তীব্র দাবদাহের মধ্যে দক্ষিণ দিনাজপুরের আকাশে মেঘের আনাগোনা শুরু হলেও তাকে ধরে রাখা গেল না। বৃহস্পতিবার সকালের পর থেকে উত্তর দিকে কালো মেঘ দেখে স্বস্তির আশা জেগে ওঠে বাসিন্দাদের মনে। খানিকক্ষণ বাদে হাওয়ায় সে মেঘ উড়ে সীমান্ত পেরিয়ে চলে যায় বাংলাদেশের দিকে। মালদহেও এদিন বাসিন্দারা গরমে কাহিল হন। আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন মালদহের তাপমাত্রা ছিল ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রচন্ড গরমে অসুস্থ হয়ে বুধবার বংশীহীরী থানার বুনিয়াদপুরে এক হাতুড়ে ডাক্তারের মৃত্যু হয়েছে। গঙ্গারামপুরের হামজাপুর এলাকার ওই বাসিন্দার নাম মহম্মদ সিরাজুদ্দিন (৫৫)। তিনি বুনিয়াদপুরে এক বিয়ে বাড়ি অনুষ্ঠানে সকাল থেকে ছিলেন। দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পরে অসুস্থ বোধ করলে তাকে স্থানীয় রসিদপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করার পরে তিনি মারা যান। এদিকে, সরকারি নির্দেশ জারি হলেও মালদহের বেশ কয়েকটি স্কুল কর্তৃপক্ষ এখনও ছুটি না দেওয়ায় ছাত্র শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক পাথর্সারথি ঝা বলেন, “মঙ্গলবার সরকারি নির্দেশ হাতে পাওয়ার পরে সমস্ত ওই নির্দেশ মেনে চলার জন্য বলা হয়। এর পরেও কয়েকটি স্কুল এখনও বন্ধ না করে খোলা রেখেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” মোজমপুর এইচএসএসবি হাই স্কুল ছাত্রদের ছুটি দিয়েছে। শিক্ষক শিক্ষিকাদের স্কুলে যেতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে ওই স্কুলের টিচার্স ইনচার্জ মহম্মদ সাবেত আলি বলেন, “স্কুলের পরিচালন কমিটির নির্বাচনের জন্য ছাত্রছাত্রীদের ছুটি দিয়ে স্কুল খোলা রাখতে হয়েছে।” দক্ষিণ দিনাজপুরে দাবদাহ পরিস্থিতি মোকাবিলায় ১০০ দিনের প্রকল্পে ব্যাপক গাছ লাগানোর পাশাপাশি নদী-নালা-দিঘি সংস্কারের উপর গুরুত্ব দিয়েছেন বালুরঘাটের সাংসদ প্রশান্ত মজুমদার। সংসদে বিষয়টি তুলবেন বলে বৃহস্পতিবার বালুরঘাটে জানিয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি জেলার তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে যৌথভাবে দাবি আন্দোলনেও তৈরি বলে জানিয়েছেন। তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা হরিরামপুরের বিধায়ক বিপ্লব মিত্র বলেন, “উন্নয়নের প্রশ্নে আমরা রাজনীতির রঙ দেখি না। আত্রেয়ী, পুনর্ভবা, টাঙন, যমুনার মত জেলার বড় নদীগুলি জৈষ্ঠ্যের শুরুতে শুকিয়ে যাচ্ছে। যোজনা কমিশনের কাছে নদী খননের ব্যাপারে সাংসদ প্রশান্তবাবু দরবার করতেই পারেন। কেননা, ওই বড় নদীগুলির উপর নির্ভর করে তপন, গঙ্গারামপুর, বংশীহারী, হরিরামপুর ব্লকে পানীয় জল সরবরাহের জন্য ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট প্রকল্প তৈরির পরিকল্পনা হয়েছে।” ইতিমধ্যে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে জেলার বড় দিঘি ও পুকুর খননের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বিপ্লববাবু জানিয়েছেন। ১০০ দিনের প্রকল্পে পঞ্চায়েতকে বর্ষা মরসুম থেকে ব্যাপক হারে বনসৃজনের কাজে নামতে হবে বলে বিপ্লববাবুর সঙ্গে আরএসপি সাংসদ প্রাশান্তবাবুও একমত হয়েছেন। তিনি বলেন, “তপনে কলেজ গড়ার ক্ষেত্রে আমরা তৃণমূলের বিধায়ক বিপ্লববাবুদের নিয়ে একসঙ্গে কাজ করছি। গত ৯ মে মহাকরণে গিয়ে বিপ্লববাবুর হাত দিয়ে কলেজের ফাইল মন্ত্রিসভায় অনুমোদনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কাছে দিয়ে এসেছি।” অসহ্য এই পরিস্থিতি একসঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে বলে প্রশান্তবাবু জানান। |