শুরু মামলা
বিজয়নের ঘনিষ্ঠ নেতার মন্তব্যে বিপাকে সিপিএম
কেরলের এক জেলা সম্পাদকের প্রকাশ্য মন্তব্য ঘিরে গোটা দেশে নজিরবিহীন চাপের মুখে সিপিএম। কংগ্রেস, বিজেপি-সহ বিরোধীরা সিপিএমের ‘খুনের রাজনীতি’র বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে আসরে নেমেছেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতারা। যে জেলা সম্পাদকের বিবৃতি ঘিরে এত কাণ্ড, ইতিমধ্যেই তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করেছে রাজ্য পুলিশ। বিপাকে পড়ে ওই জেলা সম্পাদক নিজেও এখন প্রকাশ্যে অন্য কথা বলছেন। কিন্তু তাতে সমস্যা কাটছে কই?
সিপিএমের ইডুক্কি জেলার সম্পাদক এম এম মণি দিন দুয়েক আগে জনসভায় বলেন, অতীতে দল থেকে বহিষ্কৃত ও দলত্যাগী নেতা-কর্মীদের খুন করেছে সিপিএম। এমন সময়ে মণি এই মন্তব্য করেছেন, যখন দলের বিরুদ্ধে প্রাক্তন সিপিএম নেতা টি পি চন্দ্রশেখরণ হত্যার অভিযোগ উঠেছে। সিপিএমের কেরল রাজ্য সম্পাদক পিনারাই বিজয়নের ঘনিষ্ঠ নেতা মণি নিজেও বিপাকে পড়েছেন। তাঁর ওই মন্তব্যের পরে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী ওমেন চাণ্ডি জানান, মণি যা বলেন, তার তদন্ত হওয়া উচিত। আজই মণির বিরুদ্ধে খুন-সহ একাধিক মামলা শুরু করেছে পুলিশ। বিশেষ তদন্তকারী দল (এসআইটি)-কে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই সিপিএমের বিরুদ্ধে খুনের রাজনীতির অভিযোগ এনেছে বিরোধীরা। মণির বক্তব্যের পরে ফের নিশানায় সিপিএম। কংগ্রেস বলছে, এটাই সিপিএমের প্রকৃত চরিত্র। বিজেপি-নেতা রাজীবপ্রতাপ রুডি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন জয়ের চেষ্টা চালিয়ে মন্তব্য করেন, “মমতা যে এত দিন সত্যি বলছিলেন, তা প্রমাণ হল। হিংসার রাজনীতি করেই পশ্চিমবঙ্গ, কেরল ও ত্রিপুরায় ক্ষমতায় এসেছিল সিপিএম।” গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও সিপিএমকে মাওবাদীদের সঙ্গে তুলনা করেছেন। বাম-মহলেও এ নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। সিপিআই নেতা এ বি বর্ধনের দাবি, সিপিএম নিজের অবস্থান স্পষ্ট করুক। প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিক। চাপের মুখে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে রিপোর্ট চেয়েছেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট। দলের পলিটব্যুরো নেতা সীতারাম ইয়েচুরি জানান, সিপিএম হিংসার পথ নেয়নি। উল্টে খুনের রাজনীতির শিকার হয়েছে। তবে এত কিছুর পরেও মণির বিরুদ্ধে কারাট কতটা কঠোর পদক্ষেপ করতে পারবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কারণ মণি বিজয়নের গোষ্ঠীর লোক। তবে এ কে গোপালন ভবনের নেতারা বলছেন, কেরল রাজ্য নেতৃত্বও মণির বক্তব্য থেকে দূরত্ব তৈরি করতে সচেষ্ট হয়েছে। মণিকে ‘সেন্সর’ করে মুখ খুলতে নিষেধ করা হয়েছে।
জনসভায় কেরলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অচুত্যানন্দনের বিরুদ্ধেও মুখ খোলেন মণি। বলেছিলেন, ৮০’-র দশকে ইডুক্কি জেলায় ‘রাজনৈতিক খুনে’ দল দায়ী। সে সময় রাজ্য সম্পাদক ছিলেন অচ্যুতানন্দন। তবে মণির অভিযোগ উড়িয়ে দেন অচুত্যানন্দন। নিহত চন্দ্রশেখরনকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতেও গিয়েছিলেন। তাই দলীয় নেতৃত্ব তাঁর সমালোচনাও করেছিলেন। এ বার মণির ঘটনায় পিনারাই অন্য পার্টি কর্মীদেরও সার্কুলার দিয়ে জানিয়েছেন, কোনও বিষয়ে পার্টি লাইনের বাইরে প্রকাশ্যে কিছু বলা যাবে না। ভিন্ন মত থাকলে, তা নিয়ে দলের মধ্যে আলোচনা করতে হবে। পিনারাইয়ের কথায়, “মণি যা বলেছেন, সেটা তাঁর ব্যক্তিগত মত। এর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই।” তাঁর ব্যাখ্যা, দল চিরকালই রাজনৈতিক শত্রুদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। তাতে বহু দলীয় নেতা-কর্মীর প্রাণ গিয়েছে। এই ভাবেই শক্তিশালী হয়েছে দল। কিন্তু সিপিএম কোনও দিন কারও বিরুদ্ধে হাতে অস্ত্র তুলে নেয়নি।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.