|
|
|
|
প্রবল গরমে তীব্র জলসঙ্কট গোয়ালতোড়ে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গোয়ালতোড় |
তীব্র গরমে তীব্রতর হয়ে উঠেছে পানীয় জলের সঙ্কট। ঝাঁ-ঝাঁ রোদ উপেক্ষা করেই দীর্ঘ পথ হেঁটে জল আনতে যেতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। ছবিটা পশ্চিম মেদিনীপুরের লাল-কাঁকুরে মাটির এলাকা গোয়ালতোড়, গড়বেতার। বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রশাসনকে সব জানালেও সুরাহা হয়নি।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে খবর, শালের জঙ্গলে ঘেরা বাঁকুড়া জেলা-সংলগ্ন এই সব ব্লকে গরমে জলস্তর খুব নেমে যাওয়ায় পানীয় জলের তীব্র সমস্যা তৈরি হয়। কিন্তু এ বছর সমস্যা একটু বেশিই। প্রশাসনের তরফে আইএপি (ইন্টিগ্রেটেড অ্যাকশন প্ল্যান) কেন্দ্রীয় প্রকল্পে গোয়ালতোড়ে প্রায় ৩০টি নলকূপ ও সাতটি পাম্প বসানো হয়েছে। আরও দুটির কাজ চলছে। সেখানে পাইপলাইনের মাধ্যমে ট্যাপও বসানো হয়েছে। এ ছাড়া বন-দফতরও কিছু পানীয় জলের প্রকল্পের কাজ করেছে। কিন্তু বোরো এবং আলুর চাষে পাম্প চালিয়ে জল তোলায় এখন জলস্তর একেবারেই নেমে গিয়েছে। পাশাপাশি ঘন ঘন লোডশেডিং ও লো-ভোল্টেজের কারণে পাম্প থেকে জলও উঠছে না বললেই চলে। নলকূপের অবস্থাও তথৈবচ। ফলে গোয়ালতোড়ের পিংবনি, মাকলি, পাথরপাড়া, গোহালডাঙা, জিরাপাড়া এবং গড়বেতার সন্ধিপুর, কাদড়া, নোহারি, আমলাগোড়া, গড়ঙ্গা পঞ্চায়েতগুলিতে পানীয় জলের সমস্যা দেখা দিয়েছে। |
|
গোয়ালতোড়ে জলের লাইন। নিজস্ব চিত্র। |
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গোয়ালতোড় ব্লকের ওই সব পঞ্চায়েতের ধামচা, ডুমুরডিহা, বারিবোত, ছোট ধরমপুর, বাবলাপানি, চেনিয়া, বিরপাথরি, দোবাটি, মেটালা, বিশরবাঁধ, এরিয়ামারা-সহ প্রায় গোটা তিরিশেক গ্রামের অবস্থা খুব খারাপ। অন্য দিকে গড়বেতা ব্লকের দেওয়ান, শোভাগড়, যাদববাটি, বাঁশদা, মোহনপুর, ভেঙাদহ, লক্ষ্মণপুর, কুসুমডাঙা, নোহারি, আমকোপা-সহ বিভিন্ন গ্রামেও পানীয় জলের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। গোয়ালতোড়ের ধামচার খুকুমনি হেমব্রম, বারিবোতের সজল বারিক, বিশরবাঁধের মৌমিতা ঘোষেরা বলেন, “নলকূপ থেকে জল ঠিকমতো উঠছে না লো-ভোল্টেজের জন্য। স্যালো থেকেও সব সময়ে জল উঠে না। ফলে কখন জল উঠবে, চাতক পাখির মতো স্যালোর কাছে গিয়ে তাকিয়ে থাকতে হয়। এ ভাবেই চলছে।”
জল সঙ্কটের কথা স্বীকার করে নিয়ে গোয়ালতোড়ের বিডিও বিক্রম চট্রোপাধ্যায় বলেন, “প্রায় প্রতি দিনই বিভিন্ন পঞ্চায়েত থেকে লিখিত অভিযোগ পাচ্ছি। আপাতত নলকূপগুলিকে সংস্কার করে কিছুটা সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করছি। তবে তাতেও সমাধান হচ্ছে না। অনেক জায়গায় লো-ভোল্টেজ এবং জলস্তর নেমে যাওয়ায় সাব-মার্সিবেল পাম্পগুলি থেকেও পর্যাপ্ত জল উঠছে না। লাইন দিয়ে, কোথাও কোথাও গ্রাম থেকে কিছুটা দূরে গিয়েও জল আনতে হচ্ছে। বিষয়টি দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে।” গড়বেতা-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আদিত্য সাহা বলেন, “আমাদের ১০টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ৬টি পঞ্চায়েতের বিভিন্ন গ্রামে পানীয় জলের ব্যাপক সমস্যা দেখা দিয়েছে। প্রায় ৬০টির মতো নলকূপ খারাপ হয়ে গিয়েছে। জলস্তর নেমে যাওয়ায় অগভীর নলকূপ থেকেও সময়ে জল উঠছে না। চেষ্টা করছি, যাতে নলকূপ বসিয়ে কিছুটা সমাধান করা যায়।” |
|
|
|
|
|