কোচিং ক্লাস ফেরত দুই কিশোরী ছাত্রীর সঙ্গে সশস্ত্র সীমা বলের দুই জওয়ানের অশালীন আচরণের প্রতিবাদ ঘিরে কার্যত রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে বিহারে সীতামঢ়ী জেলার বেরগনিয়া।
ভারত-নেপাল সীমান্ত ঘেঁষা ওই এলাকায় কাল রাত থেকে আজ সকাল পর্যন্ত দফায় দফায় ঘটে সংঘর্ষ। জওয়ানদের তাঁবুতে আগুন ধরিয়ে দেয় ক্ষিপ্ত জনতা। পাল্টা লাঠি ও গুলি চালায় জওয়ানরা। গুলিতে মৃত্যু হয়েছে নীরজ পাসোয়ান নামে এক গ্রামবাসীর। জওয়ানদের লাঠির ঘায়ে জখম হয়েছেন থানার ওসি-সহ অন্তত ১৪ জন। চারজন হাসপাতালে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় দু’জনকে পটনায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার সরকারি পর্যায়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। ঘটনার তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে ডিজিপি অভয়ানন্দকে। বেরগনিয়ার অধিবাসীদের আইন নিজের হাতে না তুলে নেওয়ার আবেদনও জানিয়েছেন নীতীশ। পাশাপাশি,
সশস্ত্র সীমা বলের আই জি (সদর) আদিত্য মিশ্র এ দিন বলেন, “দুই জওয়ানের মধ্যে একজনকে চিহ্নিত করে স্থানীয় পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় জনকে চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।”
ঘটনার সূত্রপাত কাল রাতে বেরগনিয়া বাজার এলাকায়। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, নন্দওয়ারা মুসাচক গ্রামে দুই ছাত্রী কোচিং থেকে ফেরার সময় ২০ নম্বর ব্যাটেলিয়নের দুই জওয়ান তাদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করে। এর প্রতিবাদে এলাকার লোকজন জওয়ানদের তাঁবুতে বিক্ষোভ দেখাতে গেলে জওয়ানরা লাঠি চালায় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে সেখানে যান বেরগনিয়ার থানা ওসি অমরেন্দ্র কুমার ঝা এবং এসআই অনিরুদ্ধ প্রসাদ। জওয়ানেরা তাঁদেরও রেয়াত করেনি। লাঠির ঘায়ে দুই পুলিশকর্মী ও অন্তত ১২ জন গ্রামবাসী জখম হন।
আজ সকাল থেকে ন্দওয়ারা মুসাচক, দোরবানা এবং নুনিয়া দোরি প্রভৃতি গ্রাম থেকে বেশ কিছু গ্রামবাসী ফের জওয়ানদের তাঁবুতে এসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। দুই জওয়ানকে তাঁদের হাতে ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানানো হয়। জনতার একাংশ তাঁবুতে আগুন লাগিয়ে দেয়। এই অবস্থায় জওয়ানেরা গুলি চালালে তাতেই মৃত্যু হয় নীরজ পাসোয়ান নামে এক গ্রামবাসীর। সীতামঢ়ীর ডিএসপি অলোক কুমার বলেন, “জওয়ানেরা আত্মরক্ষার্থে গুলি চালিয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। ” |