নকলে বাধা দেওয়ায় শিক্ষিকার হাত মুচড়ে দেওয়া এবং প্রধান শিক্ষককে ঘুঁষি মারার ঘটনায় অভিযুক্ত ইসলামপুর কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র রৌশন জামিরকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠাল পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ ওই ছাত্রকে ইসলামপুরের ডিমঠি এলাকার বাড়ি থেকেই গ্রেফতার করে। ধৃত ছাত্রকে ভারতীয় দণ্ডবিধির জামিনযোগ্য ৩৪১, ৩২৩ ও ৫০৬ ধারায় অভিযুক্ত করে আদালতে পাঠায় পুলিশ। বিচারক ওই ছাত্রকে জামিনে মুক্তি দেন। ঘটনার খোঁজ নিতে এদিন ইসলামপুর কলেজে যান উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ শিক্ষকের একটি প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধি দলের প্রধান শিলিগুড়ি কলেজের শিক্ষক প্রদীপ দত্তকে ইসলামপুর কলেজের শিক্ষকেরা অভিযোগ জানান, কলেজে নিরাপত্তার অভাব রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা পরীক্ষার হলে নজরদারির দায়িত্ব নিতে চান না। ইসলামপুর কলেজের টিচার্স কাউন্সিলের সম্পাদক অনিতা শর্মা চৌধুরী বলেন, “কলেজে নকল ধরার পর থেকে বিভিন্ন রকম হুমকি আসছে। নিরাপত্তার অভাব বোধ করায় শিক্ষক শিক্ষিকারা কেউই গার্ড দিতে চাইছেন না। মহকুমা প্রশাসনের সাহায্য ছাড়া পরীক্ষা চালানো কঠিন। শিক্ষিক শিক্ষিকাদের পক্ষ থেকে এদিন অধ্যক্ষকে লিখিত ভাবে তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।” ওই প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকেও পরীক্ষা চলাকালীন কঠোর নিরাপত্তার দাবি জানানো হয়। তাঁরা জানান, এভাবে নকল চললে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও এই কলেজে পরীক্ষা নেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। গত সোমবার কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরীক্ষা চলাকালীন কল্যাণী বর্মন নামে এক শিক্ষিকা ওই ছাত্রকে নকল-সহ হাতেনাতে ধরে ফেলেন। সে সময়ে কয়েকজন ছাত্রের সহায়তায় রৌশন শিক্ষিকার হাত থেকে খাতা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। শিক্ষিকার হাত মুচড়ে দেয়। গোলমাল দেখে ছুটে যান কলেজের অধ্যক্ষ উতথ্য বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ওই ছাত্রকে তাঁর দফতরে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে রৌশন অধ্যক্ষকে ঘুঁষি মারে বলে অভিযোগ। কলেজের শিক্ষককেরা ছাত্রটিকে ধরে আটকে রাখলেও পরে সে পুলিশের সামনেই পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ। এই ব্যাপারে অধ্যক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ মামলা দায়ের করে। ওই ছাত্র কোন সংগঠনের সদস্য তা নিয়েও ছাত্র সংগঠনগুলির মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়। ছাত্র পরিষদ রৌশন এসএফআই সমর্থক বলে অভিযোগ করে। এসএফআই এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ওই অভিযোগ অস্বীকার করে। কলেজের ছাত্র সংসদ এসএফআইও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দখলে। ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক তরুণ বর্মন বলেন, “লজ্জাজনক ঘটনা। অপরাধীদের শাস্তি চেয়েছিলাম। পুলিশ যে ধরেছে সেটা জানা ছিল না। ফোন, হুমকির বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।” |