চোর সন্দেহে তিন মহিলাকে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে মারধর করে চুল কেটে নেওয়ার ঘটনা ঘটল। পরে চুরির অভিযোগে ওই তিন জনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। সোমবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে জগদ্দল থানার কাউগাছি-২ পঞ্চায়েতের কমলপুরে। পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম রেশমা বিবি, সারেখা বিবি ও নাজিরা বিবি। বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার কাঁকিনাড়ায়।
ব্যারাকপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দা-প্রধান ভি সলোমন নেশাকুমার বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে ওই তিন জনকে ধরা হয়। অভিযুক্তদের মারধর করে চুল কেটে নেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। পাল্টা অভিযোগ পেলে আমরা পৃথক মামলা শুরু করতে পারি।” |
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, দুপুর ১২টা নাগাদ কমলপুরের একটি জামাকাপড়ের দোকানে ঢোকে সারেখা ও রেশমা। দোকানের মালিক শিপ্রা মুখোপাধ্যায় তখন দোকানে একা ছিলেন। শিপ্রাদেবী পুলিশকে জানান, দুই মহিলা শাড়ি এবং আরও কিছু পোশাক দেখতে চায়। দোকানের বাইরে তখন ব্যাগ হাতে দাঁড়িয়ে আরও এক মহিলা। বহু শাড়ি দেখালেও তা পছন্দ হয়নি সারেখা ও রেশমার। তারা আরও দামি কিছু শাড়ি দেখতে চাইলে দু’জনকে দোকানে বসিয়ে শিপ্রাদেবী সেগুলি আনতে দোকানের পিছনের গুদামে যান। কাউন্টারে তখন বেশ কিছু শাড়ি ও পোশাক ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল। মিনিট কয়েক বাদে আরও কিছু পোশাক নিয়ে এসে শিপ্রাদেবীর সন্দেহ হয়, কাউন্টারে পড়ে থাকা বেশ কিছু পোশাক উধাও। দোকানের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা নাজিরার হাতে ছিল একটি ব্যাগ। ফলে শিপ্রাদেবীর সন্দেহ গিয়ে পড়ে তার উপরে। সারেখা ও রেশমার কাছে শিপ্রাদেবী জানতে চান, নাজিরা তাদেরই সঙ্গী কি না। কিন্তু বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা ওই মহিলাকে তারা চেনে না বলে জানায় সারেখারা। শিপ্রাদেবীর দাবি, চিৎকার করতেই নাজিরা ‘সরে পড়ার’ চেষ্টা করে।
শিপ্রাদেবীর দোকানের উপরেই তাঁর বাড়ি। চিৎকার শুনে বাড়ির লোকজন বেরিয়ে আসেন। জুটে যায় আরও কিছু লোক। সকলের সন্দেহ হয়, তিন মহিলা যোগসাজস করেই পোশাক হাতিয়েছে। নাজিরাকে ধরে ফেলে জনতা। ধরা হয় রেশমা ও সারেখাকেও। এর পরে সকলকে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে শুরু হয় মারধর। পরে মাথার চুলও কেটে নেওয়া হয়। শিপ্রাদেবীর দাবি, নাজিরার ব্যাগ থেকে তাঁর দোকানের মালপত্র মেলে। শিপ্রাদেবী বলেন, “পথচারী ও পাড়ার লোকজন ওই তিন জনকে বেঁধে ফেলে। উত্তেজিত জনতাই তাঁদের মাথার চুল কেটে দেয়।” পুলিশ জানায়, ধৃতেরা স্বীকার করেছে তারা চুরির মতলবেই দোকানে ঢুকেছিল। |