একের পর এক অভিযান চালিয়ে সরকারের আয় বাড়িয়ে চলেছে রাজ্যের উপভোক্তা বিষয়ক বিভাগ। চলতি আর্থিক বছরে আয় হয়েছে প্রায় ১৪ কোটি টাকা। যা বাম আমলের চেয়ে ১৫% বেশি বলেই দাবি বিভাগীয় মন্ত্রী সাধন পাণ্ডের।
সাধনবাবু জানাচ্ছেন, ক্রেতা সুরক্ষায় বিভিন্ন বাজারে অসাধু ব্যবসায়ীদের ওজনে কারচুপি ধরে বা সোনার দোকানে হানা দিয়ে সোনার মান নিয়ে জালিয়াতি ধরে চলতি আর্থিক বছরে এই দফতর প্রায় ১৪ কোটি টাকা আয় করেছে। গত এক বছরে তাঁদের আয়ের পরিমাণ ওই একই সময়ের বিচারে বাম সরকারের আমলের তুলনায় ১৫ শতাংশ বেশি। ২০১০-১১ সালে ওই বিভাগের আয় হয়েছিল ১১ কোটি ৬৪ লক্ষ ৭৭ হাজার ৮২৪ টাকা। ২০১১-১২ সালে তা বেড়ে হয়েছে ১৩ কোটি ৪১ লক্ষ ৯৭৬ টাকা। সাধনবাবুর দফতরের এক আধিকারিক জানান, গত এপ্রিল মাসেই উপভোক্তা বিষয়ক দফতরের আয় হয়েছে ৭৮ লক্ষ ৩ হাজার ৭৩৩ টাকা। ওই একই সময়ে বাম আমলের তুলনায় এ বার প্রায় ২২ লক্ষ টাকা বেশি আয় হয়েছে।
সাধনবাবুর অভিযোগ, “বাম আমলে এই বিভাগে যা পরিকাঠামো দরকার ছিল তা করা হয়নি। আমাদের সরকার ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিভাগকে গুরুত্ব দেওয়ায় আমরা যেমন সাধারণ ক্রেতাদের আস্থা অর্জন করতে পেরেছি, তেমনই বিভাগের আয়ও বৃদ্ধি পেয়েছে।” সাধনবাবু জানান, বিভিন্ন সড়কে পণ্য পরিবহণের ওজন মাপার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার দু’টি ভ্রাম্যমান যান (ওয়েব্রিজ) দিয়েছিল বিগত বাম সরকারকে। কিন্তু তারা চালকের ব্যবস্থা করতে পারেনি। ফলে কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া ওই দু’টি গাড়ির একটি বর্ধমানের পানাগড়ে অন্যটি কলকাতার কাঁকুড়গাছিতে পড়ে রয়েছে। সাধনবাবুর কথায়, “আমি রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করেছি, ওই দু’টি যানের জন্য অবিলম্বে চালকের ব্যবস্থা করতে। তা হলে সড়কে অভিযান চালিয়ে আরও আয় বৃদ্ধি করতে পারব।” মন্ত্রীর ব্যাখ্যা, বহু সময়ে দেখা যায়, ওয়েব্রিজে পণ্য পরিবহণের মাপ এক রকম দেখিয়ে পরে তার চেয়ে বেশি পরিমাণ পণ্য পরিবহণ করা হয়। ভ্রাম্যমাণ ওয়েব্রিজের সাহায্যে ‘কারচুপি’ ধরা যাবে ও জরিমানা বাবদ সরকারের আয় হবে।
আপাতত সাধনবাবুর দফতরের লক্ষ্য, চলতি বছরের তুলনায় অন্তত ২ কোটি টাকা আয় বৃদ্ধি করা। তাই রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে নিয়মিত অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন সাধনবাবু। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্রেতা সুরক্ষার লক্ষ্যে গ্রাহককে সঠিক মাপে জিনিসপত্র বিক্রেতা দিচ্ছে কি না বা ক্রেতা যে জিনিস কিনছেন, তার মান সঠিক কি না, তা যাচাইয়ের জন্য বিভাগে ‘ইন্সপেক্টর’ বা পরিদর্শকের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। আপাতত দফতরে ১০৭ জন পরিদর্শক আছেন। আরও ৪০ জন নিয়োগ করার জন্য তাঁরা সরকারের কাছে আবেদন করেছেন। সাধনবাবুর কথায়, “বাজারে বাজারে বেশি অভিযান করতে চাই। দফতরের পরিকাঠামো আরও মজবুত করার চেষ্টা করছি।” |