠকের ওই সিদ্ধান্তে সহমত হন সব দলের প্রতিনিধিরা। ওই সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সীমানা নিয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলে নতুন জেলা গঠন করতে বিচারবিভাগ, জেলা পরিষদ, পুলিশ বিভাগের প্রশাসনিক বিন্যাস নিয়ে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। নতুন জেলার ব্লক ভাগ এবং মহকুমা গঠন নিয়েও সিদ্ধান্তের ভার রাজ্য সরকারের উপরেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এর আগে গত ১৭ মে সর্বদল বৈঠক হয় আলিপুরদুয়ারে। সেখানে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা সমর্থিত কালচিনির নির্দল বিধায়ক উইলসন চম্পামারি উপস্থিত ছিলেন। এদিন তিনি বৈঠকে ছিলেন না। পরে টেলিফোনে বিধায়ক বলেন, “শারীরিক অসুস্থতার জন্য যেতে পারিনি। নতুন জেলা গঠনকে আমরা সমর্থন করি। তবে আমরা তো আগেই জানিয়েছি জিটিএর সীমানা নিয়ে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটির রিপোর্ট পেশের পরেই নতুন জেলার সীমানা স্থির করা উচিত।” |
ঘটনাচক্রে, মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরিও প্রথম সর্বদল বৈঠকের পরে তড়িঘড়ি জেলা গঠনের সিদ্ধান্ত না-নেওয়ার ব্যাপারে রাজ্য সরকারের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন। দ্বিতীয় দপার বৈঠকের পরে অবশ্য মোর্চার তরফে জেলা গঠন নিয়ে কোনও আপত্তি করা হয়নি। মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেতা জানান, রাজ্য সরকারের সব দিক ভেবেই সিদ্ধান্ত নেবে বলে তাঁরা আশাবাদী। এদিন বৈঠকের পরে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “১৭ মের সর্বদল বৈঠক যেখানে শেষ হয়েছিল, এদিন সেখান থেকেই বৈঠক শুরু হয়। নতুন জেলার সীমানা নিয়ে সবাই একমত হয়েছেন। এবার এই প্রস্তাব রাজ্য সরকারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। নতুন জেলার স্বীকৃতি পেতে কত সময় প্রয়োজন তা নিয়ে অহেতুক এখনই জল্পনা করার প্রয়োজন নেই। রাজ্য সরকারের উদ্যোগেই নতুন জেলা গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রশাসন চালাতে রাজ্য সরকারের যা করণীয় সবই করবে।” উল্লেখ্য, আলিপুরদুয়ার মহকুমার ছটি ব্লক নিয়ে নতুন জেলা হতে গেলে বিধানসভার বিন্যাস অনুযায়ী জলপাইগুড়ি সদর মহকুমার ধূপগুড়ি ব্লকের সাকোয়াঝোড়া ১ এবং বিন্নাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতকে নতুন জেলার অর্ন্তভুক্ত হওয়ার প্রস্তাব ছিল। তা নিয়ে বির্তকও দানা বাঁধে। এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে সেখানকার বাসিন্দারা আন্দোলন শুরু করেন। এদিনও বৈঠক চলাকালীন জেলাশাসকের দফতরে বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখায়। যদিও বৈঠকে স্থির হয়েছে সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েত দুটি জলপাইগুড়ি জেলাতেই থাকবে। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ দিন বৈঠকে জলপাইগুড়ি জেলাশাসক স্মারকী মহাপাত্র, পুলিশ সুপার সুগত সেন-সহ অনান্য প্রশাসনিক আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। আলিপুরদুয়ারের কংগ্রেস বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায় বলেন, “বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে সেটাই সবচেয়ে যুক্তিযুক্ত। বেশি দেরি না করে জেলার সীমানা নির্ধারন নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এবার ব্লক ও মহকুমা গঠন রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। বৈঠকে জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহন বসু, প্রদেশ কংগ্রেসের সম্পাদক বিশ্বরঞ্জন সরকার সহ দলের অনান্য বিধায়ক ও নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন। সেখানে ছিলেন তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণী, যুব তৃণমূল নেতা সৌরভ চক্রবর্ত্তী, মৃদুল দেব, আরসিপিএমের জেলা সম্পাদক সুনীল বণিক, সিপিএমের জেলা সম্পাদক কৃষ্ণ বন্দোপাধ্যায়ও। জিয়াউর আলম জানান, বিজেপি-র বাপি গোস্বামী- সহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
|