তৃণমূলের ‘সন্ত্রাসে’র কারণে আসন্ন পুরভোটে বামফ্রন্টের বড় ‘সাফল্য’ আসবে না বলে অভিযোগ করছেন সিপিএমের অন্যতম প্রধান নেতা গৌতম দেব। যদিও তৃণমূল শিবিরের দাবি, পুরভোটে ‘বিপর্যয় অনিবার্য’ বুঝেই বাম নেতারা এ ভাবে মুখরক্ষার রাস্তা খুলে রাখছেন। রাজ্যে ছয় পুরসভায় নির্বাচন পরের রবিবার। তার ৪৮ ঘণ্টা আগে থেকে প্রচার বন্ধ। তার আগে শেষ শনিবার কাজে লাগাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন সব দলের নেতারা। এক দিকে শুভেন্দু অধিকারী, দীপা দাশমুন্সি, মহম্মদ সেলিম দুর্গাপুরে গিয়েছেন, হলদিয়ায় অধীর চৌধুরী ও অশোক ভট্টাচার্য, পাঁশকুড়ায় মানস ভুঁইয়া। নদিয়ার কুপার্স ক্যাম্পে সভা করেন প্রদীপ ভট্টাচার্য ও মুকুল রায়, নলহাটিতে মৌসম নুর।
এ দিনই শিলিগুড়ির পূর্ত দফতরের বাংলোয় সাংবাদিক বৈঠক করে সিপিএমের গৌতম দেব মন্তব্য করেন, “তৃণমূলের সন্ত্রাসের জন্য পুরভোটে আমাদের বিরাট কোনও সাফল্য আসবে না। অনেক জায়গায় প্রার্থী দেওয়া যায়নি। তৃণমূলের সন্ত্রাসের জন্য দুর্গাপুর, ধূপগুড়ি, পাশকুঁড়ায় ঠিক মতো প্রচার করা যাচ্ছে না। তমলুকে অবস্থা আরও খারাপ। তারই মধ্যে যতটা সম্ভব চেষ্টা করা হচ্ছে।” হলদিয়ায় গিয়ে প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “দু’বছর আগে রাজ্যের বহু পুরসভার ভোটেই জেতে তৃণমূল বা ওদের জোট। ওরা বলতে পারবে না প্রচারে বাধা হয়েছিল বা ওদের প্রার্থীদের হেনস্থা করা হয়েছিল।” গৌতমবাবু বলেন, “এই সরকারের সবে এক বছর বয়স হয়েছে। এখনই তেড়ে-ফুঁড়ে মাঠে নামতে চাইছি না।” তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী পাল্টা বলেন, “উনি পুরনো রেকর্ড বাজিয়ে চলেছেন। সন্ত্রাসের অভিযোগ ভিত্তিহীন।”
ছ’টি পুরসভার কোনওটিতেই কংগ্রেস-তৃণমূল জোট হয়নি। ফলে দুই শরিকের নেতারাই পরস্পরের বিরুদ্ধে তোপ দাগছেন। পাঁশকুড়ায় সেচমন্ত্রী তথা প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি মানস ভুঁইয়া বলেন, “বড় দল বলে তৃণমূল শুধু আমি, আমি, করে। আমরা জোট চাইলেও সব আসনে লড়তে চেয়ে ওরাই জোট ভাঙল।” মুর্শিদাবাদের কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী হলদিয়ায় মন্তব্য করেন, “পরিবর্তন হলেও কিছুই বদলায়নি। ভোটের সময়ে প্রধান শাসকদলের সন্ত্রাস আগের মতোই রয়েছে।” দুর্গাপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতার নাম না করেও সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মহম্মদ সেলিম বলেন, “মন্ত্রী তো এক জনই। বাকি সব নাম-কা-ওয়াস্তে। তিনিই পুলিশ, তিনিই বিচারক, তিনিই সাংবাদিক। ওরা সিপিএমকে তো মারতই, এখন কংগ্রেসকেও মারছে। সাংবাদিকদেরও পেটাচ্ছে।” শহরেরই অন্যত্র দীপা দাশমুন্সি বলেন, “এখন কার্টুন আঁকলেই জেলে পুরে দেওয়া হচ্ছে। চারদিকে নীল-সাদা রং করে দিলেই সব সমস্যা মিটে যাবে?”
শুভেন্দু অধিকারী অধীর-দীপাকে কটাক্ষ করে বলেন, “রায়গঞ্জ-বহরমপুর থেকে মার্কসবাদী কংগ্রেসকে এনে সভা করা হচ্ছে। ওরা ভোট কাটার খেলায় নেমেছে।” তাঁর চ্যালেঞ্জ, “ভোটে মুর্শিদাবাদে ঘাসফুল ফোটাবই।” |