মা হওয়ার স্বপ্ন জাগাল জরায়ু প্রতিস্থাপন
চিকিৎসাবিজ্ঞানে আরও এক ধাপ এগোল দুনিয়া। প্রথম ‘সফল’ জরায়ু প্রতিস্থাপন করে দেখালেন এক তুর্কি। এবং একই সঙ্গে মা হওয়ার স্বপ্ন দেখালেন সন্তান ধারণে অক্ষম বহু মহিলাকে।
একুশ বছরের ডেরিয়া সার্ত জন্মেছিলেন জরায়ু ছাড়াই। মা না হতে পারার দুঃখ কুরে কুরে খাচ্ছিল ডেরিয়াকে। হঠাৎই যোগাযোগ হয় ওমর ওজকানের সঙ্গে। আন্তালিয়ার আকদেনিজ হাসপাতালের চিকিৎসক ওমর ঠিক কনে, তিনি ডেরিয়ার শরীরে জরায়ু প্রতিস্থাপন করবেন। গত বছর ৯ অগস্ট গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত এক মহিলার শরীর থেকে তাঁর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয় জরায়ু।
এ পর্যন্ত নতুন কিছুই নয়। এর আগেও একাধিকবার জরায়ু প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু কোনও বারই সফল হননি চিকিৎসকেরা। শেষ বার জরায়ু প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল ২০০০ সালে। সৌদি আরবের ২৬ বছরের এক তরুণীর শরীরে জরায়ু প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল সে বার। তিন মাস মতো তাঁর শরীরে কাজ করছিল প্রতিস্থাপিত জরায়ুটি। কিন্তু রক্তনালীতে রক্ত জমাট বেধে যাওয়ায় শেষমেশ বাদ দিতে হয় তা। এই ব্যর্থতার ধারাই এ বার কাটিয়ে উঠলেন ওমর ও তাঁর দল। ডেরিয়ার শরীরে জরায়ু প্রতিস্থাপনের পর প্রায় দশ মাস কেটে গিয়েছে। তিনি সুস্থ। এবং জরায়ু ঠিকঠাক কাজ করছে বলে জানান ওমর।
চিকিৎসক ওমর ওজকানের সঙ্গে ডেরিয়া সার্ত।
তবে এখনও নিজেদের সম্পূর্ণ সফল বলতে নারাজ ওমর। কারণ এত কিছুর পিছনে আসল উদ্দেশ্য, ডেরিয়ার মা হওয়া। অস্ত্রোপচারের আগে ডেরিয়াকে প্রায় ছ’মাস হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করেন ওমর। তাঁর শরীর সম্পূর্ণ নতুন, একটা অপরিচিত অঙ্গ যাতে খাপ খাইয়ে নিতে পারে, সে চেষ্টায় ত্রুটি রাখেননি তিনি। ওমরের কথায়, “আমাদের অস্ত্রোপচার সফল। কিন্তু আমরা সফল হব তখনই, যখন ডেরিয়া মা হবেন। খুশির খবর এটাই, ওঁর শরীরে প্রতিস্থাপিত জরায়ু ঠিকঠাক কাজ করছে।” তবে তাঁর আশঙ্কা, গর্ভবতী অবস্থায় বেশ কিছু জটিলতার মুখোমুখি হতে হবে ডেরিয়াকে।
ওমর অবশ্য বিশ্বাস করেন, আগামী কয়েক দশকের মধ্যে জরায়ু প্রতিস্থাপন খুবই সাধারণ একটা ব্যাপার হয়ে যাবে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে এই মুহূর্তের ছবিটাও একই কথা বলছে। সামনের শীতেই এক মায়ের শরীর থেকে তাঁর মেয়ের দেহে জরায়ু প্রতিস্থাপন করতে চলেছেন সুইডেনের এক দল ডাক্তার। লন্ডনের ইমপিরিয়াল কলেজের স্ত্রীরোগবিশেষজ্ঞ রিচার্ড স্মিথও একই উদ্দেশ্য নিয়ে এগোচ্ছেন। এক ব্রিটিশ মহিলার চিকিৎসা করছেন তিনি। স্মিথ জানান, জরায়ু প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে মা হওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়ে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৫০ জন মহিলা তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন।
দক্ষিণ তুরস্কের আনামুর শহরে বাসিন্দা এক চাষির মেয়ে ডেরিয়া। স্বামী গাড়ি সারাই করেন। কোনও দিন মা হতে পারবেন না জেনে ভেঙে পড়েছিলেন ডেরিয়া। তাঁর কথায়, “আমার সর্বদা মনে হত, যদি একটা জাদুর কাঠি থাকত। ছুঁইয়ে দিয়ে মা হতে পারতাম।” এখন কী বলছেন ২১ বছরের তরুণী? “দেখি, যদি আমার মতো মেয়েদের জন্য যদি একটা খুশির খবর দিতে পারি!”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.