পতনের গতিকে থমকে দিয়ে সোমবার কিছুটা চাঙ্গা হল শেয়ার বাজার। সেনসেক্স বাড়ল ১৯৯.০২ পয়েন্ট। বাজার বন্ধের সময়ে তা এসে দাঁড়াল ১৬,৪১৬.৮৪ অঙ্কে। পাশাপাশি ডলারে টাকার দাম এই দিন বেড়েছে ২০ পয়সা। বিদেশি মুদ্রার লেনদেনের বাজার বন্ধের সময় এই দিন প্রতি ডলারের দাম দাঁড়িয়েছে ৫৫.১৮ টাকা। প্রসঙ্গত, টাকার দাম বাড়ছে গত তিন দিন ধরেই। এই তিন দিনে টাকার দাম মোট বেড়েছে ৮২ পয়সা। এক দিকে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দাওয়াই, অন্য দিকে গ্রিসের সমস্যা সমাধানের ইঙ্গিতই টাকার দাম বাড়তে সাহায্য করেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। মূল্যায়ন সংস্থা মুডিজও এ দিন জানিয়েছে, টাকা এর আগে যে ভাবে পড়েছে, তার প্রভাব পড়বে না ভারতের রেটিংয়ে।
তবে সূচকের এই বৃদ্ধিকে কোনও মতেই শেয়ার বাজারের ঘুরে দাঁড়ানো বলে মানতে রাজি নন বিশেষজ্ঞরা। বাজার সূত্রের খবর, এই দিনের সূচকের উত্থানের কারণ হল, বৃহস্পতিবার আগাম লেনদেনের সেটেলমেন্টের দিন। যে সব লগ্নিকারী হাতে শেয়ার না-থাকা সত্ত্বেও আগাম লেনদেনে তাঁরা তা বেচে রেখেছেন, তাঁদের মধ্যে অনেকেই এ দিন শেয়ার কিনতে নেমে পড়েন। কারণ, তাঁরা যে শেয়ার বেচে রেখেছেন আগামী বৃহস্পতিবার তা হস্তান্তর করতে হবে। এই কারণে সোমবার শেয়ারের চাহিদা বেড়ে যাওয়ার ফলেই দাম কিছুটা বেড়েছে।
পাশাপাশি বিশ্ব বাজারও এ দিন কিছুটা চাঙ্গা ছিল। গ্রিসে আসন্ন নির্বাচন সেখানে রাজনৈতিক স্থিতি ফেরাবে বলেই আশা বিশেষজ্ঞদের। সে ক্ষেত্রে তাদের ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না। এর জেরেই ইউরোপের বাজার এই দিন কিছুটা নড়েচড়ে বসে। ইউরোপের দিকে তাকিয়ে এশিয়ার বাজারগুলির মধ্যে চিন, সিঙ্গাপুর জাপান-সহ আরও কিছু দেশের শেয়ার সূচকের মুখও উপরের দিকে ঘুরে যায়। এরই প্রভাব ভারতে এসে পড়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। পশাপাশি টাকার দামের প্রভাবও পড়েছে বাজারে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে বাজারের ভবিষ্যৎ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। সূচকের এই উত্থানের মধ্যে বাজারের ঘুরে দাঁড়ানোর কোনও সম্ভাবনা খুঁজে পাচ্ছেন না বাজার বিশেষজ্ঞ এবং বিএনকে ক্যাপিটাল মার্কেটসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অজিত খান্ডেলওয়াল। তিনি মনে করেন, “এই উত্থানকে বাজারের ঘুরে দাঁড়ানো বলে ভুল করার কোনও কারণ নেই। বাজারের মূল উপাদানগুলি অর্থাৎ দেশের আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। তাই সূচকের এই উত্থান ক্ষণস্থায়ী হবে বলেই বিশ্বাস।”
বাজারের এই পড়তি অবস্থাকে শেয়ার কেনার ভাল সুযোগ বলে মন্তব্য করেছেন নাকামিচি সিকিউরিটিজের ডিরেক্টর এবং অসোসিয়েশন অফ ন্যাশনাল এক্সচেঞ্জেস মেম্বার্স অফ ইন্ডিয়া (অ্যানমি)-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান নবরতন টিব্রিওয়াল। তিনি বলেন, “এটা ঠিক, বাজার আরও কিছুটা পড়তে পারে। কিন্তু তার পর বাজারের ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনাই বেশি। তাই এখন ভাল শেয়ারে লগ্নি করলে আখেরে মুনাফার মুখ দেখার সম্ভাবনা আছে বলে মনে করি।” |