হলদিয়ার মেডিক্যাল কলেজ
সংশয়ে, তবু আইনেই
ভরসা রাখছে পড়ুয়ারা
বিষ্যৎ নিয়ে রীতিমতো অনিশ্চয়তায় পড়েছেন প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘আইকেয়ার’ পরিচালিত হলদিয়ার বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। পড়ুয়া সংখ্যাও ক্রমশ কমছে। ক্যাপিটেশন ফি দিয়ে ভর্তি হওয়া ৮৮ জনের মধ্যে এখন নিয়মিত ক্লাস করছেন মাত্রই ২৮ জন। কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের পরে তাঁরাও হতাশাগ্রস্ত। এই মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রছাত্রীরা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে আর্জি জানিয়েছিলেন, তাঁরা যাতে পরীক্ষা দিতে পারেন এবং লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারেন, সে জন্য আদালত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিক। বিচারপতি প্রণব চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ বুধবার জানিয়েছে, ওই কলেজের ছাত্রছাত্রীদের আবেদন মর্মস্পর্শী হলেও আদালত তাঁদের সুরক্ষার পথ দেখাতে পারছে না। তবে পড়ুয়াদের আরও একটি আবেদনের সুযোগ আছে বলে বিচারপতি জানান। তিনি বলেছেন, হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চে ওই কলেজ নিয়ে যে-মামলা চলছে, ছাত্রছাত্রীরা তাতে হলফনামা দিয়ে বক্তব্য জানাতে পারবেন।
অবৈধ ভাবে একই ভবনে মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজ চালানোর অভিযোগ ওঠায় প্রতিষ্ঠানটি সমস্যায় পড়ে। রাজ্য সরকার, মেডিক্যাল কাউন্সিল এবং রাজ্যের স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় হলদিয়ার ওই কলেজের অনুমোদন বাতিল করে দেয়। অথৈ জলে পড়েন ছাত্রছাত্রীরা। মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে সেই মামলা হাইকোর্টে ফেরত আসে। ছাত্রছাত্রীরা সেই মামলায় যোগ দিয়ে আর্জি জানান, এমবিবিএস পরীক্ষা শুরু হবে অগস্টে। কিন্তু তাঁরা পরীক্ষা দিতে পারবেন কি না, বুঝতে পারছেন না। অথচ কলেজ-কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নিয়ম না-মানা, গাফিলতি-সহ যে-সব অভিযোগ উঠেছে, তার কোনওটার জন্যই পড়ুয়ারা দায়ী নন। শীর্ষ আদালতের নির্দেশের ভিত্তিতে ভর্তি হয়ে তাঁরা এক বছর ক্লাস করেছেন। পরীক্ষা ও পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য ছাত্রছাত্রীরা ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন। ডিভিশন বেঞ্চ অবশ্য সুরাহা দিতে পারেনি।
বৃহস্পতিবার কলেজে গিয়ে দেখা যায়, ক্লাস করতে এলেও পড়ুয়াদের চোখেমুখে সংশয়। যদিও এখনই তাঁরা হাল ছাড়ছেন না। যেহেতু আরও এক বার আবেদন করা যাবে, তাই তাঁদের আশা তখন আর আদালত তাদের বিমুখ করবে না। কলকাতার দমদম থেকে আসা ছাত্রী শর্মিষ্ঠা নন্দীর কথায়, “কলেজ কর্তৃপক্ষ বলেছেন ক্লাস করতে। আমরাও পরীক্ষা দিতে পারব বলে আশাবাদী। তবে কিছুটা সংশয় তো আছেই।” নন্দকুমারের ছাত্র কমন কুঁইতি এ দিনও ক্লাসে এলেও ভেঙে পড়েছে তাঁর পরিবার। কমলের বাবা সুকুমার কুঁইতি ও মা জ্যোৎস্নাদেবী বলেন, “ছেলে হস্টেল ছেড়ে বাড়ি আসতে চায় না। এলেই কান্নাকাটি করে। ও বলছে, মেডিক্যাল ছাড়া কিছু পড়বে না। আমরা অভিভাবক হয়ে দিশাহীন।” ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত জেনে অনেকেই কলেজে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন। ৮৮ জনের মধ্যে ক্লাস করছেন মাত্র ২৮ জন। তাঁদেরই মধ্যে রয়েছেন কলকাতার ভবানীপুরের পূজা সিংহ, পার্কস্ট্রিটের সুফিয়া ফারহিন, মুম্বইয়ের জেশান ইহায়া, হাজি মহম্মদ। ওঁরা বলেন, “শুনছি তো অনেক কিছুই। তবে আমাদের তো আরও একটা সুযোগ আছে। কর্তৃপক্ষও আশ্বাস দিচ্ছেন। ” কলেজের প্রশাসনিক আধিকারিক শ্রীমন্ত বসু বলেন, “ওদের তো কোনও দোষ নেই। হাইকোর্টে আরও একটি সুযোগ আছে। সবাই সে দিকেই তাকিয়ে।”
৩০ জুনের মধ্যে ছাত্রছাত্রীদের আবেদন বিচার করে চূড়ান্ত রায় দেওয়ার কথা। আপাতত তারই অপেক্ষা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.