পরিকাঠামো উন্নয়নের আবেদন
জল পড়ে না কল থেকে, নলকূপ খারাপ শ্রীখণ্ডে
ভীর নলকূপ দু’টি। তার মধ্যে একটি খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে বেশ কিছু দিন। জলাধারের গায়ে ফাটলের দাগ। ভেঙে পড়েছে জলাধারের সিঁড়ি। কর্মী ৩ জন। বেহাল তাঁদের ঘরও। দীর্ঘ দিন ধরে বেতনও পাচ্ছেন না তাঁরা। এই অচলাবস্থার মধ্যেই কোনও রকমে পানীয় জল পাচ্ছেন কাটোয়া ১ পঞ্চায়েতের শ্রীখণ্ড গ্রামের বাসিন্দারা।
তবে গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, পাইপ লাইন দিয়ে আসা দূষিত জলই পান করতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। কাটোয়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বংশী ঘোষ জানিয়েছেন, শ্রীখণ্ড জলপ্রকল্পের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য ৩৪ লক্ষ টাকার একটি প্রকল্প তৈরি করে সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে।
বেহাল কর্মী আবাসন।
কাটোয়া ১ পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৮৪ সালে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের উদ্যোগে এবং বিশ্বব্যাঙ্কের অনুদানের টাকায় তৈরি হয়েছিল শ্রীখণ্ড গ্রামের জলাধার। ১৯৮৭ থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে এলাকায় জল সরবরাহ করা শুরু হয়। ১০ হাজার বাসিন্দা অধ্যুষিত ওই গ্রামে জল সরবরাহের জন্য তৈরি হয়েছিল ৬২টি ট্যাপ কল। ওই দফতরই সেই সময়ে এজেন্ট নিয়োগ করে জলসরবরাহ করত। কিন্তু ১৯৯৫ সালের পর থেকে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর হাত গুটিয়ে নেয়। ফলে পঞ্চায়েতের উপরে জল সরবরাহের দায়িত্ব চলে আসে। এর পর থেকেই ওই প্রকল্পের পরিকাঠামো ভেঙে পড়তে শুরু করে। তার পরে গত ১৭ বছরে জল সরবরাহের সমস্যা তো কমেইনি, বরং বেড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা উন্নতি পণ্ডিত, অনিমেষ গঙ্গোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “গ্রামের হাসপাতাল পাড়া, বাসস্টপ, রেলস্টেশন, এ সব জায়গাতেই জলের কল আছে। কিন্তু গত প্রায় তিন বছর হল, সেখান থেকে কোনও জল পড়ে না।” স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, রাস্তার অন্য কলগুলিতে জলের ‘চাপ’ বেশি না হওয়ায়, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জলের গতি খুবই ক্ষীণ।
শ্রীখণ্ড গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দীপক মজুমদার বলেন, “কল দিয়ে বেশির ভাগ সময়ে কালো নোংরা জল বেরোয়। জল সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক করতে পঞ্চায়েত সমিতিকে বার বার বলা হলেও তারা কোনও গুরুত্ব দিচ্ছে না।”
কল আছে। জল নেই।
পঞ্চায়েতের আরও অভিযোগ, বছর দুয়েক আগে জলপ্রকল্প এলাকার গাছগুলি কেটে নেয় পঞ্চায়েত সমিতি। সেই সময়ে সমিতির বক্তব্য ছিল, গাছ বিক্রির টাকায় অস্থায়ী কর্মীদের আবাসন হবে। নতুন পাম্প বসানো থেকে শুরু করে পরিকাঠামোগত নানা উন্নয়ন হবে। কিন্তু প্রায় দেড় লক্ষ টাকার গাছ বিক্রি হলেও পরিকাঠামোর কোনও উন্নয়ন হয়নি। পঞ্চায়েত সমিতি অবশ্য গাছ কাটার বিষয়টি অস্বীকার করেছে। তবে সমিতির সভাপতি বংশীবাবুর দাবি, কর্মীদের বেতন দেওয়া বা পরিকাঠামো উন্নয়নের দায়িত্ব জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের। তাঁর কথায়, “দফতর বেতন দেয় না বলে আমরাই সমিতির তহবিল থেকে বেতন দিয়ে থাকি।”
জিজ্ঞাসা করতেই ক্ষোভ উগড়ে দিলেন জল সরবরাহ বিভাগের কর্মীরা। জানালেন, ৬ বছর ধরে একটি গভীর নলকূপ খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। মেরামত করা হয়নি। ‘পাইপ লাইন’গুলির অবস্থাও তথৈবচ। তিন বছর আগে ভেঙে গিয়েছে জলাধারের সিঁড়ি। এখনও তার সংস্কার হয়নি। এই অবস্থাতেই চলছে জল সরবরাহ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মীদের কথায়, “চার মাস অন্তর বেতন পাচ্ছি। যে টাকাই পাই, সেটা প্রতি মাসে পেলে সুবিধা হয়।”
একে তো বেতন মেলে দেরিতে। তার উপরে, তাঁদের বসবাসের ঘরগুলির অবস্থাও অত্যন্ত করুণ। তাঁদের কথায়, “ঘরের ভিতরে সিমেন্টের চাঙর খসে পড়ছে। প্রাণ হাতে নিয়ে এখানে বাস করছি।”

নিজস্ব চিত্র।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.