নেতা-খুনে আতঙ্ক গাজলে নালিশ পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার
খুন, ডাকাতি, ছিনতাইয়ে জেরবার গাজল। একের পর এক ঘটনায় গোটা গাজলের সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পুলিশ অপরাধের কোনও কিনারা করতে না পারায় অসন্তোষ বাড়ছিল বাসিন্দাদের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যেও। তার উপরে ডাকাতদের হাতে সিপিএম নেতা ক্ষিরোদ চৌধুরীর খুনের পর মানুষের মধ্যে ক্ষোভ আরও তীব্র হয়েছে। গাজলের কংগ্রেস বিধায়ক সুশীল এই অবস্থান জন্য পুলিশি নিষ্ক্রিয়তাকেই দায়ি করেছেন। তাঁর অভিযোগ, “গাজলে যেভাবে অপরাধ বেড়েছে সেই তুলনায় থানায় পুলিশ অফিসার-কর্মী, গাড়ি কিছুই নেই। আমরা রাজ্যে ক্ষমতায় এসেও গাজলে পুলিশি ব্যবস্থা ঠিক করতে পারিনি। একের পর এক খুন, ডাকাতি, ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। পুলিশি নিষ্ক্রিয়।” বিধায়ক জানান, থানায় পুলিশ কর্মীর সংখ্যা অত্যন্ত কম। সমস্যার সমাধানের জন্য বিষয়টি বিধানসভায় তুলেছিলাম। তার পরেও অবশ্য কিছু হয়নি।
ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, গাজলের কদুবাড়িতে প্রায় ৫ মাস আগে ওই এলাকার পাট ব্যবসায়ী হরিদাস বালো কলকাতা থেকে টাকা আদায় করে বাড়ি ফেরার সময় একদল ডাকাত তাঁকে গুলি করে ২ লক্ষ টাকা ছিনতাই করে পালায়। পুলিশ ওই ডাকাতির কিনারা করতে পারলেও সমস্ত অপরাধীদের ধরতে পারেনি। মাস সাতেক আগে গাজলের করকচ গ্রামে একদল দুস্কৃতী তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী প্রেমচাঁদ বলকে কুপিয়ে খুন করে। এর বছর দুই আগে গাজলে এক হাইস্কুলের শিক্ষকের গাড়ি থামিয়ে গুলি করে খুন করে দুষ্কৃতীরা। আজও সেই শিক্ষক খুনের কিনারা হয়নি। কয়েকমাস আগে গাজলের গারাধূল গ্রামে ইভটিজিংয়ের হাত থেকে মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে খুন হতে হয় এক চাষিকে। খুনের পাশাপাশি গাড়ি ছিনতাই ঘটনায় গাজলে প্রায়ই ঘটছে। খোদ গাজল থানার ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে গাজলের কংগ্রেসের বিধায়ক সুশীল রায়ের বাড়ি থেকে গাড়ি ছিনতাই করে পালায় দুষ্কৃতীরা। বিধায়কের সেই গাড়ির হদিশ পুলিশ আজও করতে পারেনি। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, গাজল এলাকাটি লম্বা চওড়ায় প্রায় ৩০ বর্গ কিলোমিটার। লোকসংখ্যা সাড়ে তিনলক্ষ। এই এলাকা দেখাশুনো করার জন্য গাজল থানায় ওসি-সহ ৭ জন অফিসার, ৬ জন কনস্টেবল, ৮ জন এনভিএফ কর্মী এবং ১৫ জন হোমগার্ড রয়েছে। প্রত্যাশামতই পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছে সিপিএম। গাজল পঞ্চায়েত সমিতির সিপিএম সভাপতি মন্ডল মুর্মু বলেন, “গাজলের আইন শৃঙ্খলা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। এদিন যে এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে, কয়েকমাস আগে সেখানেই এলাকারই এক পাঠ ব্যবসায়ীকে গুলিকে লক্ষাধিক টাকা লুঠ করেছিল দুষ্কৃতীরা। অপরাধীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে অথচ পুলিশ তাদের ধরছে না।” আর বুধবার রাতে ডাকাত দলের হাতে গুলিতে নিহত সিপিএম নেতা ক্ষিরোদ চৌধুরীর দাদা রঞ্জিৎ চৌধুরী বলেন, “এলাকায় খুন, ছিনতাই চলছে। ভাইকে এই ভাবে খুন হতে হবে ভাবতেই পারছি না। পুলিশ সজাগ না হলেও এলাকায় আরও খারাপ অবস্থা হবে।” এদিকে গাজলে অপরাধ প্রবণতা যে বেশি তা স্বীকার করে নিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল। তিনি বলেন, “একদিকে সামসি হয়ে বিহার সীমানা। অন্যদিকে উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর সীমানা। দুটি জাতীয় সড়কের সুযোগ নিয়ে গাজলে আপরাধ বেড়েছে। প্রতিটি অপরাধে স্থানীয়রা যুক্ত।” পুলিশ সুপারের দাবি, “প্রতিটি ক্ষেত্রেই পুলিশ দ্রুত অপরাধীদের সনাক্ত করে ধরছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.