অবশেষে একটি জলপ্রকল্পের আশ্বাস পেলেন নান্দাইয়ের মানুষ। সোমবার কালনার ধাত্রীগ্রামে এক অনুষ্ঠানে নান্দাইয়ের জন্য এই প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি দিলেন রাজ্যের জনস্বাস্থ্য কারিগরি ও পঞ্চায়েত দফতরের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
তিনি এ দিন বলেন, “কলকাতায় ফিরেই নান্দাই নিয়ে সার্ভে করার নির্দেশ দেব। সেখানে কী প্রকল্প হবে এবং তার জন্য কত টাকা বরাদ্দ করা হবে, তা নিয়ে বিস্তারিত জানানো হবে রিপোর্ট হাতে পেলেই।” তবে, মন্ত্রীর আশ্বাস, “নদীর জলের সরবরাহ যদি থাকে, তাহলে তা পরিস্রুত করে সাধারণ মানুষের মধ্যে অবশ্যই বিলি করা হবে।” |
এ দিন জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের একটি প্রকল্পের পুনর্নবীকরণ উপলক্ষে কালনার ধাত্রীগ্রামে এসেছিলেন সুব্রতবাবু। মন্ত্রী মঞ্চে থাকাকালীনই পূর্বস্থলী দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক স্বপন দেবনাথ বলেন, “নান্দাই পঞ্চায়েতের ১৪টি মৌজার ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ দীর্ঘদিন জলকষ্টে ভুগছেন। ওই এলাকায় যাতে জনস্বাস্থ্যের একটি প্রকল্প গড়া যায়, তার জন্য ২০০৯ থেকে বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে। পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতি থেকেও চিঠিপত্র দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কোনও এক অজ্ঞাত কারণে কোনও ফল মেলেনি। তার উপরে এলাকায় আর্সেনিকের থাবা পড়েছে। মঞ্চেই তিনি মন্ত্রীকে প্রস্তাব দেন, নদীর জল পরিস্রুত করে সাধারণ মানুষকে সেই জল সরবরাহ করার প্রকল্প জনস্বাস্থ্য দফতর করুক এখানেও। এর পরেই নান্দাই নিয়ে উৎসাহ প্রকাশ করেন মন্ত্রী। জেলাশাসকের সঙ্গে মঞ্চেই এই নিয়ে কথা বলেন সুব্রতবাবু।
ধাত্রীগ্রামের এই অনুষ্ঠানে ছিলেন নান্দাই পঞ্চায়েত প্রধান ঈদের আলি মোল্লা। তিনি বলেন, “মন্ত্রী নিশ্চিত করেছেন, প্রকল্প হবেই। প্রকল্প চালু হলে গরম কালে প্রায় কয়েক হাজার মানুষ এর সুবিধা পাবেন।”
জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পুনর্নবীকরণ প্রকল্পের জন্য ১ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা খরচ হবে। এতে উপকৃত হবেন ধাত্রীগ্রাম, বাঁধাগাছি এবং গ্রাম কালনা এলাকার বেশ কয়েক হাজার মানুষ।
ধাত্রীগ্রাম থেকে মন্ত্রী যান পূর্বস্থলী ২ ব্লকের কমলনগর গ্রামে। ভাগীরথীর জল দূষণমুক্ত করার প্রকল্প তৈরির কাজ সেখানে শুরু হয়েছে ২০১০ থেকে। মন্ত্রী এ দিন প্রকল্পটি চালু করেন। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পের জন্য খরচ হয়েছে ৪১ কোটি টাকা। এই প্রকল্প থেকে ৬৪টি মৌজার মানুষ দূষণমুক্ত জল পাবেন। |
মন্ত্রী এখানে বলেন, “নোদাখালি, বাঁকুড়া, শিলিগুড়ি এবং পুরুলিয়াতেও নদীর জল দূষণমুক্ত করে জল সরবরাহ করতে উদ্যোগী হয়েছে সরকার। পরিস্রুত পানীয় জল বোতলবন্দি করে কম দামে তা বিক্রির উদ্যোগও শুরু হয়েছে। রাজ্যের ছ’টি জায়গায় এই কাজ হবে। নোদাখালিতে প্রকল্পের কাজ অনেকটা এগিয়েছে।” এখানে তিনি আরও জানান, পূর্বস্থলীতে যে সব জলপ্রকল্পে রিজার্ভার গড়ে তোলা হয়নি, সেখানে দ্রুত রিজার্ভার তৈরি হবে। কারণ রিজার্ভার ছাড়া এ ধরনের প্রকল্প সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক।
কমলনগরের পরে লক্ষ্মীপুরেও একটি সভায় এ দিন যান সুব্রতবাবু। সেখানে তিনি জানান, বাবুইডাঙা, হালদিপাড়া, হরিপুর-সহ যে দশটি এলাকায় এত দিন জল মিলছিল না, কমলনগর প্রকল্পের আওতার মধ্যেই তাদের নিয়ে আসা হচ্ছে।
|
ছবি: কেদারনাথ ভট্টাচার্য। |