মহীপাল স্টেশনে যে মহিলা ও শিশুপুত্রের দেহ পাওয়া গিয়েছিল, তাদের পরিচয় মিলল। মহিলার নাম রেজিনা বিবি (২৬) ও তাঁর ছেলের নাম রহিদুল শেখ (৫)। বৃহস্পতিবার তাঁদের রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত দেহ পাওয়া গিয়েছিল মহীপাল রেল স্টেশন থেকে। শুক্রবার রেজিনা বিবির মা হামিদা বিবি মেয়ে ও নাতির দেহ শনাক্ত করেন। গত ১৫ মে স্বামী আনারুল শেখের সঙ্গে সাগরদিঘির গোকুলতলা গ্রামের বাপের বাড়ি থেকে স্থানীয় সিয়ারা গ্রামের শ্বশুরবাড়ি যাবেন বলে বেরিয়েছিলেন রেজিনা ও রহিদুল। পুলিশের কাছে আনারুল ও তার বাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, সিয়ারা গ্রামে তল্লাশি চালিয়ে অভিযুক্তদের কাউকে ধরা যায়নি। সকলেই পলাতক। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই সম্ভবত রেজিনা ও রহিদুলকে খুন করা হয়েছে। পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “অভিযুক্তদের খোঁজ করা হচ্ছে। তারা সকলে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছে।” রেজিনার বাপের বাড়ি সাগরদিঘির গোকুলতলা গ্রামে। হামিদা বলেন, “মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে আশান্তি লেগেই থাকত। আনারুলের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের প্রতিবাদ করায় রেজিনাকে মারধর করা হত। এ নিয়ে সাগরদিঘি থানায় অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে আগে।” পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, অভিযোগ, বছর খানেক আগে রেজিনাকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেছিল তাঁর স্বামী ও শাশুড়ি। অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতারও করা হয়েছিল। তার পর থেকে রেজিনা ছেলেকে নিয়ে বাপের বাড়িতেই থাকতেন। তবে পরে আনারুল ও রেজিনার ফের যোগাযোগ হয়। হামিদা বিবি জানান, “আনারুল প্রায়ই বাড়িতে আসত। ওদের সম্পর্কও ভাল হয়ে গিয়েছিল।”
আনারুল রেজিনা ও রহিদুলকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে চাইলে রেজিনার বাপের বাড়ির লোকজন তাতে রাজিও হয়েছিলেন। মনে করা হচ্ছে, তাঁদের সিয়ারা গ্রামে নিয়েও গিয়েছিলেন আনারুল। তবে তার পরে তাঁরা সিয়ারা থেকে আবার কোথাও যাচ্ছিলেন। তখনই পথে খুন করা হয় রেজিনা ও তাঁর ছেলেকে। হামিদার অভিযোগ, “মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকেদের কাছে মেয়ের খবর জানতে চেয়েছিলাম। ওরাও কিছু বলেনি। আমরা থানায় নিখোঁজ ডায়েরিও করেছিলাম। তার পরে জোড়া মৃতদেহ উদ্ধারের খবর মেলে।” হামিদার আরও অভিযোগ, “কোনও আত্মীয়ের বাড়ি নিয়ে যাওয়ার নাম করে মেয়ে আর নাতিকে ভুলিয়ে নিয়ে গিয়ে পরিকল্পিত ভাবে খুন করা হয়েছে।” |