গোটা পৃথিবী যখন মহেন্দ্র সিংহ ধোনির ভাগ্যকে কুর্নিশ করছে। ধরে নিচ্ছে ফাইনালেও ধোনির ভাগ্যই তাঁকে উতরে দেবে। তখন ধোনির ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক মোটেও অধিনায়কের ভাগ্যরেখা নিয়ে নিশ্চিন্ত হয়ে বসে নেই।
বরঞ্চ তিনি এন শ্রীনিবাসন চেন্নাই সুপার কিংসের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যে কয়েক কোটি টাকার যজ্ঞের আয়োজন করেছেন। যত দূর জানা যাচ্ছে, মাদুরাইয়ের কাছে কোথাও বাস্তু বেঙ্কটেশন নামক শ্রীনিবাসনের ব্যক্তিগত জ্যোতিষী এই যজ্ঞ পরিচালনা করছেন। সেখানে রয়েছেন শ’চারেক পুরোহিত। যজ্ঞ গত পরশু শুরু হয়েছে। চলবে আইপিএল ফাইনাল শেষ হওয়া পর্যন্ত।
বাস্তু বেঙ্কটেশন আবার জ্যোতিষচর্চা ছাড়া বাস্তু বিশেষজ্ঞও বটে। এখানে শুনছিলাম, শ্রীনিবাসন কোনও ব্যক্তিগত কাজ এই জ্যোতিষীর পরামর্শ ছাড়া করেন না। চেন্নাই থেকে প্রকাশিত নামী ইংরেজি দৈনিকের সম্পাদক বলছিলেন, গত বছর বেঙ্কটেশনের শরণাপন্ন হন শ্রীনিবাসন। সময় নাকি তখন ভাল যাচ্ছিল না। বেঙ্কটেশন পরামর্শ দেন অবিলম্বে আপনাকে নিজের বাড়ির কাছাকাছি জলের নতুন উৎসের ব্যবস্থা করতে হবে। নইলে দুঃসময় কাটবে না। পরের দিনই যে বাড়িতে তিনি থাকেন তার পাশের বাংলোটা দশ কোটি টাকা খরচ করে কিনে নেন শ্রীনিবাসন। সেখানে নতুন জলের কানেকশন নেওয়া হয়। আর বিপদও নাকি কেটে যায়।
এ বার সিএসকে যখন গ্রুপ পর্যায়েই বিদায় হয়ে যাওয়ার উপক্রম করছে, তখন শ্রীনিবাসন নিরুপায় হয়ে এই যজ্ঞ শুরু করান। গত দু’বার ফাইনালের আগেও এই যজ্ঞ হয়েছিল। কিন্তু এ বার পতনের মুখ থেকে ফিরে আসার পর প্রথম সিদ্ধান্ত হয়, টানা করতে হবে। এমনকী খেলা শুরুর অনেক আগেই যজ্ঞ শুরু হওয়া চাই।
|
শ্রীনিবাসন সম্পর্কে শোনা যায় রক্ষণশীল আয়েঙ্গার ব্রাহ্মণরা যেমন এক সময় হতেন তার প্রতিচ্ছবি। নিরামিষ খান। সংযত জীবনযাপন করেন। পুজোআচ্চায় অসীম আস্থা। আর সব সময়েই জিততে চান। যে দৌড়েই তিনি নামুন, সেখানে এক নম্বর হতে চান। দু’বার আগে ট্রফি জিতেছেন তো কী! আইপিএল আবার চাই।
কোদাইকানালে নাকি তিনি মাঝেমধ্যেই যান এই যজ্ঞটজ্ঞের জন্য। এমনও শোনা যাচ্ছে সিএসকে তাদের অধিনায়ককে নাকি বলেছে যে, আইপিএল খেলে উঠেই তাঁকে কোদাইকানাল যেতে হবে। সারমর্ম: গোটা পৃথিবী যতই ‘ধোনিজ লাক’ বলে লাফাক, তাঁর মালিকের কাছে বাস্তু বেঙ্কটেশন হলেন সেই ভাগ্যের আধার।
এ দিকে নাইট শিবির তেমন কিছু করেছে-টরেছে বলে শোনা যায়নি। দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে অবশ্য গম্ভীরের টিমের জন্য পুজো দেওয়া হয়েছিল। সেই প্রসাদ শনিবার পৌঁছে গিয়েছে কেকেআর ড্রেসিংরুমে। দেশের জ্যোতিষীদের মধ্যেও রবিবারের ম্যাচ নিয়ে তুমুল পূর্বাভাস করা শুরু হয়ে গিয়েছে।
সংখ্যাতত্ত্ববিদ সঞ্জয় জুমানি, যাঁর কথা শুনে শাহরুখ টিমের জার্সির রং কালো থেকে বদলান, তিনি পূর্বাভাস করেছেন কেকেআরের পক্ষে। কলকাতার নামী জ্যোতিষী মিহির গঙ্গোপাধ্যায়, যিনি ৫ মে থেকে শুরু করে এ বার একাধিক কেকেআর ম্যাচের ফল মিলিয়ে দিয়েছেন, তাঁর মতে কেকেআর এগিয়ে। ফাইনালের রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ মাঠে কিছু ওলটপালট শুরু হলেও কেকেআর সেটা সামলে নিতে পারবে। কারণ, ধোনির চন্দ্র ভাল হলেও এ মুহূর্তে শাহরুখের আরও বেশি চাঁদের দশা।
যুবকল্যাণ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস রবিবার সকালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দূত হিসেবে চেন্নাই উড়ে আসছেন। সঙ্গে নায়ক জিৎ। অরূপবাবুরা অবশ্য যজ্ঞ বা জ্যোতিষীর শরণ নেননি। রাতে বললেন, “প্রথম ম্যাচে দিদি আর বৃষ্টি একসঙ্গে উপস্থিত ছিল। তখনই জানি আমাদের মরসুমটা দারুণ যাবে। চিন্তার কোনও কারণ নেই। শাহরুখদের তখনই বলেছিলাম। এখন ওদের সিইও-ই বলছে, দারুণ বলেছিলেন তো। ঠিক তাই হচ্ছে।” |