পায়ের হাড় ভেঙে অসুস্থ হয়ে পড়া ডুয়ার্সের মরাঘাট লাগোয়া খুঁটিমারি জঙ্গলে দাঁতালের চিকিৎসা করলেন অসম থেকে আসা পশু বিশেষজ্ঞরা। সোমবার ভোরে তিন সদস্যের ওই দলটি দাঁতালটিকে ঘুমপাড়ানি গুলিতে অচেতন করার পরে পরীক্ষা করে দেখেন। দেওয়া হয় অ্যান্টিবায়োটিক। |
পায়ে গুলি লেগে দাঁতালটি জখম হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে সন্দেহ করা হলেও এ দিন বিশেষজ্ঞরা জখম পা মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে পরীক্ষা করে দেখেন। কোনও ধাতব অস্তিত্ব মেলেনি বলে জানা গিয়েছে। দাঁতালটিকে পরীক্ষার পরে বিশেষজ্ঞদের অনুমান, সঙ্গিনী দখলের লড়াইয়েই দাঁতালটি জখম হয়েছে। গুয়াহাটি পশু চিকিৎসা কলেজের সার্জিক্যাল বিভাগের ডিন কুশল শর্মা বলেন, “এত বিশাল মাপের হাতি খুবই কম নজরে পড়ে। জংলি হাতির পায়ে অস্ত্রোপচার করলে লাভ হবে না বলে ওষুধ খাওয়ানোর কথা বলা হয়েছে। অনেক সময় বুনো হাতির ক্ষত নিজে থেকে সেরে যায়। এ ক্ষেত্রে তেমনই হবে বলে আমরা আশা করছি।”
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে দাঁতালের দুটি দাঁত বেশ কিছুটা করে কেটে নেওয়া হয়। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, যেহেতু জখম দাঁতাল লোকালয়ের আশপাশে ঘোরাফেরা করছে, তাতে চোরাশিকারির নজরে পড়ে ওই দাঁতের জন্য প্রাণ যেতে পারে। তাই দাঁত কেটে রাখা দরকার। জলপাইগুড়ির ডিএফও কল্যাণ দাস বলেন, “আমাদের রাজ্যে দাঁতালের দাঁত কাটার ক্ষেত্রে উর্ধ্বতন কর্তাদের অনুমতি প্রয়োজন। বন্যপ্রাণ বিভাগের প্রধান মুখ্য বনপালের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে প্রায় ১৬ সেন্টিমিটার পরিমাণ দাঁত কাটা হয়েছে। চিকিৎসকদের পরামর্শে ওষুধ খাওয়ানো চলবে।”
জখম দাঁতালটিকে গত মার্চ মাসে প্রথম খুঁটিমারির জঙ্গলে খোঁড়াতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বন দফতরের উদ্যোগে স্থানীয় চিকিৎসকদের দিয়ে পরীক্ষা করাতে গিয়ে দেখা যায় দাঁতালের সামনের বাঁ পায়ের হাড় ভেঙে গিয়েছে। স্থানীয় চিকিৎসকেরা দাঁতালটির চিকিৎসাও করেন। তার পরেও দাঁতালটি পুরোপুরি সুস্থ না-হওয়ায় উদ্বিগ্ন বনমন্ত্রী হিতেন বর্মনের নির্দেশে অসমের ওই তিন বিশেষজ্ঞকে ডেকে আনা হয়। বনমন্ত্রী বলেন, “হাতিটির বিষয়ে খোঁজ দিচ্ছেন আধিকারিকরা। চিকিৎসার যাতে কোনও ত্রুটি না হয় তা দেখতে বলেছি তাঁদের।” জখম দাঁতালের চিকিৎসা শুরু হয় এদিন কাকভোরে। জলদাপাড়ার দুই কুনকি হাতি সুন্দর ও মেনকার পিঠে চড়ে চিকিৎসকেরা খুঁটিমারির জঙ্গলে ঢোকেন। |