গত ৩৪ বছরেও তাঁরা যে সব কাজ করে উঠতে পারেননি, তা কবুল করলেন অধুনা বিরোধী দলনেতা এবং রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সূর্যকান্ত মিশ্র। এবং সেই ‘অসমাপ্ত’ কাজের ভার দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপ্যাধ্যায়ের উপর। বস্তুত, সূর্যবাবু মমতাকে মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, তাঁর আচরণের উপর রাজ্যের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে।
বর্ধমানে নিহত দলীয় নেতা প্রদীপ তা ও কমল গায়েনের স্মরণসভায় গিয়ে সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে সূর্যবাবু বলেন, “যে কাজগুলো আমরা ৩৪ বছরে করতে পারিনি, সেগুলো করার চেষ্টা করুন। অকারণে আত্মতুষ্ট হয়ে নিজের সরকারকে তো ১০০ নম্বর দিয়ে দিয়েছেন! মাত্র এক বছরে এত আত্মতুষ্ট হওয়ার কারণ নেই। শুধু ৩৪ বছরের ভূত দেখবেন না। এখনও অনেক কাজ করার আছে। ভুলে যাবেন না, আপনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। আপনার আচরণের উপরে রাজ্যের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে।” |
বিরোধী দলনেতা হিসেবে সূর্যবাবুর ‘সংযত’ ভূমিকা ইতিমধ্যেই দলের অন্দরে প্রশংসিত। গত পার্টি কংগ্রেসে তাঁর ‘উত্তরণ’ ঘটেছে পলিটব্যুরোয়। এদিনও সূর্যবাবুর বক্তব্যের মধ্যে তাঁর দলীয় সতীর্থদের একাংশ ‘পরিণত মস্তিষ্ক’ই দেখতে পেয়েছেন। রাজ্য সম্পাদকমন্ডলী তথা কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের কথায়, “আমরা সমস্ত কাজ করতে পারিনি বলেই তো মমতাকে রাজ্যের মানুষ ক্ষমতায় এনেছেন। সে কাজ যে তাঁকে করতে হবে, সেটাই বিরোধীদলনেতা বলেছেন।” দলের একাংশের মতে, মমতার আচরণের উপর রাজ্যের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে বলে সূর্যবাবু কৌশলে মুখ্যমন্ত্রীর উপর ‘চাপ’ তৈরি করতে চেয়েছেন। প্রকারান্তরে বলেছেন, মমতা ‘সংযত’ আচরণ করুন। সূর্যবাবু বলেন, “মানুষ আমাদের চেয়েছিলেন বলেই ৩৪ বছর ক্ষমতায় ছিলাম। তার পরে মানুষের রায় মাথা পেতে নিয়ে বিরোধী পক্ষে বসেছি।” কিন্তু তাঁর কটাক্ষ, “মানুষ দেখতে পাচ্ছেন, কী পরিবর্তন হয়েছে। যেখানে যা ঘটছে মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, সাজানো!” তাঁর আরও কটাক্ষ, “দয়া করে এই পাঁচ বছরের মধ্যে পালিয়ে যাবেন না। পলায়নের অনেক অতীত রেকর্ড রয়েছে আপনার। এক বার বিজেপি, এক বার কংগ্রেসের সঙ্গে ঘর করেছেন। ফের বিজেপি, তার পরে ফের কংগ্রেসের সঙ্গে গিয়েছেন। এমন যাতায়াত আপনি অনেক করবেন। দয়া করে যেন রাজ্যে সরকার বিপদে পড়লে পালিয়ে যাবেন না।” |